Rupa goswami books| uddhav sandesh

Rupa goswami books| uddhav sandesh

Rupa goswami books |Uddhav sandesh


সান্দ্রীভূতৈর্নববিটপিনাং পুষ্পিতানাং বিতানৈ,
র্লক্ষ্মীবত্তাং দধতি মথুরা পত্তনে দত্তনেত্রঃ।
কৃষ্ণঃ ক্রীড়াভবনবড়ভী মূর্ধ্নি বিদ্যোতমানো,
দধ্যৌ সদ্যস্তরলহৃদয়ো গোকুলারণ্যমৈত্রীম্।। ১
একদিন মথুরাধিপতি শ্রীকৃষ্ণ নিজের কেলিগৃহের সর্বোচ্চ অট্টালিকায় উঠে নানা প্রকার বিকশিত নবীন বৃক্ষ দ্বারা ঘন শোভা বিস্তার কারী উপবন শোভিত ঐশ্বর্য্যময় মথুরানগরী ও সেখানকার নানান লোকজন কে দেখে তার ব্রজবাসী স্বজন দের কথা চিন্তা করতে লাগলেন। তাদের বিরহ, দাবানলের ন্যায় তার হৃদয় কে দগ্ধ করতে লাগল।
শ্বাসোল্লাসৈরথ তরলিতস্থূলনালীকমালঃ,
কুর্ব্বন্ পূর্ণা নয়নপয়সাং চক্রবালৈঃ প্রণালীঃ।
স্মারং স্মারং প্রণয় নিবিড়াং বল্লবী কেলিলক্ষ্মীং
দীর্ঘোৎকন্ঠা জটিলহৃদয়স্তত্র চিত্রায়িতোহভূৎ।।২
ঐ ব্রজজনদের বিরহ জনিত অত্যন্ত দীর্ঘনিঃশ্বাস দ্বারা তার গলদেশে পদ্মমালা কম্পমান হতে নাগলো।  তার নয়ন থেকে ধারা র মতো অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগলো। ব্রজগোপীদের সাথে লীলা বিহারের কথা স্মরণ করতে করতে দীর্ঘ উৎকন্ঠায় তিনি চিত্রবৎ স্তম্ভিত হয়ে গেলেন।
অন্তঃস্বান্তে ক্ষণমথ পরামৃষ্য পারাভিলাষী
কষ্টাম্ভোধের্ভবনশিখরে কুট্টিমান্তর্নিবিষ্টঃ।
সোৎকন্ঠোহভূদভিমতকথাং শংসিতুং কংসভেদী
নেদিষ্ঠায় প্রণয় লহরীবদ্ধ বাগুদ্ধবায়।। ৩
কংসনাশন শ্রীকৃষ্ণ সেই দুঃখসাগর পার হওয়ার জন্য মনে মনে ক্ষণকাল বিচার করে ভবন শিখরে মণিজড়িত ছাদে বসে পড়লেন ও সেখানে উপস্থিত উদ্ধবজীর সঙ্গে বার্তালাপে উৎকন্ঠিত হয়ে উঠলেন। তার বাণী প্রণয় লহরী তে রুদ্ধ হয়ে গেল। গদগদ বচনে তিনি উদ্ধবজী কে বলতে লাগলেন।
ত্বং সর্ব্বেষাং মম গুণনিধে! বান্ধবানাং প্রধান
স্ত্বত্তো মন্ত্রৈঃ শ্রিয়মবিচলাং যাদবাঃ সাধয়ন্তি।
ইত্যাশ্বাসাদভিমতবিধৌ কাময়ে ত্বাং নিযোক্তুং
ন্যস্তঃ সাধীয়সি সফলতামর্থভারো হি ধত্তে।।৪
হে উদ্ধব, তুমি আমার সকল মিত্র গনের মধ্যে প্রধান। তুমি গুনের সাগর। তোমার পরামর্শে যাদবগন অবিচল লক্ষ্মী কে প্রাপ্ত করতে সমর্থ। এই বিশ্বাসের কারনে আমার ইচ্ছা পূরণ করার জন্য তোমায় নিযুক্ত করতে চাই। কেননা অতিশয় সাধুজনে ন্যস্ত কার্যভার অবশ্য সফল হয়।
সংরম্ভেণ ক্ষিতিপতিগিরাং লম্ভিতে গর্ব্বিতানাং
বৃন্দারণ্যান্ময়ি মধুপুরীং গান্দিনী নন্দনেন।
বল্লব্যস্তা বিরহদহনজ্বালিকামন্ডলীনা
মন্তর্লীনাঃ কথমপি সখে! জীবিতং ধারয়ন্তি।।৫
কংসের গর্বিত বচনে গান্দিনীনন্দন অক্রুর বৃন্দাবন থেকে আমায় মথুরায় নিয়ে আসলে সেই সকল ব্রজগোপীগন বিরহাগ্নিজ্বালায় লীন হয়ে কোনো প্রকারে জীবন ধারণ করছে।
প্রাণেভ্যো মে প্রণয়বসতির্মিত্র তত্রাপি রাধা
ধাতুঃ সৃষ্টৌ মধুরিমধরা ধারণাদদ্বিতীয়া।
বাচো যুক্তিস্তবকিতপদৈরদ্য সেয়ং সখীনাং
গাঢ়াশ্বাসৈর্বিধুরবিধুরং প্রাণভারং বিভর্ত্তি।। ৬
হে মিত্র! সেখানে আমার প্রাণ হতে ও প্রিয়তমা,মাধূর্য্যরাশি রূপ পর্বত কে ধারণকারী শ্রীরাধা আছেন যার তুলনা ব্রহ্মার সৃষ্ট এই জগতে কোন দ্বিতীয় জনের সাথে চলেনা। এখনো পর্যন্ত তিনি সখীদের যুক্তিপূর্ণ কথা ও গাঢ় আশ্বাসন দ্বারা বড় কষ্টে জীবন ধারণ করছেন।
গত্বা নন্দীশ্বরশিখরিণো মেখলাং রত্নভূতাং
ত্বং বল্লীভির্বলয়িতনগাং বল্লবাধীশপল্লীম।
তাং দষ্টাঙ্গীং বিরহফণিনা প্রাণয়ন প্রীণয়ার্ত্তাং
বার্ত্তামন্দ্রধ্বনিভিরথ মে মন্ত্রিচূড়ামণীন্দ্র! ৭
হে শ্রেষ্ঠ মন্ত্রী গণের শিরোমণি! তুমি নন্দীশ্বর পর্বতের রত্নময় মেখলার মতো নন্দগ্রাম নামক নগরী তে যাও। যা গোপরাজ নন্দমহারাজের রাজ্য। বহু লতা বৃক্ষাদি পরিবেষ্টিত এই নগর পরম রমনীয়। সেখানে গিয়ে আমার বিরহ রূপ সর্প দংশনে পরম ব্যাকুলা শ্রীরাধা কে আমার বার্তা রূপ গম্ভীর ধ্বনি তে জীবিত করে পরম আহ্লাদিত করো।
তিষ্ঠন্ত্যেতে জগতি বহবস্ত্বদ্বিধানাং বিধাতুং
চেতঃপূর্ত্তিং ননু জনপদা মূর্ত্তিভির্মে সনাথাঃ।
ভূয়োভূয়ঃ প্রিয়সখ! শপে তুভ্যমব্যাজতোহহং
ভূরণ্যা মে হৃদি সুখকরী গোষ্ঠতঃ কাপি নাস্তি।। ৮
হে প্রিয়সখে! এই জগতে বহু তীর্থ স্থান আছে। যেখানে আমার স্বরূপ প্রতিষ্ঠিত। এই সকল স্থান আমি তোমার মতো ভক্ত দের চিত্ত প্রসন্ন করার জন্য স্থাপন করেছি।  কিন্তু আমি নিষ্কপট ভাবে তোমার কাছে শপথ করে বলছি ব্রজ ভিন্ন আমার হৃদয় সুখকারী ভূমি আর কোথাও নেই।
মদ্বিশ্লেষজ্বলনপটলীজ্বালয়া জর্জ্জ্বরাঙ্গাসর্ব্বে তস্মিন্নিধন পদবীং শাখিনোহপ্যাশ্রয়িষ্যন।
গোপীনেত্রাবলিবিগলিতৈর্ভূরিভির্বাষ্পবারাং
পূরৈস্তেষাং যদি নিরবধির্নাভিষেকোহভবিষ্যৎ।।৯
হে সখে আমি অধিক আর কি বলবো? আমার বিয়োগ বিরহাগ্নি তে জর্জরিত হয়ে ব্রজের বৃক্ষ সকল বিনষ্ট হয়ে যেত(শুকিয়ে যেত)। যদি না গোপীদের নেত্র থেকে নির্গলিত প্রচুর অশ্রুধারা তাদের নিরন্তর অভিষিক্ত না করতো।
আত্মক্লেশৈরপি ন হি তথা মেরুতুল্যৈর্ব্যথন্তে
বল্লব্যস্তাঃ প্রিয়সখ! যথা মদ্ব্যথালেশতোহপি।
দুর্ব্বারাং মে বিরহ বিহিতাং নিহ্নুবানস্তদার্ত্তিং
প্রেমগ্রন্থিং ত্বমতিপৃথুলং তাসু বিখ্যাপয়েথাঃ।। ১০
হে প্রিয়সখে! এই ব্রজগোপীদের হৃদয় আমার লেশমাত্র ক্লেশেও যেমন ব্যাথিত হয়, তাদের নিজেদের সুমেরু সমান ক্লেশেও সেরূপ ব্যাথিত হয়না। তাই আমার এই বিরহ দুঃখের কারনে আর্তি তাদের কাছে গোপন রাখবে। বরং বলবে আমি কিরূপ অতি বিশাল প্রেমগ্রন্থি তে তাদের কাছে বাঁধা।
ভ্রাতর্নন্দীশ্বরগিরিমিতো যাস্যতস্তে বিদূরং
পন্থাঃ শ্রীমানয়মকুটিলঃ কথ্যতে পথ্যরূপঃ।
প্রীয়ে সদ্যস্ত্বয়ি নিপতিতে গোকুলানন্দসিন্ধৌ
সন্তস্তুষ্টে সুহৃদি হি নিজাং তুষ্টিমেবামনন্তি।। ১১
হে ভ্রাতঃ এখান থেকে অতি দূরস্থিত নন্দীশ্বর পর্বতে যাবার অতি সরল ও সুখকর পথ বলছি। তুমি সেপথে গেলে বিলম্ব হবেনা। যখন তুমি গোকুল রূপ আনন্দ সমুদ্র কে প্রাপ্ত হবে তখন আমিও এখানে বসে অতি প্রসন্নতা অনুভব করবো।  কেননা সাধুগন নিজ সুহৃদ গনের সন্তুষ্টি তেই তুষ্ট হয়।
অগ্রে গৌরীপতিমনুসরেঃ পত্তনান্তর্বসন্তং
গোকর্ণাখ্যং ব্যসনজলধৌ কর্ণধারং নরাণাম।
যস্যাভ্যর্ণে সহ রবিজয়া সঙ্গমো জঙ্গমানা
মাবিষ্কুর্বন্নভিমতধুরাং ধীর! সারস্বতোহস্তি।। ১২
হে ধীর! প্রথমে তুমি নগরের মধ্যস্থলে বিদ্যমান দুঃখ সাগরে নিমজ্জিত জীব গনের কাছে নৌকার কর্নধার রূপ গোকর্ণ নামক গৌরীপতি গোকর্ণ মহাদেবের দর্শন করো।  তারপর তার নিকটবর্তী যমুনা ও সরস্বতী নদীর সঙ্গম স্থল দর্শন করো, যা প্রাণীগনের মনোভিলাষ পূর্ণ করে।
আরূঢ়স্তে নয়নপদবীং তন্বি! ধন্যাসি সোহয়ং
গোপীনগ্নীকরণমুরলীকাকলীকঃ কলাবান।
ইত্যালাপ স্ফুরিতবদনৈর্যত্র নারীকদম্বৈ
র্দৃগভঙ্গীভিঃ প্রথমমথুরাসঙ্গমে চুম্বিতোহস্মি।। ১৩
এই সরস্বতী সঙ্গম স্থল দিয়ে মথুরায় প্রথম প্রবেশ করা কালীন সমবেত নারীগন দ্বারা অভিনন্দিত হয়েছিলাম।  যারা আমার দিকে কটাক্ষপাত করে পরষ্পর বার্তালাপ করছিল হে কৃশাঙ্গী! যার মুরলীধ্বনি গোপীদের বিবসনকরে,যিনি চৌষট্টী কলাবিদ্যায় প্রবীন। সেই শ্রীকৃষ্ণকে দর্শন করছো তুমি অতিশয় পূণ্যবতী।
তস্মাদন্তর্বিরচিতপরানন্দপূরাদদূরাং
যাহি প্রীত্যা সপদি পদবীমম্বিকাকাননস্য।
যত্রানন্দোৎসবমকরবং সর্পতঃ সর্পতোয়া
ন্নন্দং বিদ্যাধরমপি পুরা মোচয়ন্ বল্লবীনাম।। ১৪
তারপর তুমি শীঘ্র প্রসন্নতার সাথে সেই পরমানন্দপূর্ণ ব্রজভূমির নিকট অম্বিকাবনের পথে যেও।  যেখানে পূর্বে আমি কালীয়দহ থেকে আসা সুদর্শন বিদ্যাধর যে শাপভ্রষ্ট হয়ে সর্পযোনি লাভ করেছিল, সেই সর্পের গ্রাস থেকে আমার পিতা নন্দ মহারাজ কে মুক্ত করে গোপীদের আনন্দিত করেছিলাম।
ভূয়োভিস্ত্বং কিল কুবলয়াপীড় দন্তাবঘাতৈ
রেতাং নিম্নোন্নত পরিসরাং স্যন্দনে বর্ত্তমানঃ।
মুঞ্চোত্তুঙ্গাং মিহির দুহিতুর্ধীর! তীরান্তভূমিং মন্দাক্রান্তাং ন খলু পদবীং সাধবঃ শীলয়ন্তি।। ১৫
হে ধীর রথে যেতে যেতে তুমি যমুনা তীরেপ উঁচু নীচু পথ পরিত্যাগ করো। যেহেতু সাধুজন দুষ্টজন যে পথে চলে সেই পথ পরিত্যাগ করে থাকে। এই পথে কূবলয়াপীড় নামক হস্তী আমাকে আক্রমণ করেছিল। তার দন্তের আঘাতে যমুনার তীরভূমের মাটি এরূপ উঁচুনীচু।
মুঞ্চাসব্যে বিহগরুচিরং কিঞ্চিদস্মাদুদঞ্চং
রাজত্তীরং নবসুমনসাং রাজিভিস্তীর্থরাজম।
যত্রাপূর্ব্বং কিমপি কলয়াঞ্চক্রতুর্মৎপ্রভাবা
দাভীরাণাং কুলমপি তথা গান্দিনী নন্দনোহপি।। ১৬
অম্বিকাবনের ডানদিকে কিছু উত্তরদিকে গিয়ে  পক্ষীদের কলরব মুখরিত নব বিকশিত পুষ্প শোভিত তট যুক্ত তীর্থরাজ অক্রুরঘাট কে তুমি দর্শন করে যেও।  মথুরাগমনের সময় অক্রুরজী এখানে আমার অপূর্ব্ব বৈভব দর্শন করেছিলেন। আমার প্রভাবে মোক্ষাভিলাষী গোপসমাজ এখানে#
যজ্বানস্তে যদপি ভবতো বিপ্রিয়া হেলনাম্নে
নম্রস্তেষাং তদপি ভবন দ্বাররথ্যাং জিহীথাঃ।
গায়ন্তীনাং মদনুচরিতং তত্র বিপ্রাঙ্গনানা
মালোকায় স্পৃহয়সি ন চেদীক্ষণৈর্বঞ্চিতোহসি।। ১৭
যদিও এখানে যজ্ঞপরায়ণ ব্রাহ্মণগণ আমায় অবহেলা করে বলে তারা তোমার প্রিয় নয়। তবুও তুমি নম্রতা পূর্বক তাদের গৃহদ্বারের সম্মুখ দিয়ে যেও। সেখানে আমার লীলা গুন গান কারী যাজ্ঞিক ব্রাহ্মণের পত্নীগন কে না দর্শন করতে যদি তোমার স্পৃহা না হয় তোমার নয়নদ্বয় বঞ্চিত হবে।
তদ্বিখ্যাতং স্ফুটবিটপিনাং মন্ডলেনাভিপূর্ণং
তূর্ণং গচ্ছেরুপপুরিপুরঃ কোটিকাখ্যং প্রদেশম।
যত্র প্রাপ্তে ময়ি বিকিরতী নেত্রমুদ্যানপালী
শালীনাপি প্রকটিতভূজামূলমল্পং জহাস।। ১৮
তারপর তুমি শীঘ্র মথুরানগরীর নিকটে নব পল্লব শোভিত বৃক্ষ সমূহ যুক্ত প্রসিদ্ধ উত্তরকোটি নামকস্থানে যেও। সেখানে যখন আমি প্রথম গেছিলাম, শুদ্ধস্বভাবা উদ্যানপালিকা গন লজ্জাবতী হলেও বাহুমুল থেকে বস্ত্র উন্মোচিত করে তার প্রণয়স্নিগ্ধ দৃষ্টি আমায় অর্পণ করেছিল।
ইত্থং ক্রান্ত্বা পুরপরিসরান যাহি সট্টীকরাখ্যাং
পট্টীভূতং ভ্রমরনৃপতেঃ পুষ্পিতারণ্যমারাৎ।
শ্রীদামানং সুভগ! গরুড়ীকৃত্য যত্রাধিরূঢ়ঃ
ক্রীড়াকারী দধদুরুভুজান দ্বাদশাহং বসামি।। ১৯
এভাবে মথুরা নগরীর সন্নিকটস্থ স্থান সমূহ অতিক্রম করে তুমি সট্টীকর নামক স্থানে পৌছাবে। এই স্থান বহু পুষ্প বাটিকা যুক্ত, ও ভ্রমররাজের সিংহাসন রূপ। ভ্রমর রাজ পুষ্প কে অধিকার করে অধিষ্ঠান করে তেমন এই কুঞ্জ সকল কৃষ্ণ ভ্রমর রূপ শ্যামের অধিষ্ঠান স্থল।  হে মিত্র সেখানে ক্রীড়াসক্ত হয়ে আমি দ্বাদশ বাহু প্রকাশ করেছিলাম ও শ্রীদাম কে গরুড় আমায় স্কন্দে বহন করেছিল।
মুগ্ধে শ্যামঃ কলয়তি যুবা পশ্য মামেব ন ত্বা
মিত্যুল্লাসৈরহমহমিকাং সর্ব্বতঃ কুর্ব্বতীভিঃ।
যানালম্বী সরলনয়নালোক মৈত্রীভরাণাং
গ্রামীণাভির্যুবতিভিরহং যত্র পাত্রীকৃতোহস্মি।। ২০
এই সেই স্থান যেখানে রথারূঢ় হয়ে মথুরা যাওয়ার সময়, সেখান কার গ্রামযুবতী গন সখ্যপূর্ণ সরলনয়ন দ্বারা আমায় অবলোকন করছিল।  ও উল্লাসপূর্ণ স্পর্ধায় প্রগলভ হয়ে তারা পরষ্পর চর্চা করছিল হে মুগ্ধে দেখ এই যুবা শ্যাম আমাকেই দেখছে কখনই তোকে নয়।
মুঞ্চন সব্যে বহুলবহুলং কাননস্যোপশল্যং
তঞ্চোত্তুঙ্গং হ্রদপরিসরং দক্ষিণে কালিয়স্য।
ফুল্লাভিস্ত্বং পিহিতমিহিরোদ্দ্যোতমন্তর্লতাভি
র্ধীরাধ্বানং বিমলসরসী রাজিভাজং ভজেথাঃ।। ২১
হে ধীর তারপর তুমি বনের বামদিকের নিবিড় যে বনের পথ বহুলা বনের দিকে যায় ও ডান দিকে যে উত্তুঙ্গ উচ্চপথ কালীয়দহের দিকে যায় তা পরিত্যাগ করে যে পথে বিকশিত লতা দ্বারা সূর্যের প্রকাশ ঢেকে রয়েছে ও নির্মল সরোবর সমূহ দ্বারা শোভিত সেই পথ গ্রহন করো।
বল্লীচিত্রং ব্রজ মৃগহরং তং ব্রজস্যোপশল্যে
কল্যে ক্রীড়াবনবিহরণোৎকন্ঠয়া গচ্ছতো মে।
যত্রোদঞ্চৎ কলবলয়িতৈর্বেণুগীতৈর্মৃগাণাং
তূর্ণং রাজী রজনী বিরহ ব্যাকুলানামহারি।। ২২
তারপর ব্রজের সীমান্তপ্রদেশে লতাদ্বারা শোভিত মনোহর যে বন মৃগদের প্রসন্ন করে, তাই মৃগহরা বা মঘেরা নামে প্রসিদ্ধ। সেই প্রদেশে যেও।    বনবিহারের জন্য উৎকন্ঠিত হয়ে প্রাতঃকালে আমি এখানে যেতাম ও মধুরবংশীরবে রাত্রিকালে আমার বিরহব্যাকুল মৃগ গনকে আকৃষ্ট করতাম।
আনম্রাণাং হসিতমুকুলৈঃ ফুল্লগন্ডস্থলানাং
দুরাদ্দৃষ্টিং স্ফুটসুমনসাং স্যন্দনে মুঞ্চতীনাম।
তে বৈদগ্ধী পরিমলকিরো যত্র সীমন্তিনীনাং
সস্রুর্বাণাবলি বিলসিতা রুদ্ধলক্ষ্যাঃ কটাক্ষাঃ।। ২৩
সেখান দিয়ে যখন আমি রথে করে আসছিলাম তখন যৌবনভারে ঈষদ নম্র, মৃদু মন্দ হাস্য বিকশিত প্রফুল্ল গন্ডস্থল ও সুন্দর মন যাদের, সেই ব্রজরমণী গন তাদের অপাঙ্গ দৃষ্টি রূপ সুগন্ধ বিকীর্ণ কারী বানবর্ষন করতে লাগলেন। সেই বানসকল নির্ভুল লক্ষে বারংবার আমায় বিদ্ধ করতে লাগলো।
এষ শ্রীমান প্রবসতি রথী মাধবো রাধিকায়াঃ
প্রেমস্থূলঙ্করণকুটিলালোকভঙ্গীবিলাসঃ।
ইত্যৌৎসুক্যাদ্বরযুবতিভিঃ স্মারিতোদ্দামনর্ম্মা
ঘর্ম্মাম্ভোভির্বৃততনুরহং যত্র চিত্রায়িতোহস্মি।।২৪
যার বক্র দৃষ্টি ভঙ্গীর বিলাসে রাধার প্রেমের বৃদ্ধি হয়, সেই শ্রীমান মাধব রথাসীন হয়ে মথুরা যাচ্ছেন, উৎকন্ঠিত ব্রজযুবতী শ্রেষ্ঠ দের মুখে এই প্রকার বাক্য সকল শ্রবণ করে নিজ মনোহর লীলা ও রাধিকার কথা স্মরণ করে আমি রথোপরি চিত্রবৎ বসে ছিলাম, আমার সর্বাঙ্গে ঘর্মাদি অষ্টসত্ত্বিক ভাব বিকারাদি প্রকট হচ্ছিলো।
লীলাস্বপ্নো মম বিজয়তে যত্র নাগেন্দ্রভোগে
শ্রীরাধাঙ্গীকৃতপদযুগাম্ভোজসংবাহনস্য।
তত্র ক্ষীরাম্বুধি পরিমল স্পর্দ্ধনে বদ্ধহস্তে
গ্রামে কামং ধ্বজবতি ভজে বদ্ধ বিশ্রামসৌখ্যম।।২৫
এরপর তুমি বড়োথা গ্রামে পৌছাবে যেখানে নাগেন্দ্রভোগ অর্থাৎ শেষশয্যায় আমি যখন বিশ্রামসুখ উপভোগ করছিলাম ও রাধিকা আমার পদকমলদ্বয় সংবাহন সেবা অঙ্গীকার করেছিলেন। সেই বড়োথা গ্রামের স্বপ্ন লীলা বিজয়প্রাপ্ত হোক।
ক্ষীরসাগরের সুগন্ধ কে প্রতিস্পর্দ্ধা কারী সেই গ্রাম যেখানে মাতা যশোদা আমার হস্তদ্বয় বেঁধে রেখেছিলেন।
সোহয়ং দধ্নাং মথননিনদাক্রান্ত দিকচক্রবালো
ঘোষস্তোষং তব জনয়িতা যোজনদ্বন্দ্বচুম্বী।
দিব্যেনালং নিখিলজগতীং সর্পিষা তর্পয়ন্তী
ভ্রাতর্ভূম্না বিলসতি বিধের্গোময়ী যত্র সৃষ্টিঃ।। ২৬
যেখানে দধি মন্থনোত্থিত শব্দ সকল দিকচক্রবাল কে পূর্ণ করে দুই যোজন পরিমান বিস্তৃত হয়, তা তোমায় আনন্দ প্রদান করবে। হে ভ্রাত সেখানে বিধাতার সৃষ্ট গো সকল ঘৃত দ্বারা  সমস্ত জগত কে তৃপ্তকারী।
কক্ষাং লক্ষাবধিভিরভিতঃ কাসরীভিঃ পরীতাং
তাং সন্নদ্ধব্রজবিজয়িনীং শাল্মলাখ্যাং ভজেথাঃ।
বীথ্যাং বীথ্যাং পৃথুক নিকরা যত্র মিত্রানুবেলং
খেলন্তস্তাননুবিদধতে বিক্রমান্ মে ক্রমেণ।।২৭
হে মিত্র তারপর তুমি প্রসিদ্ধ শাল্মল(সাহার) নামক গ্রাম এ পৌছাবে। যেখানে চারিদিকে বহু গোমহিষাদি পরিব্যাপ্ত হর্ষযুক্ত গোপগনের বাস। এই সাহার গ্রাম তুমি দর্শন কোরো। এখানে পথে পথে দেখতে পাবে ক্রীড়ারত বালকগন নিরন্তর আমার গোবর্ধন ধারণাদি বিক্রমপূর্ণ লীলা র অনুকরন করছে।
দূরাদেষ প্রণয়তি পুরা লব্ধসাহারনামা
প্রেমানন্দং তব নয়নয়োরৌপনন্দো নিবাসঃ।
জঙ্ঘালেন ক্ষিতিপতিপুরীং স্যন্দনেনানুবিন্দন্
যত্রাহারং প্রিয়মকরবং হারি হৈয়ঙ্গবীনম।। ২৮
দূর থেকেই সাহার গ্রাম তোমার নয়নদ্বয় কে প্রেমানন্দ প্রদান করবে।  এই গ্রাম মহারাজ উপানন্দের নিবাসভূমি। বেগবান রথে করে মথুরা নগরীতে আসতে আসতে এখানে মনোহর মাখন ভোজন করেছিলাম।
গোপেন্দ্রস্য ব্রজপরিসরে লব্ধতুষ্টির্লভেথা
স্তাং বিখ্যাতাং কলিতমহিলা চারু হেলাং রহেলাম।
যামাসাদ্য প্রহিত মুরলী কাকলী দূতিকোহহং
সায়ং গোপীকূলমকরবং সামি নেপথ্যনদ্ধম।। ২৯
গোপগনের ইন্দ্র রূপ নন্দমহারাজের রাজ্যে প্রসন্নতা অনুভব করে তুমি গোপীদের মনোজ্ঞ শৃঙ্গার ও বিলাসস্থলী রহেরা তে যেও। যেখানে পৌছে সন্ধ্যার সময় মুরলীবাদন রূপী দূতীর প্রয়োগ করে গোপীদের আহ্বান করতাম ও তা শুনে সমস্ত গোপীরা বস্ত্রাদি অর্দ্ধসুসজ্জিত অবস্থাতেই(যে যেই অবস্থায় থাকতেন সেই বেশেই) দৌড়ে আসতেন।
যত্র প্রীতানহমকরবং মিত্রভাবেন শাবান
হারং হারং বিদিতসময়ো বল্লবীনাং দধীনি।
শাখিব্রাতঃ স খলু বলিতঃ প্রীতশারাভিধস্তে
দেশঃ ক্লেশং পথিষু রথিনো দারয়িষ্যত্যুদারম।। ৩০
এরপর তুমি পীসাই বা প্রীতশার নামক গ্রামে পৌছাবে, যেখানে আমি পৌগন্ডলীলায়(দধিমন্থন লীলা কালে) বারংবার গোপীদের দধি হরণ করতাম ও সখ্যভাবে বালক দের প্রসন্ন করতাম। প্রফুল্লিত বৃক্ষসমূহ বেষ্টিত এই স্থান নিশ্চই পথশ্রমে উৎপন্ন তোমার ক্লেশ সকল হরণ করবে।

Next page>>>