Basantika parinayam 3

Basantika parinayam 3

Nrisingha dev stories |basantika parinayam
প্রথম দৃশ্য
ততঃ প্রবিশতি বৃদ্ধকঞ্চুকী কাদম্বকঃ।
বৃদ্ধ কঞ্চুকী কাদম্বকের প্রবেশ
কাদম্বকঃ—(সনির্বেদম্) অহো অতিদারুণোহয়ং কালবিপরিণামঃ।
প্রাগীশ্বর প্রণমনাবসরোপলম্ভ
সংভূতরাজক নিরোধনসাধনীয়া।
সা বেত্রযষ্টিরপি সংপ্রতি রাজবালৈ
রাক্ষিপ্যতে স্খলিতগত্যপহাসহেতোঃ।। ১
অজস্রং উত্তরোত্তরকার্য পারবশ্যাৎ জরাতুরস্যাপি মে ন কদাপি বিশ্রান্তিঃ।  ইদানীমপি আদিষ্টোস্মি মহারাজ শূরসেনেন।
অয়ে কাদম্বক আরাধন বিশেষ সুপ্রসন্নয়া অস্মৎকুলদেবতয়া বাসন্তিকা বিণীর্ণবরেতি প্রতীয়তে ইতি কিংবদন্তী। তদেনাং তত্বতো জানীহি ইতি।
(কিঞ্চিদন্তরং পরিক্রম্য) আঃ কথং বৎসায়াঃ বাসন্তিকায়াঃ পরিচারিকা মধুরিকেয়ং ইত এব অভিবর্ততে।  এতন্মুখাদেব তৎপ্রবৃত্তিঃ অবগন্তব্যা।
কাদম্বক(ক্লান্তির সহিত) কি আশ্চর্য্য।  সময় ও ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্যই অবশ্য আমার হাতের যে ছড়ি একসময় মন্দিরে দর্শনের জন্য প্রতীক্ষা রত রাজাদের ও নিবৃত্ত করতো। আজ আমি বৃদ্ধ হওয়ায় রাজকন্যাদের অন্তরমহল থেকে বাইরে যাওয়া থেকে নিবৃত্ত করতে গেলে সেই বেত্রযষ্টি তাদের উপহাসের কারন হয়।
একের পর এক কাজে আমি জরাতুর বিশ্রামের সময় ও পাইনা।  তার ওপর রাজা শূরসেন আদেশ করেছেন হে কাদম্বকে! আমি শুনেছি রাজকুমারী বাসন্তিকা আমাদের কুলদেবীর মন্দিরে প্রায়ই যায়।  তার সেবায় তুষ্ট হয়ে দেবী তাকে বর দিয়েছেন তার অভীষ্ট বর লাভ করবে। তুমি তার সত্যতা যাচাই করো।
(কিছুদূর পরিক্রমা করে) আঃ মধুরিকে এদিকেই আসছে। আমাদের রাজকন্যা বাসন্তিকার পরিচারিকা। তার থেকে আমি সঠিক সংবাদ পেতে পারি।
(ততঃ প্রবিশতি মধুরিকা।)
মধুরিকা—(সকৌতুকম্ প্রণম্য,  সপ্রশ্রয়ম্)
আর্য কাদম্বক কুত্র প্রস্থিতোহসি?
মধুরিকা—(কাদম্বক কে প্রণাম করে সকৌতুকে)
হে আর্য্য কাদম্বক, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
কাদম্বকঃ—অয়ি মধুরিকে, বৎসা বাসন্তিকা দেবপ্রসাদেন লব্ধবরা ন বেতি ডোলায়িতচেতসো মহারাজ শূরসেনস্য সংশয়মপনেতুম্।
কাদম্বক—ওহে মধুরিকে, আমি এখন রাজা শূরসেনের সংশয় নাশ করতে যাচ্ছি যে সত্যই রাজকুমারী বাসন্তিকা দেবীর উপাসনা করে তার হৃদয়ের অভিলাষ পূর্ণ করতে পেরেছে কিনা?
মধুরিকা—তত কিং ন বিজ্ঞাতম্? বাসন্তিকা ন কেবলং লব্ধবরা। ইদানীং বলবৎ খলু মন্মথোন্মাদং অনুভবতি চ।
(পুনঃ সবিমর্শম্)
অহো ভর্তুঃ একেতি পুত্রজনাদপি পুত্র্যাঃ উপরি মহতী চিন্তা।
মধুরিকা—ওঃ তবে আপনি এখনো জানেন না। বাসন্তিকা কেবল তার অভিলাষ পূরনের বর ই লাভ করেনি, প্রেমে উন্মত্ত হয়ে রয়েছেন। (পুনরায় বিমর্ষ হয়ে়) হ্যাঁ তিনি তো রাজার একমাত্র কন্যা তাই রাজার পুত্র অপেক্ষা ও তাকে নিয়ে অধিক চিন্তা।
কাদম্বকঃ—অথ কিং? অথবা ন বিরমতি কদাপি চিন্তা দুহিত্রুমতাম্।
তথাহি তুল্যস্তুতেষু দুহিতৃষ্বপি লালনাদিঃ
তাসাং পুনস্তদনুরূপ বরাপ্তিচিন্তা।
সংপ্রেষণং তদনু তৎসদনায় পশ্চাৎ
বার্তাগমে ব্যসনমেব পরং বিশেষঃ।। ২
তর্হি তাদৃশোহপি সময়ে বৎসায়াঃ বাসন্তিকায়াঃ পরিচর্যামন্তরেণ কথং প্রস্তিথাসি?
কাদম্বক— নয়তো আর কি? যার কন্যা আছে, তার মন কখনো বিশ্রাম নিতে পারে না।
যদিও সন্তান কে পালনের সময় পুত্র ও কন্যা উভয়ের প্রতি সমান স্নেহ থাকে। কিন্তু কন্যার জন্য উপযুক্ত পাত্র অনুসন্ধানে দুশ্চিন্তা তো থাকেই। তারপর কন্যাকে শ্বশুরালয়ে পাঠানোর জন্য তার থেকে বিচ্ছেদের দুঃখ। ও শ্বশুরালয়ে নতুন আত্মীয়দের মাঝে প্রশংসিত হবে কিনা সেই দুশ্চিন্তা। যা হোক, তা তুমি এখন বাসন্তিকা কে ছেড়ে কোথায় যাচ্ছ বললে যে সে বিরহ জ্বালায় দগ্ধ হচ্ছে।
মধুরিকা—আর্য কাদম্বক, তত্রভবতীং তমালবন বাসিনীং বিজ্ঞানবতীং আনেতুম্।
মধুরিকা—আর্য কাদম্বক, আমি তমালবনে যাচ্ছি সেখানে তপস্বিনী বিজ্ঞানবতী থাকেন, তাকে আনতে।
কাদম্বকঃ—কথ্যতাং অয়ে তথাকরণে কারণম্।
কাদম্বক—তাকে আনতে যাচ্ছ কি কারনে?
মধুরিকা—সো অহোবিলেশো বাসন্তিকাং বরিষ্যতি বা ন বেতি কালত্রিতয়বেদিনীং তাং শকুনং পষ্টুম্।
মধুরিকা—তিনি ত্রিকালজ্ঞ। তার থেকে জানতে যাচ্ছি সত্যই অহোবিলেশ্বর বাসন্তিকার পাণিগ্রহন করবেন কিনা?
কাদম্বকঃ—(স্বগতম্) বিদিতমেব বেদিতব্যম্। (প্রকাশম্) অয়ে মধুরিকে, স্বস্ব নিয়োগমেব অনুতিষ্টাবঃ।।
কাদম্বক—(স্বগত) বুঝেছি আমায় কি করতে হবে।
(প্রকাশ্যে) মধুরিকে, চলো আমরা যে যার কার্য্যে যাই।
।।ইতি নিষ্ক্রান্তৌ।।
মিশ্র বিষ্কম্ভঃ।।
।। দ্বিতীয় দৃশ্য।।
ততঃ প্রবিশতি সহ সখীভ্যাং কাময়মানাবস্থা বাসন্তিকা।
বাসন্তিকা—অলং অলং সখ্যৌ যুবাভ্যাং বিহিতৈঃ প্রত্যুত কামানল সন্দীপনৈঃ শিশিরোপচারৈঃ যতো মদনহার কীলিতায়াঃ মম কর্পূর অনুলেপনমপি ব্রণিতস্য উপরি ক্ষারবিন্যাসঃ। বিরহানল বিহ্বলায়াঃ তুষারজলসেচনমপি আমজ্বরিতস্যন সলিলাবগাহনম্।  জাগর বিশেষাতিশোণবিলোচনায়াঃ লীলাকমলসমর্পণমপি দৃষ্তিরোগাতুরস্য দীপসংদর্শনম্।
মুহুঃ ইতিরয়ন্তী মুর্চ্ছা অভিনয়তি। সখ্যৌ সব্যবথং পরস্পরং মুখমবলোকয়তঃ।
বাসন্তিকা— সখী তোমরা আমার যথেষ্ট পরিচর্যা করছো। বিরহানল শান্ত করতে তোমরা আমার অঙ্গে যে অনুলেপনাদি প্রয়োগ করছো তা কেবল অগ্নিতে শিশির প্রয়োগের মতো মনে হচ্ছে।  আমার বিবর্ণ অঙ্গে কর্পূর চন্দনাদি অনুলেপন সত্ত্বেও তা ক্ষার প্রয়োগে দগ্ধ হওয়ার মতো মনে হচ্ছে। তোমরা যে শীতলজল সিঞ্চন করছো তা কেবল জ্বরগ্রস্থ ব্যাক্তি র শীতলজলে স্নান করার মতো সাময়িক তাপ উপশম করছে। নিদ্রাহীনতায় ছটফট করা আমার চক্ষুদ্বয়ে পদ্মপল্লব আলেপন চক্ষুরোগ গ্রস্থ কে তীব্র আলো দেখানোর মতো কষ্টদায়ক হয়ে উঠেছে। #
এই বলে সে মুর্চ্ছিত হওয়ার মতো পরে গেল। সখীরা পরষ্পর মুখাবলোকন করতে লাগলো।
চতুরিকা—এতস্যাং সকলোহপি শিশিরোপচারো মন্দমেঘে গুরুপদেশ ইব বিফলো ভবতি।  তস্মাৎ অস্মাভিঃ কিং কর্তব্যং?
চতুরিকা— আমাদের এই সকল শীতল পরিচর্য্যা তার বিরহতাপ প্রশমনে ব্যার্থ হচ্ছে। যেমন মন্দবুদ্ধি ছাত্রকে গুরুর উপদেশ যেমন ব্যার্থ হয়।  এখন কি করা যায়।
ভ্রমরিকা—(সচিন্তাতঙ্কম্)
কুতো বা শবরনন্দিনী কুতো বা সকলসুরেন্দ্রচূড়ামণিঃ সোহহবিলেশঃ? কথং অস্যাঃ অপেক্ষা সুখোদর্কা ভবিষ্যতি?
ভ্রমরিকা—(চিন্তা ও আতঙ্কে) কোথায় এই শবরনন্দিনী কোথায় ভগবান অহোবিলেশ্বর, যিনি সকল দেবগনের চূড়ামণি রূপ। এই কন্যার অভিলাষ কি কখনো পূর্ণ হবে?
চতুরিকা—অলং অলং তব বিচারেণ ন শ্রুতম্ বা বল্লীকুমারয়োঃ সংযোজনম্। তথৈব তস্যাপি অস্যাঃ সংযোজনং ভবতু।
অথবা,
অবলাভিরপ্যস্যাঃ অঙ্গং অভ্যর্থনীয়লাবণ্যম্।
দৃষ্ট্বা কো নু পুরুষো দিব্যেষু নরেষু বা ন রঞ্জতে।। ৩
চতুরিকা— ব্যাস যথেষ্ট হয়েছে তোমার জল্পনা। কেন তুমি কি বল্লী ও কুমারের পরিণয়ের কাহিনী শোনোনি। তেমনই এই কন্যার সাথে তার প্রিয়তমের বিবাহ হবে।
আর এই কন্যার রূপ অন্যের কি কথা স্ত্রীলোকেদের ও প্রসংশিত। এমন কোন পুরুষ আছেন মানব বা দেবতা যে তার রূপে আকৃষ্ট হবেনা।
ভ্রমরিকা—এষা তস্য লোচনপথং কথং প্রাপণীয়া।
ভ্রমরিকা—
চতুরিকা—তদা খলু অস্মাসু দেবতা সমারাধনং কৃত্বা নির্গতাসু মৃগয়াবিহারপরবশঃ কিরাতবেষো যস্সমাগতঃ তেনৈব অহোবিলেশেন ভবিতব্যম্।
যদেনাম্ আলোকয়ন্ চক্ষুরাগমনুভবন্ স্থিতঃ।।
চতুরিকা—তোমার মনে আছে, যখন আমরা দেবীর মন্দির থেকে পূজা করে আমরা বেরোচ্ছিলাম তখন শিকারীর বেশে এক ব্যাক্তি ছিলেন। যিনি বাসন্তিকা কে দেখে আনন্দিত উৎফুল্ল হয়েছিলেন। যাকে দেখে সাক্ষাৎ অহোবিলেশ মনে হচ্ছিল।
ভ্রমরিকা—(সব্যাথম্) কথং করণীয়ঃ প্রস্তুতস্য পরিহারঃ। এষা তুষার  সরিলা সঙ্গ সমুদ্রদ্ভবৎসন্তাপা। যথা কমলিনী মুখাম্বুজলোল বিলোচন মধুব্রতা ভবতি।। ৪
চতুরিকাং বিলোক্য সবিস্ময়কাতর্যম্
এষা খলু কেনাপি প্রভুণা কথিতেব প্রতিবচনং বিধাতুমীহতে।
আলিঙ্গিতুমিবেমং শূন্যে গগনে করৌ প্রসারয়তি।। ৫
(নির্বর্ণ্য পুনরস্সানন্দম্)
এষা বাসন্তিকা অস্মাকং পুণ্যফলোদয়েন মন্মথোন্মাদাৎ ইষৎ বিমুক্তেব প্রতিভাতি।
ভ্রমরিকা—(সৌৎসুক্যম্) সখি বাসন্তিকে আবয়োর্বচনং অঙ্গীকৃত্য জোশং ভাবং অবলম্বসে।
ভ্রমরিকা—(দুঃখিত হয়ে) কি করে আমরা তাকে এরূপ কাতর হয়ে পড়া থেকে আটকাতে পারি। তার চঞ্চল নেত্র দুটি দেখ যেন পদ্মে জল পড়ায় ভ্রমর ইতস্ততঃ উড়ে বেড়াচ্ছে।
তারপর আশ্চর্য্য হয়ে চতুরিকা কে ডেকে বললো। দেখো দেখো। যেন প্রভু অহোবিলেশ্বর এখনই তার সাথে বার্তালাপ করছিলেন। বাসন্তিকা মৃদুস্বরে কিছু উত্তর করছে। তার উৎসুক বাহু দ্বয় কাকে জড়িয়ে ধরার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে। (আনন্দের সাথে পুনর্বার তাকিয়ে) মনেহচ্ছে আমাদের বহুপুণ্যফলোদয়ে বাসন্তিকা কামোন্মত্ততা থেকে কিছুটা সুস্থ হয়েছেন।
ভ্রমরিকা—(পুনরায় সৌৎসুক্যে) সখী বাসন্তিকে তুমি আমাদের কথা শুনে স্থিরতা অবলম্বন করো। মনকে দৃঢ় করো।
বাসন্তিকা—(সবিতর্কম)
অস্তি কিং সরব্যোঃ হৃদয়নির্বিশেষ্যোঃ যুবয়োরপি নিগূহনীয়ম্।
(পুনঃ স্মরণং অভিনীয় সরোমাঞ্চম্।)
সকল হৃদয়ান্তর্যামী স্বামী মম ভাবং অবগত্য স্ব স্বরূপং দর্শিতবান্ আসীৎ।
ইত্যানন্দবাষ্পকণিকাং বিকিরতি।
বাসন্তিকা—(বিবেচনা করে) তোমাদের মতো আমার হৃদয় বুঝতে পারা সখীদের থেকে আর কি গোপন করবো।
(কিছু স্মরণ করে আনন্দে রোমাঞ্চিত হয়ে)
সকলের হৃদয়ে অন্ত্রর্যামী রূপে বাস কারী ভগবান আমার ভাব বুঝে আমায় সাক্ষাৎ দর্শন দিয়েছেন। এই বলে তার নেত্র দিয়ে আনন্দাশ্রু ধারা বইতে লাগলো।
চতুরিকা—(সবহুমানম্)
অহো তব ভাগধেয়ং প্রাকৃতজনদুর্লভ দর্শনঃ সোহহোবিলেশ্বরঃ তব দৃষ্টিগোচর আসীৎ।
(সাভ্যর্থনম্)
বহুরূপ পরিগ্রহ শৈলূষকঃ কীদৃশবেষস্ত্বয়া দৃষ্টঃ?
চতুরিকা—গর্ব অনুভব করে ও সন্তোষ প্রাপ্ত হয়ে, ওঃ তুমি কি সৌভাগ্য বান। তুমি সাধারন জনের পক্ষে যাকে দর্শন করা দুর্লভ সেই অহোবিলেশের সাক্ষাৎ দর্শন লাভ করেছ।
(গভীর শ্রদ্ধার সাথে)তিনি নানারূপ, আকৃতিতে বিরাজমান। তাকে তুমি কোন রূপে দর্শন করেছ।
বাসন্তিকা—(সানুভববহুমানং সংস্কৃতমাশ্রিত্য)
শ্রীবৎসাঙ্কঃ শ্রিতমকরিকা কুণ্ডলো গণ্ডমূলে
ক্ষৌমং হৈমং দধদতিতরাং কৌস্তুভশ্রী পিশঙ্গম্।
দোর্ভির্দিব্যাঙ্গদ পরিবৃতৈঃ ভাসমানৈশ্চতুর্ভিঃ
দৃষ্টো দিষ্টয়া কুবলয়দলশ্যামলোহহোবিলেশঃ।।
(ইতি ভক্তয়া পুলকোদ্গমং অভিনয়তি।)
বাসন্তিকা—(তার স্বপ্নদর্শন অনুভব করে আনন্দে সংস্কৃতে গান করে বললেন) অহোবিলেশ, যিনি কুবলয় পুষ্প দল সদৃশ কৃষ্ণ বর্ণ। যার বক্ষস্থলে শ্রীবৎস চিহ্ন। কর্ণে মকর কুন্ডল। পীতবাস পরিধানে।  তার চার বাহুতে দিব্য রত্নাঙ্গদ সমূহ ধারণ করে আছেন। তার বক্ষদেশ কৌস্তভ মণি ও শ্রীদেবী আলিঙ্গিত।
(ভক্তি তে তার সর্বাঙ্গে পুলকোদ্গম হতে লাগলো)
চতুরিকা—সখি বাসন্তিকে, তব সংবননকৃতে ইদৃশমপি দিব্যরূপং বিসৃজ্য তব সমুদ্ভঘতি বহুমানকৃতে কিরাতভূমিকাং অনুগৃহীতবান্ ভবিতা। অহো দেবতাপ্রসাদেন ত্বম্ লব্ধবল্লভা জাতা।
চতুরিকা—সখী বাসন্তিকে, ভগবান তোমার কিরাতবংশে জন্মের কারনে কিরাতজাতি র এই ভূমি কে সম্মান করে অহোবিলমে প্রকট হয়েছেন। তিনি দিব্যরূপ পরিত্যাগ করে তোমার কারনে মাধুর্য্যময় রূপ ধারণ করেছেন যা তুমি বর্ননা করলে। দেবতা প্রসাদে তুমি অবশ্য তোমার প্রাণবল্লভকে প্রাপ্ত হবে।
বাসন্তিকা—(সনির্বেদম্) তস্যাপি স্বপ্নদর্শনমাত্রেণ প্রতিগ্রহাদরঃ কিংশুক কুসুমোদ্গমেনেব ফলাপেক্ষা।
বাসন্তিকা—তিনি কেবলমাত্র আমার স্বপ্নে দর্শন দান করেছেন বলে মনে করা উচিত নয় তিনি আমাকে গ্রহণ করবেন। প্রস্ফুটিত কিংশুক পুষ্প কে দেখে যে ফলের আশা করে সে বঞ্চিতই হয়।
চতুরিকা—অবিশ্বাস শীলে ইদানীং তব সংশয় পরিচ্ছেদয়িত্রী নিমিত্তবেদিনী ভগবত্যাগমিষ্যতি।
চতুরিকা— হে অবিশ্বাসকারিনী যদি আমাদের কথায় তোমার সংশয় থাকে তবে আমাদের এখানে আসা ভগবতী কে জিজ্ঞাসা করো যিনি ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা। তিনিই তোমার সংশয় ছেদন করবেন।
ততঃ প্রবিশতি বিজ্ঞানবতা
বিজ্ঞানবতী—(পুরো বিলোক্য)
কিমপি কিমপি মন্দং মন্ত্রয়ন্তী সখীভ্যাং
বিধুতনিখিলভূষা বিভ্রতী হারমেকম্।
লঘুলয়সবিতানে নিষ্কুটাগারমধ্যে
কথমিয়মপরেব প্রেক্ষ্যতে রাজকন্যা।। ৭
(ইত্যুপসর্পতি)
বিজ্ঞানবতী—(সামনে বাসন্তিকার দিকে তাকিয়ে।)
সত্যই কি ইনি আমাদের রাজকুমারী বাসন্তিকা। বা অন্য কেউ। অস্ফুট স্বরে তিনি সখীদের কি বলছেন। তার সর্বাঙ্গে একটি ও অলঙ্কার নেই। এমনকি তার কন্ঠে একটি হারও নেই।
(তার দিকে এগোলেন)
(বাসন্তিকা সহ সখীভ্যাং অভ্যুদ্গম্য প্রণমতি)
বাসন্তিকা সখীদের সাথে তার দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে এলেন। ও প্রণাম করলেন।
বিজ্ঞানবতী—(সপ্রত্যয়ম্) বৎসে বাসন্তিকে, অবিলম্বিতং উপলব্ধ বল্লভা ভূয়াঃ।
বিজ্ঞানবতী—(দৃঢ় প্রত্যয়ের সহিত) বৎস বাসন্তিকে! অবিলম্বে তোমার বল্লভ কে প্রাপ্ত হও। ও তোমার অভিলাষ পূর্ণ হোক।
সখ্যৌ—(সপ্রত্যয়ম্)
ভগবত্যাঃ তত্রভবত্যাঃ আশীর্বচন প্রভাবেণ।
সখীগণ—(দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে) অবশ্যই দেবী ভগবতীর আশীর্বাদ প্রভাবে তাই হবে।
(বাসন্তিকা সাঙ্গীকারব্রীড়মধোমুখী তিষ্ঠতি)
(বাসন্তিকা সলজ্জ ভাবে মাথা নিচু করে তার পাদস্পর্শ করে প্রণাম করলেন।)
বিজ্ঞানবতী—(বাসন্তিকা নির্বর্ণ্য)
অলসমসৃণ মক্ষ্ণো রঞ্চলং চঞ্চলাক্ষ্যাঃ
স্ফটিক মণি শলাকা পাণ্ডরো গণ্ডভাগঃ।
বপুরতিকৃশমেতৎ কিন্তু শোভাবশেষং
কথয়তি পুনরস্যাঃ গাঢ়চিন্তানুবন্ধম্।। ৮
বিজ্ঞানবতী—(বাসন্তিকার দিকে ভালো করে দেখে নিয়ে) কন্যা বাসন্তিকার চঞ্চল চক্ষুদ্বয় অলস ও ম্লান লাগছে। তার কর্ণেশোভিত স্ফটিক মণির মতো গন্ডস্থল বিবর্ণ লাগছে। তার অঙ্গ কৃশ হয়ে গেছে। তারমধ্যেও তার মুখমন্ডল শোভা পাচ্ছে। মনে হয় তিনি গভীর চিন্তায় নিমগ্ন রয়েছেন।
সখ্যৌ—(অপবার্য)
আবামপি অবিজ্ঞাতত্বে ইব ভগবতীং পৃচ্ছাবঃ।
(প্রকাশম)
ভগবতি এতস্যাঃ আতঙ্কনিদানং নির্ধারয়।
ইতি শিষ্যায়াঃ হস্তাৎ বরাটিকা ভস্ত্রিকাং আদায় ভগবতীহস্তে সাভ্যর্থনং সমর্পয়তঃ।
সখীগন—(নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল) আমরা তো কিছুই জানিনা এখন কি করা উচিত। ভগবতী বিজ্ঞানবতী কেই জিজ্ঞাসা করিনা কেন।
(প্রকাশ্যে) ভগবতী এই কন্যার কারনে আমাদের আতঙ্ক দুর করতে কিছু ব্যাবস্থা করুন।
(এই বলে তারা ভগবতীর শিষ্য গনের হাত থেকে ভস্ত্রিকা (কড়ি) নিয়ে তার হস্তে অর্পন করলেন।)
বিজ্ঞানবতী—(গৃহীত্বা ধ্যানেন চক্ষুষী নিমীল্য)
ভগবতী দেবি নমস্তে ভক্তজনেহস্মিন্ প্রসাদসময়োহয়ম্।
যদ্যৎ চিন্তিতমনয়া তৎসর্ব মনসি সন্নিধাপয় মে।।
ইতি মনসি ভগবতী ধ্যাত্বা ফলকে বরাটিকাঃ পঙ্ক্তিশো নিক্ষিপতি।
বিজ্ঞানবতী—(কড়ি গুলি হাতে নিয়ে ধ্যান মগ্ন হয়ে দেবী ভগবতী কে স্মরণ করলেন)
হে দেবী ভগবতী, তোমায় প্রণাম করি। তোমার ভক্তজনকে কৃপাপ্রদান করো। এই কন্যার মনে কি চিন্তা চলছে আমার মনকে সেখানে সন্নিহিত করো।
(এভাবে ভগবতীদেবী কে ধ্যান করে সামনে ফলকে কড়ি চাললেন)
বাসন্তিকা—(স্বগতম)
যদি কথিতো অনয়া পূর্বানুভূতো মম বৃত্তান্তঃ তথা অবশ্যং ভবিষ্যতি বিশ্বসনীয়া খল্বেষা।
বাসন্তিকা—(স্বগত) এই দেবী আমার পূর্বানুভূতি যখন যথাযথ বর্ণনা করেছেন। তবে ইনি যা বলবেন তা অবশ্য বিশ্বাসযোগ্যই হবে।
বিজ্ঞানবতী—(স্বগতম্)
অহো ভগবতীপ্রসাদেন সর্বমননুভূতমপি অনুভূতপূর্বমিব পশ্যামি।
(পুনস্সান্তর্হাসম্) অহো অহোবিলেশিতুঃ কপটনাটিকা।
অস্যাঃ সঙ্গীতামৃতবর্ষুকদেবিপ্রসাদং ইব দেবঃ।
আলিখ্য নিজপরিগ্রহবহুমানাং পত্রিকামদান্নিভৃতম্।। ১০
ইদং নিগূহনীয়ং দেবরহস্যম্। ভবত্বেবং তাবৎ।
(প্রকাশম্) বৎসা বাসন্তিকা কন্যাজনেষু ধন্যা নাম যতঃ "আকর্ণ্য সা ভগবতী মৃদুগীতমস্যাঃ"
বিজ্ঞানবতী(স্বগত)— দেবী ভগবতির কৃপায় আমি অন্য সকলের অনুভব নিজে অনুভব করতে পারি।
(পুনরায় হেসে) আহা অহোবিলেশের একি লীলা। যেন দেবী এই বালিকার সঙ্গীতে খুশি হয়েছেন। ও প্রশংসা করে পত্রিকা পাঠিয়েছেন। এই কপট নাট্য রচনা করে স্বয়ং ভগবান অহোবিলেশ নিজ হস্তে পত্র লিখে পাঠিয়েছেন। যা হোক তা প্রকাশ করা উচিত নয়।
(প্রকাশ্যে) বালিকা বাসন্তিকে, তুমি অবশ্যই কন্যা গনের মধ্যে ধন্যা। কারন দেবী ভগবতী তোমার সঙ্গীত শুনে প্রসন্ন হয়েছেন।
চতুরিকা—সখী বাসন্তিকে, সমাশ্বসিহি সমাশ্বসিহি, তব সঙ্গীতপ্রসঙ্গ ইব প্রস্তূয়তে।
চতুরিকা—সখী বাসন্তিকে! ধৈর্য্য ধরো। ধৈর্য্য ধরো। তোমার সঙ্গীত প্রসংশিত হয়েছে।
বিজ্ঞানবতী—"প্রাদাৎ তদা পরমনর্ঘবরং প্রসন্না।
বিজ্ঞানবতী— তিনি প্রসন্না হয়ে পরম অর্ঘ্য তোমায় বর হিসাবে দিয়েছেন।
বাসন্তিকা—(সোদ্বেগম্ স্বগতম্)
ন জানে কং বা বরম্ কথয়িষ্যতি ভগবতী।
বাসন্তিকা—(উদ্বিগ্ন হয়ে স্বগত) আমি বুঝতে পারছিনা দেবী বিজ্ঞানবতী কোন বরের কথা বলছেন?
বিজ্ঞানবতী—সোহয়ম্ নরেষু ন পরঃ সুরপুঙ্গবেষু
বিজ্ঞানবতী— সেই বর হলো যিনি মানব ও দেব গনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
ভ্রমরিকা—সখী বাসন্তিকে, তব চিন্তালতায়াঃ আসন্ন ইব ফলোদ্গমঃ।
ভ্রমরিকা—সখী বাসন্তিকে, তোমার মনে অভীষ্ট রূপ লতায় ফলোদ্গম হতে চলেছে।
বিজ্ঞানবতী—(সভক্তিপুলকোদ্গমম্) তত্রাপি কিং পরং অহোবিলসার্বভৌমঃ।।১১
বিজ্ঞানবতী—(ভক্তি পুলকে আবিষ্ট হয়ে) তিনি অহোবিলমের অধীশ্বর ভিন্ন অন্য কেউ নন।
বাসন্তিকা—(সলজ্জমধোমুখী তিষ্থতি)
সখ্যৌ— অহো ভগবত্যাঃ মহানুভাবতা। অন্তিকস্থিতমিব সর্বম্যথানুভবং কথয়ত্যেষা। পুনঃ (সপ্রশ্রয়বহুমানম্) ততস্ততঃ।
বাসন্তিকা লজ্জিত হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।
সখীগন—আহা ভগবতী বিজ্ঞানবতী দেবীর কি মহান দৈবী ক্ষমতা তিনি এই ঘটনা এমন ভাবে বর্ননা করলেন যেন তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। (সশ্রদ্ধ ভাবে পুনরায় বললো)  তারপর?
বিজ্ঞানবতী—পুনঃ কদাচিৎ অনয়া স্বপ্নগতেন দেবেন সমং অন্বভূয়ত বিনোদগোষ্ঠী। তদা প্রভৃতি কদনগ্রহগ্রস্তা বৎসা বাসন্তিকা কষ্টাং দশাং অনুভবতি।
হরতি পরমকাণ্ডে নিশ্বসত্যায়তোষ্ণং
কিমপি বদতি শূন্যং কেবলং বীক্ষতে চ।
মুহুরয়তি চ চিন্তাং মোহমভ্যেত্য গাঢ়ং
বহতি বপুষি শোষং হন্ত বাসন্তিকেয়ম্।। ১২
বিজ্ঞানবতী—পুনরায় একবার ভগবান অহোবিলেশ কন্যা বাসন্তিকার স্বপ্নে এসেছিলেন। তার সাথে মিলিত হয়ে বাসন্তিকা মদন দেবের বিনোদ গোষ্ঠী তে প্রবেশ করেন। তারপর থেকেই সে দুষ্টগ্রহগ্রস্থের মতো আচরণ করছে। কখনো কারন ছাড়াই হাসছে। দীর্ঘ উষ্ণ শ্বাস পড়ছে। কখনো শূণ্যে তাকিয়ে রয়েছে। কখনো গভীর চিন্তায় ডুবে রয়েছে। কখনো সংজ্ঞা হারাচ্ছে। অনাহারে তার শরীর শুষ্ক হয়ে গেছে।
সখ্যৌ—(সবিস্রম্ভ বহুমানম্)
যথা ভগবত্যাজ্ঞাপয়তি। ইতঃ পরং অন্যদপি পৃচ্ছাবঃ ইমাং বাসন্তিকাং দেবো বরিষ্যতি বা ন বা।
সখীগন—(তার কথায় বিশ্বাসের সহিত) ভগবতী বিজ্ঞানবতী যেমন বলেছেন, ঠিক তাই ই ঘটেছে। হে দেবী আমরা কি কয়েকটি প্রশ্ন করতে পারি? ভগবান অহোবিলেশ্বর কি বাসন্তিকার পাণি গ্রহন করবেন?
বিজ্ঞানবতী—(পুনঃ বরাটিকাং নিক্ষিপ্য) অসংশয়ং বাসন্তিকামেব বরিষ্যতি দেবঃ। কিঞ্চ স উৎকন্ঠিত ইব প্রতিভাতি।
বিজ্ঞানবতী—পুনরায় কড়ি চালন করে। ভগবান বাসন্তিকাকেই বরণ করবেন সে বিষয়ে সংশয় নেই।  তিনিও তাকে লাভ করতে উৎকন্ঠিত মনে হচ্ছে।
বাসন্তিকা—কস্যাঃ ধন্যায়াঃ উপরি রাগো দেবস্য?
বাসন্তিকা— কে সেই ধন্যা যার ওপর দেব অহোবিলেশ অনুরক্ত।
সখ্যৌ—তন্নিরূপয়তু ভগবতী।
সখীগন—হে ভগবতী আপনি কি আরো কোন প্রমাণ নিরূপন করতে পারেন?
বিজ্ঞানবতী—তথা যদিয়ং তাবৎ আস্তাং শাকুনিকতা। অদূরীকৃত বিপ্রকৃষ্ট দেশকালোদন্তেন দিব্যদৃষ্টিমহিম্না অহোবিলেশবৃত্তান্তং প্রত্যক্ষমিব পশ্যামি।
(ইতি ধ্যাননিমীলিতাক্ষী মুহূর্ত স্থিত্বা)
অগ্রে সরোবর মহোবিল রাজধানী
বেদাদ্রিরেষ তটিনী ভবনাশিনীয়ম্।
আস্থানমণ্ডপমিদং হরি সেবনার্থ
অভ্যাগতাঃ পুনরমী হরিনামধীশাঃ।।
বিজ্ঞানবতী—অবশ্যই। আমি সঙ্কেত পড়ে ধ্যানের দ্বারা সমস্ত দেশ ও কালের ঘটনা আমার মনে দর্শন করছি। আমি দিব্যদৃষ্টিতে ভগবান অহোবিলেশের বৃত্তান্ত প্রত্যক্ষ দর্শনের প্রচেষ্টা করছি। #
(তিনি মুহুর্তকাল চক্ষুবন্ধ করে ধ্যান করতে লাগলেন)
আমি দেখতে পাচ্ছি একটি সরোবরের পাশে বেদাদ্রী পর্বতে অহোবিলম নগরী। পাশ দিয়ে ভবনাশিনী নদী বয়ে যাচ্ছে। সেখানে সভামন্ডপে শ্রীহরি তার সেবায় উপস্থিত দিকপাল গন দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে বসে আছেন।
চতুরিকা—(সবিস্ময়ম্)
অহো ভগবত্যাঃ দিব্যদৃষ্টিপ্রভাবঃ। কুতঃ শবর রাজধানী কুতঃ অহোবিলেশপুরী? তথাপি দূরস্থিতং নরকণ্ঠীরব নগরবৃত্তান্তং সমীপস্থিতমিব কথয়তি।
চতুরিকা—(আশ্চর্য্য হয়ে) ভগবতীর দিব্যদৃষ্টির কি অসীম ক্ষমতা। কোথায় আমাদের শবররাজ্য, ও কোথায় অহোবিলেশপুরী। তবুও তিনি নরকণ্ঠীরব নগরীর বৃত্তান্ত এমন ভাবে বর্ননা করছেন যেন সবকিছু তার সামনেই ঘটছে।
ভ্রমরিকা—ততস্ততঃ।
ভ্রমরিকা—আর কি দেখছেন?
বিজ্ঞানবতী—তত্র তু প্রাগেব দর্শনাদুৎকণ্ঠিতো নৃকণ্ঠীরব ইতি জ্ঞায়তে।
কালত্রয়েহপি বিবুধেষ্বখিলেষু শৌরে
রাস্থানমণ্ডপগতেষ্বভিনন্দনায়।
আরভ্য পঞ্চষদিনান্যপবার্যমাণৌ
বাহ্যাঙ্কণে নিবসতঃ পবমান চন্দ্রৌ।।
বিজ্ঞানবতী— সেখানে ভগবান নৃকণ্ঠীরব কে পূর্বে বাসন্তিকাকে দর্শন করায় তার জন্য উৎকন্ঠিত হয়ে রয়েছেন। শৌরীর সভাগৃহে তার দর্শনে উপস্থিত  দেবগন তিনপ্রহর অপেক্ষা করে রয়েছেন। চন্দ্রদেব ও পবনদেব তো পাঁচ ছয় দিন ধরে অপেক্ষারত।
বাসন্তিকা—(সরোষমিব) সর্বথা বিরহিপথ পাতকিনোঃ অনয়োঃ তিরস্কার এব প্রতীকারঃ।
আদিশতি কিং ন দেবঃ সুধাংশুজালং সুধাকরং পাতুম্। নিশ্শেষমপি সমীরং আহর্তু শয়নভূত পবনাশম্।। ২৫
বাসন্তিকা(ক্রোধভরে) আঃ যেসব লোক বিরহীজন কে বিরক্ত করে পীড়ন করে, এই রূপ তিরস্কারই তাদের যোগ্য।
ভগবান কেন তার শয্যারূপে সেবাকারী আদিশেষ কে আদেশ করছেন না পবনকে শোষন করে নিতে ও চন্দ্রকে
চতুরিকা—সখি বাসন্তিকে কস্মাৎ এতয়োঃ উপরি রন্ধ্রাবেশিত্বম্?
চতুরিকা—সখী, বাসন্তিকে তুমি কেবল এইদুইজনের উপরেই ক্রুদ্ধ কেন? (চন্দ্রের স্নিগ্ধ কিরণ ও মলয় পবন বিরহী হৃদয়কে দগ্ধ করে দিয়ে যায়)
বাসন্তিকা—ভগবতি ততস্ততঃ।
বাসন্তিকা—হে ভগবতী তারপর কি দেখছেন বলুন।
বিজ্ঞানবতী—(সপ্রশ্রয়মঞ্জলিং বদ্ধ্বা) অহো অপরিমেয়ং অস্মাকং ভাগধেয়ম্।
স্বামী জগৎত্রয়গুরুঃ সুরসার্বভৌমৌঃ
আসেবিতোহয়মভিমতো ধৃত তালবৃন্দৈঃ।
সংদৃশ্যতে সরসচন্দন লেপ শীতো
ভদ্রাসনোপরি বসন্ ভগবান্ নৃসিংহঃ।।
বিজ্ঞানবতী—(গভীর শ্রদ্ধায় অঞ্জলীবদ্ধ করে,) আহা আমার অপরিসীম সৌভাগ্য যে ভগবান নৃসিংহদেব যিনি ত্রিজগতের প্রভূ তিনি দেবগন দ্বারা চামর সেবিত হয়ে সিংহাসনে বসে আছেন। তার বক্ষদেশ চন্দন লেপন দ্বারা শীতল।
চতুরিকা—অবশ্যং দেবস্য পরিগ্রহেণ সুরাসুরপূজনীয়া খলু ইদৃশং বৈভবং অনুভবিষ্যতি প্রিয়সখী।
চতুরিকা—আমাদের প্রিয় সখী বাসন্তিকাও যখন দেব এর পাণিগ্রহন করবে তখন সেও সুরাসুরপূজনীয়া হওয়ায় এই রূপ সেবা বৈভব লাভ করবে।
বাসন্তিকা—চতুরিকে অলম অলম পরিহাসকোসলেণ।
বাসন্তিকা— চতুরিকা তোমার পরিহাস কৌশল যথেষ্ট হয়েছে।
বিজ্ঞানবতী—সকলজনসংসারতারকস্যাপি ভগবতো দুর্নির্বারো বিরহাবেষঃ।
কৃশং গাত্রং নেত্রং মুকুলদতিমাত্রং বিলপিতম্
মুখম্লানং যানং স্খলদনবধানঞ্চ হৃদয়ম্।
বহুশ্বাসা নাসা ধরদলমনাসাধিত রসং
পরং শৌরের্দূরে ধৃতিরহহ মারেষু মহিমা।।
বিজ্ঞানবতী—যদিও ভগবান সকল জীবের সংসার সমুদ্র পার করান। কিন্তু তিনিও প্রিয় বিচ্ছেদ বিরহ দুঃখ পাচ্ছেন।
আহা! কামদেবের শরের কি মহিমা, ভগবান শৌরী র কলেবর কৃশ, শীর্ণ হয়ে গেছে। পুষ্পমুকুল সদৃশ চক্ষুদ্বয় বিষণ্ণ লাগছে। মুখমন্ডল ম্লান হয়ে গেছে। চলতে গিয়ে পদস্খলন হচ্ছে। হৃদগতি চঞ্চল হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ গভীর শ্বাস পড়ছে। অধরদ্বয় শুষ্ক হয়েগেছে ও ধীরতা ভাব যেন উড়ে গেছে।
বাসন্তিকা—ইদৃশোহপি সময়ে দেবং অনারাধ্য কা নাম আত্মানং বঞ্চয়তি।
বাসন্তিকা—এই সময়ে দেব কে প্রত্যাখ্যান করে তার কাছে না থেকে তার সেবা না করে কে সেই কন্যা যে নিজে কে বঞ্চনা করছে?
ভ্রমরিকা—কা নাম অন্যা ত্বম্ এব।
ভ্রমরিকা—তুমি ছাড়া সে আর কেই বা হতে পারে?
বাসন্তিকা—এষো ন বিনোদ সময়ঃ।
বাসন্তিকা—এখন হাস্য পরিহাস করার সময় নয়।
ভ্রমরিকা—অবিশ্বাস শীলে ভগবতীং পুনরপি পৃচ্ছামঃ।
ভ্রমরিকা—তোমার যদি আমার কথায় বিশ্বাস না হয় তো ভগবতী বিজ্ঞানবতী কেই জিজ্ঞাসা করো না কেন?
বিজ্ঞানবতী—ইদমপি প্রতিভাসতে বনদেবতাং আরাধয়ন্তীং ভবতীং বিলোকিতবান্ দেবঃ। তদাপ্রভৃতি ইদৃশীং দশাং অনুভবতি।
বিজ্ঞানবতী—আমার বোধ হচ্ছে, দেব অহোবিলেশ তোমায় বনদেবতার উপাসনার সময় দর্শন করেছেন ও তারপর থেকেই এই বিচ্ছেদপীড়ায় পীড়িত হচ্ছেন।
বাসন্তিকা—(স্বগতম্) কুতো মে তাদৃশস্তপো মহিমা?
বাসন্তিকা—(স্বগত) আমার মধ্যে কি এমন তপস্যা আছে?(যে ভগবান অহোবিলেশ আমার বিচ্ছেদ ব্যাথায় পীড়িত)
সখ্যৌ—(পুনস্সানুস্মরণম্)
সখি বাসন্তিকে পুরা খলু দেবতা সমারাধনক্ষণে মহান্ কলকল শ্রুত আসীৎ।
সখীগন(কিছু চিন্তা করে) তোমার মনে আছে সখী আমরা যখন মন্দির থেকে পূজা করে বেরোচ্ছিলাম তখন এক প্রচন্ড গর্জন ধ্বনি শুনেছিলাম।