Different avatar of Narasingha dev

Different avatar of Narasingha dev

নৃসিংহদেবের বিভিন্ন রূপ

গান্ডাবেরুন্ডা নরসিংহ

গান্ডা একটি কন্নড়ী শব্দ যার অর্থ মহাশক্তিশালী ভয়ঙ্কর পুরুষ। রাজার সম্মানর্থে গান্ডা শব্দটি ব্যাবহৃত হয়। বেরুন্ডা শব্দের অর্থ
শিবপুরাণে একটি কাহিনী আছে যে নৃসিংহ দেব হিরণ্যকশিপু কে বধ করলেও তার উগ্র ক্রোধ শান্ত হয়না। তখন দেবতা দের প্রার্থনায় শিবজী প্রথমে ভৈরব গন সহ বীরভদ্র কে পাঠান। নরসিংহ দেবের উগ্র বিক্রমে বীরভদ্রের পরাজয় হলে শিবজী শরভের রূপ নিয়ে নরসিংহকে আক্রমন করে শান্ত করতে চান। এভাবে মহাদেব শরভেশ্বর রূপে প্রকট হন।
পদ্ম ও গরুড় পুরাণে বর্ননা আছে শরভের আবির্ভাবে নরসিংহ দেব শান্ত তো হলেন ই না বরং
মহাভয়ঙ্কর গান্ডাবেরুন্ডা রূপ ধারন করেন। এটি একটি পাখীর মতো দেহ ও পশুর মতো মুখ যুক্ত রূপ। এই রূপ ধারন করে তিনি শরভ কে বিদারিত করেন। এই গান্ডাবেরুন্ডা রূপের পূজা দক্ষিনভারতের কর্নাটকের কিছু মন্দিরে হয়ে থাকে। মহীশূরের রাজবংশের প্রতীক চিহ্ন রূপে গান্ডাবেরুন্ডা রূপ ব্যাবহৃত হত।  হায়দ্রাবাদের কাছে যাদবগিরি মন্দিরে গান্ডাবেরুন্ডা রূপের পূজা হয়। কর্নাটক রাজ্য সরকারের ও প্রতীকে গান্ডাবেরুন্ডা রূপ রয়েছে। পুরাণে গান্ডাবেরুন্ডা নরসিংহের দ্বারা শরভেশ্বর মহাদেবের পরাজয়ের কথা পাওয়া যায়।
গরুড় পুরাণ
হন্তুং অভ্যাগতং রুদ্রং শরভং নৃকেশরী।
নখৈর্বিদারয়ামাস হিরণ্যকশিপু যথা।।
নিকৃন্তবাহুরূশিরা বজ্রকল্পমুখৈর্নখৈ।
মেরুপৃষ্ঠে নৃসিংহেন সহস্রার্ক সম চ তৎ।।

পদ্মপুরাণে
তৌ যুধ্যমানৌ তু চির বেগেন বলবত্তরৌ।
বিনাশ জগ্মতুদেবৌ নৃসিংহশরভাবিতি।।
তত ক্রুদ্ধো মহাকায়ো নৃসিংহেহভিমুখস্বন।
সহস্রশিরস নেত্রৈস্তস্য গাত্র ন্যকর্তয়ৎ।।
পতিত ভীমমত্যুগ্র বিবুধা দ্রষ্টুমাগতা।
ঋষয়ো দেবগন্ধর্বা যত্র শেতে হরো হত।।
ত দৃষ্ট্বা পরম জগ্মুর্বিস্ময় তে দিবৌকস।
প্রশশসুস্তদা কর্ম নরসিংহস্য চাদ্ভুতম্।।

নৃসিংহপুরাণ
বন্দে...  শরভমদহরং গন্ডবেরুন্ডসিংহম।
শ্রীনৃসিংহ মহদ্রুপ কালকোটিদুরাসদ।। ৮৪

পদ্মপুরাণে শ্রীনৃসিংহদেব দ্বারা বীরভদ্র এর পরাজিত হওয়ার উল্লেখ
ভৈরবেশ হরার্তিঘ্ন বালরূপ নমোস্তুতে।
শ্রীনৃসিংহায় রূপায় বালায় বালরূপিণে।।
ভালে দধার যো দেবীং নৃসিংহো বীরভদ্রজিৎ।। ৮৮

আচার্য্য রামানুজের শিষ্য কুরেশ স্বামী তার রচিত অতিমানুষ স্তবে ১২শ শ্লোকে  শিবের শরভ রূপ ধারণ ও নরসিংহদেবের গান্ডাবেরুন্ডা রূপ ধারনলীলার তাৎপর্য্য ব্যাখ্যা করেছেন।
ক্রীড়াবিধেঃ পরিকরস্তব যা তু মায়া
সা মোহিনা ন কতমস্য তু হন্ত! জন্তোঃ।
হে মর্ত্যসিংহবপুষস্তব তেজসোংহশে
শম্ভুর্ভবন্ হি শরভঃ শলভো বভূব।। ১২
অনুবাদ:- হে ভগবান আপনার মায়া শক্তি আপনার বিবিধ লীলা বিলাসের সহায়ক। যা ত্রিগুনাত্মিকা। সকলকে মোহিত করতে সক্ষম। যেমন বিষ্ণু মায়া স্বয়ং সর্বজ্ঞ শিবকে ও মোহিত করেছিল। ও শিব নরসিংহ কে বধ করতে শরভ রূপ ধারণ করেছিল। কিন্তু সেই যুদ্ধে ভগবান নরসিংহদেবের অতি উগ্র জ্বলন্ত রূপের সম্মুখে শলভ পতঙ্গ যেমন জলন্ত অগ্নিতে দগ্ধ হয়ে মরে তেমন শরভ ও দগ্ধ হয়েছিল।
গীতাতে বলা হয়েছে দৈবীহ্যেষা গুণময়ী মম মায়া দূরাত্ময়া। ভগবানের এই দুরতিক্রম্য মায়া শক্তি স্বয়ং শিবকেও এভাবে মোহিত করেছিল। তিনি মনে করেছিলেন নরসিংহের থেকে ও উগ্র রূপ ধারণ করলে তিনি নরসিংহ কে শান্ত করতে পারবেন। সিংহ কে যেমন শরভ নামক প্রাণী হত্যা করতে পারে তেমন নরসিংহ কে ও শরভেশ্বর রূপ ধারণ করে প্রতিহত করা সম্ভব। শ্রীমদভাগবতম এ প্রথম শ্লোকে বলা হয়েছে "মূহ্যন্তি যৎ সূরয়ঃ" অর্থাৎ ভগবানের  লীলা দিব্যজ্ঞান সম্পন্ন দেবতা দেরকেও মোহিত করতে পারে।

Next page>>>