Kama Gayatri explanation By Prabodhananda Saraswati

Kama Gayatri explanation By Prabodhananda Saraswati

শ্রীপাদ প্রবোধানন্দ সরস্বতী বিরচিত কামবীজ ও কামগায়ত্রী ব্যাখ্যা
আদৌ বীজার্থ
পঞ্চালঙ্কারসংযুক্তং বীজং তু পরমাদ্ভুতম্।
লকারাৎপৃথিবী জাতা ককারাজ্জলসংভবঃ।।
ঈকারাদ্বহ্নিরূৎপন্নো নাদাদ্বায়ুঃ প্রজায়তে।
বিন্দোরাকাশসংভূতিরিতি ভূতাত্মকো মনুঃ।। ১
যদ্বা
অনুবাদ:- প্রথমে ক্লীঁ বীজের অর্থ।
পরমাদ্ভুত এই ক্লীঁ বীজ পাঁচটি অলঙ্কার যুক্ত হয়ে তৈরী হয়েছে। লকার এর থেকে পৃথিবী জাত। ক কারের থেকে জল জাত। ঈকার হতে অগ্নি জাত। নাদ হতে বায়ু জাত। ও বিন্দু হতে আকাশ জাত। নাদ হলো আনুনাসিক বর্নের আনুনাসিকতা ও বিন্দু হলো আনুনাসিক বর্নের বিন্দু অংশ। এইভাবে এই বীজ পঞ্চমহাভূতাত্মক।
অথবা অন্য অর্থ।
ককারঃ পুরুষঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ।
ঈকারঃ প্রকৃতি রাধা নিত্যা বৃন্দাবনেশ্বরী।।
লশ্চানন্দাত্মকং প্রেমসুখত্বে পরিকীর্তিতম্।
চুম্বনানন্দমাধুর্য নাদো বিন্দুসমীরিতম্।।
ককারো নায়কঃ শ্রেষ্ঠঃ ইকারো নায়িকা বরা।
লকারো হ্লাদরূপস্য বিন্দুশ্চুম্বনমুচ্যতে।। ২
অনুবাদ:- ক কার এর অর্থ পরমপুরুষ শ্রীকৃষ্ণ। যার স্বরূপ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ। ঈ কার প্রকৃতি বাচক।(পুংলিঙ্গ শব্দে ঈ যুক্ত হলে তা স্ত্রীলিঙ্গ হয় এজন্য ই কার কে স্ত্রী বিভক্তি বলে) শ্রী রাধা নিত্য বৃন্দাবনেশ্বরী তিনিই পরমা প্রকৃতি। ল কার আনন্দ বাচক। প্রেমসুখ বোঝায়।(হ্লাদিনী শক্তি যা শ্রীকৃষ্ণ কে আনন্দ প্রদান করে ও ভক্তদের পোষণ করে তা বোঝাতে ল কার) নাদ বা আনুনাসিকত্ব চুম্বনাদি যুগলবিলাসের মাধুর্য্য বোঝায়। নাদের সঙ্গে বিন্দু ও উচ্চারিত হয়।
ক কার হল নায়ক, ঈ কার হলো নায়িকা ল কার হলো হ্লাদিনী ও বিন্দু হলো যুগলের চুম্বনাদি বিলাস।
অনুব্যাখ্যা:- ক্লীঁ মধুর রসের আধার, জগতের সৃষ্টি আদির কারন স্বরূপ তাই একে বীজ বলা হয়েছে। কিভাবে তা জগত সৃষ্টি আদির বীজ স্বরূপ ও কেন তাকে কামবীজ বলা হয়? ক+ল+ঈ+ঁ  যুক্ত হয়ে এই বীজ হয়েছে। যার ক কারের অর্থ কৃষ্ণ ই কারের অর্থ পরমা প্রকৃতি রাধা ল কারের অর্থ হ্লাদ। হ্লাদ শব্দের অর্থ মোদন আনন্দিত করে যা। ঁ দ্বারা যুগলের মিলিত হয়ে চুম্বনাদি বিলাস কে বোঝায়।

কেচিদেবং ব্যাখ্যায়ন্তে—
গলশির আস্যং ককারঃ। চক্ষুঃ কর্ণবাহূর্লকারঃ। রূপনাসিকাহস্তমীকারঃ। কক্ষপৃষ্ঠকটিজঙ্ঘা নাদঃ। জানুপাদৌ চ বিন্দুরিতি পঞ্চভূতো মূর্তিমান্পুরুষঃ।। ৩
কেউ ক্লীং বীজের ব্যাখ্যা করেন—
পরমপুরুষের কন্ঠ মস্তক ও মুখমন্ডল ক কার। চক্ষু, কর্ন ও বাহু ল কার। তার রূপমাধুরী, নাসিকা ও হস্তকমল ঈ কার। পৃষ্ঠ ও বক্ষদেশ কটিদেশ জঙ্ঘা নাদ। জানু হতে পাদ পর্যন্ত বিন্দু। এভাবে পরমপুরুষের বিগ্রহ ই ক্লীং বীজের দ্বারা প্রকাশিত হয়।
কাদাপো লাৎপৃথিবী ঈতো বহ্নির্নাদাদ্বায়ুঃ বিন্দোরাকাশসংভূত ইতি জলরসপুরুষকামঃ ককারঃ। পৃথিবীগন্ধপ্রকৃতিমূর্তির্লকারঃ। তেজরূপমহদাধারইকারঃ। বায়ুস্পর্শজীবো নাদঃ। আকাশসব্দোহহঙ্কারো বিন্দুঃ ইতি গোপালতাপনী বেদে।। ৪
ক হতে জল জাত। ল হতে পৃথিবী উৎপন্ন। ঈ হতে অগ্নি উৎপন্ন। নাদ হতে আকাশ উৎপন্ন।
অর্থাৎ ক কারের অর্থ জল, রস, পরমপুরুষ, ও কাম। ল কারের অর্থ পৃথিবী, গন্ধ, প্রকৃতি, মূর্তি। ঈ কারের অর্থ অগ্নি, রূপ, মহৎ আধার। নাদ এর অর্থ বায়ু, স্পর্শ,জীব। বিন্দুর অর্থ আকাশ, শব্দ, অহঙ্কার। গোপালতাপনী উপনিষদে এই অর্থ ব্যাখ্যা রয়েছে।
রত্নপ্রিয়া রতিকলা ভদ্রা সৌরভা ককারঃ। সুমুখী কলহংসী লকারঃ। মদোন্মদা চন্দ্রাকারঃ। কলাপিনী বিন্দুঃ।। ৫
ক কারের অর্থ রত্নপ্রিয়া, রতিকলা, ভদ্রা, সৌরভা। ল কারের অর্থ সুমুখীও কলহংসী, নাদ  এর অর্থ মদোন্মদা ও কলাপিনী বিন্দু।। ৫
ক কারো কথ্যতে কামো ল কারো মূর্তিরুচ্যতে
ই কারো শক্তিরূপা চ নাদোবিন্দুরীরিতা।। ইতি মুনয়ঃ।। ৬
ইকারো নায়িকা মুখ্যা ল কারো ললিতা পরা।
ক কারো নায়কো মুখ্য বিন্দু চুম্বনমুচ্যতে।।
আশ্লেষোহপ্যর্দ্ধচন্দ্রস্য বীজার্থ পরমাদ্ভুতং।। ইতি।। ৭
ক কারের অর্থ কাম, ল কারের অর্থ রূপ বা মূর্তি, ইকারের অর্থ শক্তি। নাদ কে বিন্দু বলা হয়। মুনি গন এই রূপ নিরূপন করেন। ৬
ঈ কার দ্বারা মুখ্য নায়িকা শ্রীরাধা, ল কার দ্বারা ললিতা, ক কার দ্বারা নায়ক শ্রীকৃষ্ণ। বিন্দু দ্বারা যুগলের চুম্বনাদি বিলাস ও নাদ দ্বারা আশ্লিষ্যাদি(আলিঙ্গন ইত্যাদি) বোঝায়। এই রূপে পরম অদ্ভূত বীজার্থ কেউ ব্যাখ্যা করেন। ৭
কামদেবায় বিদ্মহে পুষ্পবাণায় ধীমহি তন্নোহনঙ্গঃ প্রচোদয়াৎ।।
অস্যার্থ:- কামেনাভিলাষেন স্ববিষয় প্রীতিদার্ঢ্যেন দীব্যতি ক্রীড়তি দিবু ক্রীড়ায়াং নিত্যবিষয়ত্বাত্তস্মৈ কামদেবায়। বিদ্মহে বিদ্লঁ লাভে বিদু জ্ঞানে বা। ধীমহি ধ্যায়েমঃ। কামদেবায় কথম্ভূতায়? পুষ্পবাণায় পুষ্পমেব বাণো যস্য তস্মৈ, তন্নোহনঙ্গঃ সোহনঙ্গঃ কর্দর্পঃ, নোহস্মান্প্রচোদয়াৎ(প্রকর্ষেণ) প্রকৃষ্টরূপেণ উদয়াৎ উদয়ং কুর্যাদিত্যর্থঃ। চকারঃ সমুঞ্চয়ার্থে ইতি।
অনুবাদ:- কামদেবায় বিদ্মহে পুষ্পবাণায় ধীমহি তন্নোহনঙ্গঃ প্রচোদয়াৎ। এই কামগায়ত্রীর অর্থ ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কামদেব যিনি কাম অর্থাৎ নিজ বিষয়ে অভিলাষ এর দ্বারা যিনি ক্রীড়া করেন বা কাম এর দ্বারা যিনি দ্যোতমান।
দিব ধাতুর অর্থ ক্রীড়া করেন। তিনি নিত্য লীলা বিলাস পরায়ণ।
বিদ্মহে। বিদু ধাতুর অর্থ জ্ঞান। বা বিদ্লঁ ধাতুর অর্থ অর্জন করা বা লাভ করা।
ধীমহি অর্থাৎ ধ্যান করি।
কামদেব কিরূপ? তার বাণ গুলি পুষ্প। তিনি অঙ্গহীন বা শরীরবিহীন। তাই তাকে অনঙ্গ বা কন্দর্প বলা হয়।
প্রচোদয়াৎ এর অর্থ প্র + চ + উদয়াৎ অর্থাৎ এবং তিনি প্রকৃষ্ট রূপে আমাদের চেতনায় উদয় হোন। চ শব্দ সংযোজক বা সমুচ্চয়বাচক শব্দ।
ক্লীং ইতি পদেন মূর্তিমান্ পুরুষঃ, কামপদেন গণ্ডদ্বয়ম্, দেবপদেনাত্রাস্য ভাল উচ্যতে, অভিলাষেণ স্ববিষয় প্রীতিদার্ঢ্যেন চন্দ্রমণ্ডলেন দীব্যতি ক্রীড়তি, যকারেণ অর্দ্ধচন্দ্রো ভালে তিলকচন্দ্রঃ সার্দ্ধচন্দ্রচতুষ্টয়ঃ ইত্যপি শিশিরাধিপ ক্রমাৎ ক্রমরূপেণ বিংশত্যক্ষরেণ বিংশতিশ্চন্দ্রা উচ্যন্তে।। ১
অনুবাদ:- ক্লীঁ পদে পরম পুরুষের স্বরূপ কে বোঝায়। ক্লীঁ বীজ শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ। কাম পদে তার দুই গন্ডস্থল। দেব পদে তার মুখ মন্ডল ও ললাট। নিজবিষয়ে প্রীতি বা অভিলাষের দ্বারা তিনি চন্দ্রমন্ডলে র মতো ক্রীড়া করেন বা চন্দ্রমন্ডলের মতো দ্যোতমান। য় পদ অর্দ্ধচন্দ্র। তার ললাটে তিলক পূর্ণচন্দ্র। অর্থাৎ সার্দ্ধচারটি চন্দ্র হল। কামগায়ত্রীর বাকি পদ ২০টি পদ দ্বারা ক্রমে ক্রমে ২০টি শিশিরাধিপতি অর্থাৎ চন্দ্রের বর্ননা করা হচ্ছে।

কামো গণ্ডদ্বয়ে স্নেহে বিলাসে স্পর্শতৃষ্ণয়োঃ ইতি ভাস্বদি। ককারঃ কৌশলে চন্দ্রে বিলাসে স্রগ্রসালয়োঃ ইতি ব্যোপানঃ। ম কারো মধুরে হাস্যে বিকাশে ছবিতৃষ্ণয়োঃ ইতি ঋষভঃ। দে ইতি দা দানে ঔণাদিকত্বাদেকারঃ। দামাস্মাজ্যোৎস্নায়ামিতি একারপ্রত্যয়ঃ। দেশ্চন্দ্রে বিলাসে অন্নেহর্হণে মণ্ডলেহপি চ ইতি দেবদ্যোতিঃ। দেশ্চন্দ্রমণ্ডলে হাস্যে হবির্দানবিলাসয়োঃ ইতি ব্যাঘ্রভূতিঃ।
অনুবাদ:- ভাস্বদির মতে কাম শব্দের অর্থ দুই গন্ডস্থল, স্নেহ, বিলাস, স্পর্শতৃষ্ণা। ব্যোপানের মতে কারের অর্থ কৌশল, চন্দ্র, ক্রীড়াবিলাস, মালা ও আম্র মুকুল। ঋষভের মতে কারের অর্থ মধুর, হাস্য, বিকাশ, রূপতৃষ্ণা। দে অর্থাৎ দা দান অর্থে। আ কারের পরিবর্তে এ হয়েছে ব্যাকরণের ঔণাদি নিয়মে।
মা এর অর্থ জ্যোৎস্না। আচার্য্য দেবদ্যোতির মতে দে এর অর্থ চন্দ্র, বিলাস, অন্ন, সম্মান, মন্ডল, আচার্য্য ব্যাঘ্রভূতি র মতে দে এর অর্থ চন্দ্রমন্ডল, হাস্য, হবিদান, বিলাস,

ব ইতি বনষণ সংভক্তৌ বনধাতোঃ ঔণাদিকত্বাৎ পঞ্চম্যন্তাদ্ভাবে ড প্রত্যয়ঃ। ব কারো লাস্য লাবণ্যে ইন্দ্রায়ুধশশীধরে ইতি ভাস্বতিঃ। বিকারান্তয়কারেণ অর্দ্ধচন্দ্রঃ প্রকীর্তিতঃ লক্ষণানুরোধাৎ। য় চন্দ্রার্দ্ধ বৈভবঞ্চ দারূণং ভয়ং ইতি ব্যাডিঃ।
অনুবাদ:- দেবায় পদে বকারের অর্থ বন। কারন বন ধাতু একটি উণাদি ও পঞ্চমী বিভক্তি অন্তে ড হল প্রত্যয়। ভাস্বতীর মতে কারের অর্থ লৌল্য, লাবণ্য, ইন্দ্র, আয়ূধ, চন্দ্র। পদান্তে বকারের পর য়কার লক্ষণায় অর্দ্ধচন্দ্র। ব্যাডির মতে য় কারের অর্থ অর্দ্ধচন্দ্র, বৈভব, দারুন ভয়।

বিশব্দাদিঃ পঞ্চাক্ষরেণ দক্ষিণাবর্তক্রমেণ পঞ্চ চন্দ্রা উচ্যন্তে। তদ্যথা বিদ্মহে পুষ্প ইত্যাদি।
 বাণাদিপঞ্চাক্ষরেণ বামাবর্তাদিক্রমেণ পঞ্চচন্দ্রা উচ্যন্তে তদ্যথা বাণায় ধীমহি ইত্যাদি। তত্র কৌস্তুভস্য মনেরধস্তাৎ বামদক্ষিণরূপেণ দশাক্ষরেণ দশ চন্দ্র উচ্যন্তে।
অনুবাদ:- দক্ষিণাবর্ত ক্রমে বিদ, ম, হে, পুষ, প, পাঁচটি অক্ষরের অর্থ পাঁচটি চন্দ্র।
বামাবর্তাদি ক্রমে বাণাদি পাঁচটি অক্ষরের অর্থ পাঁচটি চন্দ্র। এই পাঁচটি অক্ষর হল বা, ণা, য়, ধী, ম, এরপর দশটি অক্ষর দ্বারা কৌস্তভমণির নীচে দক্ষিণ ও বামদিকে পাঁচটি, পাঁচটি করে মোট দশটি চন্দ্রকে বোঝায়।
তত্র দক্ষিণাদিক্রমেণ হিশব্দাদ্পঞ্চাক্ষরেণ পঞ্চ চন্দ্রা উচ্যন্তে। তদ্যথা প্রচোদয়াৎ। বিশব্দো বিবিধে প্রাজ্ঞে হিঙ্গুলে চ শশধরে ইতি বিশ্বঃ। ডুধাঞ ধারণপোষণয়োর্ধাধাতোঃ ঔণাদিকো মহ্ প্রত্যয়ঃ নিপাতশ্চেতি দ্মঃ। দ্মকারো বিবিধে নৃত্যে তেজোরাশৌ শশধরে ইতি ভাস্বতিঃ।
অনুবাদ:- এভাবে দক্ষিণাদিক্রমে হি থেকে পাঁচটি অক্ষর পাঁচটি চন্দ্রকে বোঝায়। এই পাঁচটি অক্ষর হল হি তন নো অনঙ্গ। আর প্র থেকে পাঁচটি অক্ষর পাঁচটি চন্দ্রকে বোঝায়। এগুলি হল প্র, চ, উদ, য়, আৎ। আচার্য্য বিশ্বের মতে বি অক্ষরের বিবিধ অর্থ , প্রাজ্ঞ, হিঙ্গুল, ও চন্দ্র। দ্ম অক্ষরের ব্যুৎপত্তি ডুধাঞ ধাতু থেকে। যার অর্থ ধারণ বা পোষণ। এরপর ম প্রত্যয় এটি একটি উণাদি (প্রথমপুরুষ, বহুবচন, বর্তমান কালে আত্মনেপদীতে) তাই ধাম হওয়ার পরিবর্তে দ্ম হয়েছে। ভাস্বতীর মতে দ্মকারের বিবিধ অর্থ নৃত্য, তেজরাশী, চন্দ্র

হেশব্দো হেতুকে বিজ্ঞে ইন্দৌ পুন রসালয়োঃ ইতি কামমন্ত্রঃ। পুশব্দোরসনাজ্যোৎস্নানৃত্যচন্দ্রাংকুশেহম্বুজে ইতি দেবদ্যোতিঃ। ষ্পকারো বিকলে প্রাজ্ঞে বিধৌমৌক্তিকদামনীতি রত্নহাসঃ। বাশব্দো বিষমাধারে চন্দ্রজ্যোৎস্নাপবৃদ্ধয়োঃ ইতি বামন পুরাণে। ণকারো বিষমাবিষ্টো নৃত্যচন্দ্ররসায়নে ইতি স্বভূতিঃ। যকারশ্চন্দ্রবিম্বে চ বিশালাক্ষে রসাকরে ইতি ব্যাঘ্রভূতিঃ।
অনুবাদ:- বিদ্মহে পদে হেকারের অর্থ কামমন্ত্র অনুসারে হেতু বা কারন, বিজ্ঞ, চন্দ্র, রসালয়। পুষ্পবাণ পদে পুকারের অর্থ দেবদ্যোতির মতে রসনা বা জিহ্বা, জ্যোৎস্না, নৃত্য, চন্দ্র, অঙ্কুশ, ও পদ্ম। রত্নহাসের মতে ষ্প কারের অর্থ বিকল, প্রাজ্ঞ, চন্দ্র, মুক্তামালা। বামণপুরাণ মতে বা-কারের অর্থ বিষমাধার, চন্দ্রজ্যোতি, অপবৃদ্ধ বা ক্ষয়প্রাপ্ত। স্বভূতির মতে -কারের অর্থ বিষমাবিষ্ট, নৃত্য, চন্দ্র, ও রসায়ণ। ব্যাঘ্রভূতির মতে -কারের অর্থ চন্দ্রবিম্ব, বিশাল আয়ত চক্ষু, ও রসের আকর।

ধীশব্দো বুদ্ধৌ প্রাজ্ঞে চ বিধৌ চন্দ্রাভিবাদয়োঃ ইতি চন্দ্রমৌলীঃ। ম কারো মারুতে বুদ্ধৌ প্রভাকরনিশাকরে ইতি স্বভূতিঃ।  হিশব্দো হি রসাবেশে হিঙ্গুলে চন্দ্রমণ্ডলে ইতি রভসঃ। তৎসাদৃশ্যে বিভাবে চ তকারশ্চন্দ্রমণ্ডলে ইতি ব্যাঘ্রভূতিঃ। নশব্দো নৌস্ত্রিয়ানৌ বা নকারশ্চন্দ্রমণ্ডলে ইৎ দেবদ্যোতিঃ।
অনুবাদ:- আচার্য্য চন্দ্রমৌলীর মতে ধী শব্দের অর্থ বুদ্ধি, প্রাজ্ঞ বা পন্ডিত, বিধি, চন্দ্র, ও অভিবাদন। আচার্য্য স্বভূতির মতে -কারের অর্থ বায়ু, বুদ্ধি, সূর্য, চন্দ্র। আচার্য্য রভস এর মতে হি-কারের অর্থ রসাবেশ, সিন্দুর বা হিঙ্গুল, চন্দ্রমণ্ডল। ব্যাঘ্রভূতি র মতে তৎ অর্থ সাদৃশ্য, বিভাব বা উদ্দীপক, ও চন্দ্রমণ্ডল। দেবদ্যোতির মতে -কারের অর্থ
নৌকা, স্ত্রী, চন্দ্রমণ্ডল
অনঙ্গো মদনে বিশ্বেহনঙ্গশ্চন্দ্রে বিভাবনে ইতি চন্দ্রমৌলিঃ। প্রশব্দো বিবিধে নৃত্যে প্রহৃষ্টে চন্দ্রমণ্ডলে ইতি ব্যাঘ্রভূতিঃ। চকারশ্চলনে চন্দ্রে চঞ্চলে চ বিভাবনে ইতি স্বভূতিঃ। দকারো বিবিধে নৃত্যে চন্দ্রবিম্বেহধরেহপি চ ইতি ভাস্বতিঃ। য় আসনে বিধানে চ য়কারশ্চন্দ্রমণ্ডলে ইতি চন্দ্রমৌলিঃ। স্তবস্তোত্রবিকাশেষু তকারশ্চন্দ্রমণ্ডলে ইতি দেবদ্যোতিঃ। ৮
অনুবাদ:- অনঙ্গ পদের অর্থ মদন বা কাম। আচার্য্য চন্দ্রমৌলীর মতে অনঙ্গ পদের অর্থ চন্দ্র, বিভাব। আচার্য্য ব্যাঘ্রভূতির মতে প্র-কারের বিবিধ অর্থ যথা নৃত্য, প্রহৃষ্ট(অত্যন্ত সন্তোষ), চন্দ্রমণ্ডল। স্বভূতির মতে -কারের অর্থ চলন, চন্দ্র, চঞ্চল, বিভাব। আচার্য্য ভাস্বতীর মতে -কারের বিবিধ অর্থ নৃত্য, চন্দ্রবিম্ব, অধর। আচার্য্য চন্দ্রমৌলীর মতে য়-কারের অর্থ আসন, বিধান, চন্দ্রমণ্ডল। আচার্য্য দেবদ্যোতির মতে -কারের অর্থ স্তব, স্তোত্র, বিকাশ, চন্দ্রমণ্ডল

যত্তৎকামো মন্ত্রী ভবেৎ, মন্ত্রী তদা কামঃ। আব্রহ্ম ভুবনং ব্যাপ্তং করোতি। কামস্য বাণাঃ পঞ্চ।
উন্মাদনস্তাপনশ্চ শোষণস্ স্তম্ভনস্তথা।
সম্মোহনশ্চ কামস্য পঞ্চবাণাঃ প্রকীর্তিতাঃ।।
অন্যত্র চ—
উচ্চাটনশ্চ দাহশ্চ স্তম্ভ আকর্ষণস্তথা।
সম্মোহনশ্চ কামস্য পঞ্চবাণাঃ প্রকীর্তিতাঃ।।
যেহেতু কোনো বিষয়ে কামই মন্ত্রী অর্থাৎ কামের দ্বারাই প্রেরিত হয়ে ব্যাক্তি কোনো কর্ম করে। ব্রহ্মা পর্যন্ত সকল ত্রিভূবন ব্যাপ্ত হয়ে কামই সকল কর্মে প্রেরিত করে। এই কামের পাঁচটি বাণ। এই পাঁচটি বাণ হল উন্মাদন যা উন্মত্ত করে, স্তাপন যা তপ্ত করে, শোষণ যা শোষিত করে, স্তম্ভন যা স্থির করে ও সম্মোহন
অন্যত্র বলা হয়েছে—
উচ্চাটন, দাহ, স্তম্ভ, আকর্ষণ, সম্মোহন এই পাঁচটিকে কামের পঞ্চবাণ বলা হয়েছে।

অথ বাণানাং ব্যাপ্তিঃ—
আম্রস্য মুকুলশ্চৈবাপ্যশোকং বকুলং তথা।
মল্লিকা মাধবী পঞ্চ বাণাশ্চ প্রাপ্যতে সদা।।
তাপনদাহনোঞ্চাটনসম্মোহনাকর্ষণাঃ।
আম্রমুকুলঃ ককারঃ। অশোকমুকুলো লকারঃ। 
মাধবী ইকারঃ। মল্লিকা অর্দ্ধচন্দ্রঃ। বকুলো বিন্দুঃ।
 স এবং মধুরাঃ পঞ্চ মধুমূর্তিঃ।
অনুবাদ:- এরপর বাণগুলির ব্যাপ্তি সম্পর্কে বলা হচ্ছে আম্র, অশোক, বকুল, মল্লিকা, ও মাধবীর মুকুল দ্বারা পাঁচটি বাণকে বোঝানো হয় যথা- তাপন, দাহন, উচ্চাটন, সম্মোহন, আকর্ষণ।
আম্র মুকুল কে ক-কার বলা হয়। অশোকমুকুল কে ল-কার বলা হয়। মাধবী মুকুল কে ঈ-কার বলা হয়। মল্লিকা মুকুল দ্বারা অর্দ্ধচন্দ্র ও বকুল দ্বারা বিন্দু কে বলা হয়। এই হল মধুরের মধ্যে পঞ্চমধুরমূর্তি।

তত্র গণ্ডশিরাস্যঞ্চ ককারঃ। চক্ষুঃ কর্ণং লকারঃ। রূপনাসিকাহস্তং ইকারঃ। বক্ষঃপৃষ্ঠকটিজঙ্ঘা নাদ অর্দ্ধচন্দ্রঃ। জানুপাদৌ চ বিন্দুঃ।
অনুবাদ:- শ্রীকৃষ্ণের গন্ড ও শির দেশ ক-কার। চক্ষু ও কর্ণ ল-কার। রূপ, নাসিকা, হস্ত ঈ-কার। তার বক্ষ, পৃষ্ঠ, কটি, জঙ্ঘা, নাদ বা আনুনাসিকতা বা অর্দ্ধচন্দ্রাকৃতি। জানু ও চরণ বিন্দু।

শৃঙ্গারঃ সখি মূর্তিমানিব মধৌ মুগ্ধো হরিঃ ক্রীড়তীতি। গীতগোবিন্দ ১২
মধুরং মধুরং বপুরস্য বিভো
র্মধুরং মধুরং বদনং মধুরম্।
মধুগন্ধি মৃদুস্মিতমেতদহো
মধুরং মধুরং মধুরং মধুরমিতি। কৃষ্ণকর্ণামৃত ১/৯২
অনুবাদ:- হে সখী! শৃঙ্গার ই যেন মূর্তিমান হরি হয়ে এই মধুমাসে অর্থাৎ বসন্ত কালে ক্রীড়া করছে। (গীতগোবিন্দে ১২)
এই শ্রীকৃষ্ণের বপু মধুর হতেও সুমধুর, তাঁর বদন মধুর হতেও যা সুমধুর তার থেকেও সুমধুর। আর তার বদনে মৃদুহাস্য, মধুর হতেও যা সুমধুর তা হতে ও অত্যন্ত সুমধুর, অহো! শ্রীকৃষ্ণের সকলই মধুর। (কৃষ্ণকর্ণামৃত ধৃত বাক্য)

ক্লীঁ বৃন্দাবনস্যাপ্রাকৃতমদনঃ। পঞ্চবাণস্য নাম তদ্যথা—চিত্তবিদ্যাসদাকামরমণঞ্চ প্রকাশকঃ।। চিত্তানন্দধরঃ বিদ্যানন্দধরঃ সদানন্দধরঃ কামানন্দধরঃ রমণানন্দধরঃ। পঞ্চ নাম্না একনাম চিত্তবিদ্যাসদাকামরমণানন্দধরায় বিদ্মহে। চিত্তবিদ্যাসদাকামরমণানন্দধরায় স্বাহা ইতি কৃষ্ণপক্ষঃ স এব পঞ্চমধুরাঃ মধুরমূর্তির্বা। আম্রমুকুলশ্চিত্তকন্দর্পঃ। অশোকঃ কামানন্দপ্রকাশকঃ। বকুলো বিদ্যানন্দধর ইতি নামাত্রিভিরেকং নাম। চিত্তকন্দর্পকামানন্দবিদ্যানন্দধরায় স্বাহা ইতি কৃষ্ণস্য। মাধবী কোটি চন্দ্রমোহিনী। মল্লিকা কোটিপ্রেমমোহিনী। নাম দ্বাভ্যামেকনাম। কোটিচন্দ্রকোটিপ্রেমমোহিন্যৈ স্বাহা। তদ্যথা—চিত্তকন্দর্পরমণকামানন্দপ্রকাশকঃ। বিদ্যানন্দধরা নাম কোটিপ্রেমমোহিনী।
কোটিচন্দ্রমোহিনী চ প্রত্যেকং পঞ্চভেদক ইত্যুক্তং গোপালতাপনী হ্যন্তরূক্তং চ প্রবক্ষতে। স এব স্থানস্থানীসম্বন্ধঃ। প্রীতিস্থানং বৃন্দাবনং। কমলং শ্রীরাধিকা। অভিজাবীতে বসতি সদা প্রেমসৌরভং ভ্রমরঃ শ্রীকৃষ্ণশ্চঞ্চলো ভূত্বা মধুপানে বিভোরঃ সদা।
অনুবাদ:- ক্লীঁ পদে বৃন্দাবনে অপ্রাকৃত মদন কে বোঝায়।  যিনি পঞ্চবাণ যথা- মন, বিদ্যা, নিত্যতা, কাম, রমণ, এর প্রকাশক। চিত্তে আনন্দের ধারক, চিত্তানন্দধর এইরূপে বিদ্যানন্দধর, সদানন্দধর,  কামানন্দধর, রমণানন্দধর। এই পাঁচটি নাম একই নাম। চিত্তবিদ্যাসদাকামরমণানন্দধরায় বিদ্মহে। বিদ্মহে শব্দের অর্থ প্রকাশক।
চিত্তবিদ্যাসদাকামরমণানন্দধরায় স্বাহা
এই হচ্ছে কৃষ্ণ পক্ষে ব্যাখ্যা। কৃষ্ণ হলেন পঞ্চমধুর বা পাঁচটি মধুরের মূর্তি। আম্রমুকুল হল মনে কন্দর্প।  অশোকমুকুল কাম আনন্দের প্রকাশক। বকুল মুকুল দ্বারা বিদ্যা আনন্দের আধার। এই তিনটি নাম একই নাম যথা
চিত্তকন্দর্পকামানন্দবিদ্যানন্দধরায় স্বাহা
এটি কৃষ্ণ বাচক। মাধবী মুকুল কোটি চন্দ্র কে মোহিত করে। মল্লিকা কোটি প্রেম মোহিনী। এই দুই নাম দ্বারা একটি নাম হয়। যথা- কোটিচন্দ্রকোটিপ্রেমমোহিন্যৈ স্বাহা। এর অর্থ চিত্তে কন্দর্পের, রমণের ও কামের আনন্দের প্রকাশক।
বিদ্যায় আনন্দের আধারের নাম কোটিপ্রেমমোহিনী ও কোটিচন্দ্রমোহিনী। এবং প্রত্যেকটির পাঁচটি ভেদ রয়েছে। গোপালতাপনী উপনিষদে তাকে বর্ননা করেছে। তিনি সেই স্থানের স্থানী। তার প্রীতিপ্রদ সেই স্থান বৃন্দাবন। শ্রীরাধিকা কমল। সেই প্রেমের সৌরভ সকল জ্ঞানের উর্দ্ধে। শ্রীকৃষ্ণ ভ্রমরের ন্যায় সেই কমল সৌরভে মত্ত হয়ে মধুপানে বিভোর।
ককারঃ কৃষ্ণ উচ্যতে। ঈকারো শ্রীরাধিকেত্যাদি। কামস্য পঞ্চ বাণাঃ। আম্রস্যমুকুলঞ্চৈবাপ্যশোকং মুকুলং তথেত্যাদি।। ৯
অনুবাদ:- ক-কার দ্বারা শ্রীকৃষ্ণকে বোঝায়। ঈ-কার দ্বারা শ্রীরাধিকা কে বোঝায়। কামদেবের পঞ্চবাণ। যথা আম্রমুকুল, অশোকমুকুল ইত্যাদি।
রসস্পর্শৌ চ রূপং চ শব্দগন্ধৌ প্রভেদনঃ। ভেদাদিগুণরূপাদ্যাঃ পঞ্চধা পরিকীর্তিতাঃ। শান্তং দাস্যং চ সখ্যঞ্চ বাৎসল্যং মধুরে স্থিতিঃ। শান্তিং প্রীতিঞ্চ সখ্যন্তু বাৎসল্যং প্রিয়তাহপি চ। নিষ্ঠা সেবা চ নিঃশঙ্কং স্নেহঞ্চৈব মধুরতা।। ১০
অনুবাদ:- রূপ রস স্পর্শ শব্দ গন্ধ ভেদে গুণ ও রূপ অনুসারে পুষ্পবান পাঁচ প্রকার। শান্ত, দাস্য, সখ্য বাৎসল্য ও মধুর এই পঞ্চ প্রকার রসের স্থায়ী ভাবে স্থিতি। নিষ্ঠা, সেবা, নিঃশঙ্কতা, স্নেহ ও মাধুর্য্য এই পাঁচটির মধুর রসে স্থিতি।

গুণাঃ স্যুঃ পঞ্চবাণস্য পরাঃ পঞ্চ রসা হ্যপি।
রূপাশ্চ বর্ণরূপাদ্যাঃ পঞ্চবর্ণা উদীর্যতে।। ১১
অনুবাদ:- পঞ্চবাণের গুণগুলি হল পাঁচটি মুখ্য রস।
পাঁচটি বর্ণ দ্বারা রূপাদি কে বোঝায়।

তন্ত্রে পদ্মজং তন্মুখোপেতং শক্রস্যোপরি সংস্থিতম্।
সেন্দুবিন্দুশিখোপেতং প্রথমং সর্বকামদম্।। ১২
অনুবাদ:- তন্ত্রে বলা হয়েছে এই কামগায়ত্রী পদ্মযোনি ব্রহ্মা দ্বারা প্রথম গীত, দেবগন তা মস্তকে ধরে বন্দনা করেন ও সমস্ত কামনা পূরণ কারী।

ইতি শ্রী কামগায়ত্রী ব্যাখ্যা চ কথিতা ময়া।। ১৩
ইতি শ্রীপ্রবোধানন্দসরস্বতী বিরচিতং কামগায়ত্রীব্যাখ্যাপটলং সমাপ্তম্।।