Radha in veda and purana 4

Radha in veda and purana 4

তৈত্তীরিয় সংহিতা ৪ কান্ড/৪ প্রপাঠক/১২ মন্ত্র
অবস্যুবাতাঃ বৃহতীর্নু শক্বরীরিমং যজ্ঞমবন্তু নো ঘৃতাচীঃ। সুবর্ব্বতী সুদঘা নঃ পয়স্বতী দিশাম দেব্যবতু নো ঘৃতাচী। ত্বং গোপাঃ পুরএতোত পশ্চাদবৃহষ্পতে যাম্যাং যুঙগ্ধি বাচম। উর্দ্ধা দিশাং রন্তিরাশৌষধীনাং সম্বৎসরেণ সবিতা নো অহ্নাম। রেবৎসামাতিচ্ছন্দা উ ছন্দোহজাতশত্রিঃ স্যোনা নো অস্তু। স্তোমত্রয়স্ত্রিংশে ভূবনস্য পত্নি বিবস্বস্বাতে অভি নঃ গৃণাহি।  ঘৃতবতী সবিতরাধিপত্যৈঃ পয়স্বতী রস্তিরাশা নো অস্তু। ধ্রুবা দিশাম বিষ্ণুপত্নঘোরাহস্যেশানা সহসে যা মনোতা। বৃহষ্পতিম্মার্তরিশ্বোত বায়ুঃ সদ্ধুবানা বাতা অভি নো গৃণন্তু। বিষ্টদ্ভো দিবো বরুণঃ পৃথিব্যা অস্যেশানা জগতো বিষ্ণুপত্নী।

প্রথমত সূক্তে কোথাও নীলা দেবীর নাম নেই। বরং পয়স্বতী, ঘৃতবতী, ঘৃতাচী, গোপাঃ ইত্যাদি উল্লেখ থেকে তিনি যে গোপকন্যা তা বোঝা যায়। এবং তাকে ২ জায়গায় বিষ্ণু পত্নী বলা হয়েছে। আগেই বলেছি কৃষ্ণের ই আরেক নাম বিষ্ণু। গোপীগনের পতি বলতে কৃষ্ণ কে বোঝাচ্ছে বুঝতে হবে।
যেমন অম্বুজ বলতে জল হতে জাত পদ্ম কে বোঝায় কিন্তু সব সময় নয়।  অম্বুজাক্ষ বলতে পদ্মের মত চোখ বোঝায় আবার অম্বুজা বলতে লক্ষ্মী কে বোঝায়। যেহেতু তার সমুদ্র মন্থন থেকে জন্ম। তাই এই সূক্তে রাধারানীর স্তব করা হয়েছে।
সায়নাচার্য্য হাস্যকর ভাবে এই সূক্তে বিষ্ণু পত্নী  শব্দের অর্থ করেছেন বিষ্ণু দ্বারা রক্ষিত। তার ফলে মন্ত্রের অর্থ দাঁড়িয়েছে সেই দিক যা  বিষ্ণু দ্বারা রক্ষিত।

তামিল বেদে নপ্পিনাই
তামিলবেদ নামে পরিচিত দিব্যপ্রবন্ধম এর ৪৯১ সূক্তের ঋষিকা দেবী অন্ডাল মধুরভাবে ভাবিত হয়ে কয়েকটি সূক্ত লিখেছেন। সেখানে কৃষ্ণের স্ত্রী নপ্পিনাই (রাধিকার তামিল নাম) এর উল্লেখ রয়েছে।
 নন্দ গোপালন মরুমগ্গলে নপ্পিনাই
নন্দগোপের পুত্রবধূ তুল্য নপ্পিনাই
শ্রীসম্প্রদায়ী আচার্য্য রা এখন নপ্পিনাই যে রাধারানী তা মানেন না। তারা নীলাদেবী র কথা বলেন। আমরা আগেই দেখিয়েছি নীলাসূক্তে নীলাদেবী বলতে রাধারানীর কথাই বলা হচ্ছে। কারন বৈকুন্ঠের বিষ্ণু পত্নী গন গোপী নন, অথচ সূক্তে গোপী শব্দের দুইবার ব্যাবহার রয়েছে।
উন্দু মদ কলিন্ডন ওডাদ তোল বলিয়ন।
নন্দ গোপালন মরুমগ্গলে নপ্পিনাই।।
কন্দম কমলুম কুললি কউ তিরুবাই।
বন্দেডংগম কোলি অলেত্তন কাণ মাদবি।
প্পন্দল মেল পল্গাল কুয়িল ইনঙ্গল কুবিন কাণ।
পন্দার বিরলি উন মেন্তুনন পের পাউ
শেন্দামরৈ ক্কৈয়াল শীরারবলৈ আলিপ্প।
বন্দু তিরুবাই মগিলন্দেলোর এম্পাবায়।। ৪৯১
ব্যাখ্যা সহ অনুবাদ:- গোপীরা নপ্পিনাই এর কাছে প্রার্থনা করছেন হে দেবী আপনি যশস্বী নন্দগোপের পুত্রবধূ সমান, যিনি রনহস্তীর মত যুদ্ধ ক্ষেত্রে শত্রুদের দমন করেন সেই বিস্তৃর্ন বক্ষস্থল নন্দগোপের পুত্রবধূ। তুমি সুন্দর, সুগন্ধময় কেশবতী, সেই কেশের সুগন্ধ চতুর্দিকে সুবাসিত করে তুলেছে, এই লীলা ছাড়ুন, দরজা খুলুন। নপ্পিনাই তখন বলছেন ভোর হলেই দরজা খুলব।  তাই গোপীরা বলছে মাধবীলতায় বসে কোকিল কুহু ডাকছে। সব পাখীরা ডাকছে, তাই ভোর হয়ে গেছে তাই দরজা খুলুন। তাও রাধারানী ঘুমের অভিনয় করে চুপ করে রইলেন। তখন সখীরা কুন্জের লতার ফাঁক দিয়ে দেখলেন রাধারানী ঘুমের ভান করে শুয়ে রয়েছেন তার হাতে পাশা খেলার গুটি ধরা রয়েছে। হয়ত রাতভর পাশাখেলার পর শ্যামকে জিতে নিয়ে ক্লান্ত হয়ে গুটি হাতে করেই শুয়ে পড়েছেন। তাই সখীরা বলছে হে রাধিকা তোমার গেন্দ ধরা লালিমাপূর্ণ হাতে দরজা খোলো। তোমার হাতের চূড়ির মধূর ধ্বনি শুনে আমরা ধন্য হই।  আমরা ভগবানের যশোগান করব।
আচার্য্য রামানুজের এই সূক্তটি খুবই প্রিয় ছিল। একবার আচার্য্য এই সূক্ত মনে মনে গুণগুণ করে গাইতে গাইতে তার গুরুর বাড়িতে গেছেন গুরুপুত্রী এসে যখন দরজা খুলেছে তাকে দেখে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করলেন। তা দেখে গুরুপুত্রী ভয়ে দৌড়ে পিতার কাছে গিয়ে বলল যে সন্ন্যাসী তাকে প্রণাম করছে। গুরু কাঞ্চীপূর্ণ এসে দেখলেন রামানুজ দরজায় দন্ডবত করছেন আর মুখে এই সূক্ত পাঠ করছেন। রামানুজের তিরুপ্পবাই খুব প্রিয় ছিল, তাই তার নাম ছিল তিরুপ্পবাই জিয়ার।
অন্ডাল বা গোদা দেবী র সময়কাল ঐতিহাসিক রা বলেন ৭ম শতাব্দী। এবং এখনো তার রচিত তিরুপ্পবাই অগ্রহায়ণ মাসে শ্রীসম্প্রদায়ের সমস্ত মন্দিরে পাঠ হয়।
আবার ৪৯২ সূক্তে গোপীরা প্রার্থনা করছে হে বিস্তৃত বক্ষস্থল বিশিষ্ট দেব তুমি নপ্পিনাই এর বক্ষে বক্ষ রেখে শয়ণ করে আছ কৃপা করে আমাদের প্রতি অভয়বাণী দান করো। অতএব নপ্পিনাই ই হল সেই বিশেষ গোপী যিনি শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয়। অন্য সকল গোপীদের থেকে শ্রেষ্ঠ। তিনিই রাধারানী।
কিন্তু আচার্য্য বেদান্তদেশিক তার রচিত যাদব অভ্যুদয় গ্রন্থে নপ্পিনাই কে নাগ্নজিতি দেবী বলেছেন। শ্রী সম্প্রদায়ের মতে কৃষ্ণ লীলায় শ্রীদেবী রুক্মিনী দেবী রূপে, ভূদেবী সত্যভামা রূপে ও নীলাদেবী নাগ্নজিতি রূপে অবতীর্ণ হন। তিনি একটি কাহিনী বলেছেন যশোদার ভ্রাতা কুম্ভনের কন্যা রূপে গোপগৃহে নীলাদেবী নপ্পিনাই রূপে জন্মগ্রহন করেন।  করেন। বালক কৃষ্ণ ৭ টি অবাধ্য ষাঁড় কে বধ করে নাগ্নজিতি বা নপ্পিনাই কে বিবাহ করেন।