Basantika parinayam 4

Basantika parinayam 4

Nrisingha dev stories| Basantika parinayam
বাসন্তিকা—(সাভিজ্ঞম্) আং সখ্যৌ আম্।
বাসন্তিকা—(স্মরণ করে) হ্যাঁ সখী অবশ্যই মনে আছে।
সখ্যৌ—তদা খলু কোহপি রাজা মৃগয়া বিহারার্থ আগতঃ ইতি আশঙ্ক্য অস্মাভিঃ পলায়িতম্। তেনৈব অনেন ভবিতব্যমিতি তদৈব আবাভ্যাম্ বিনির্ণীতম্।
সখীগন—আমরা তখন কোনো রাজা জঙ্গলে শিকারে এসেছে এই আশঙ্কা করে ভীত হয়ে পলায়ন করেছিলাম। আমাদের তখন সন্দেহ হয়েছিল এই রাজা আর কেউ নয়, স্বয়ং অহোবিলেশ ই।
বিজ্ঞানবতী—অস্য তাবৎ ইদানীং ত্বদুপাগমন উপায়চিন্তনমেব ব্যাহারঃ (ইতি যোগাসনাৎঅবতীর্য) ভবতু এবং তাবৎ। নালীকনয়নস্যেব নর্মবিস্রম্ভসাক্ষিণী। পদ্মালয়য়া ভবতী ভবিত্রী হৃদয়ঙ্গমা।
বিজ্ঞানবতী— এখন তিনি সবসময় তোমায় লাভ করার উপায় চিন্তনে মগ্ন হয়ে রয়েছেন।
(এই বলে ভগবতী বিজ্ঞানবতী ধ্যানভঙ্গ করলেন ও বললেন) হে কন্যা কমললোচন ভগবানের প্রেম অর্জনে কে অন্য আর কে সক্ষম? তুমি তার সেই হৃদয় অবশ্য লাভ করবে যেখানে পদ্মা(লক্ষ্মীদেবী) বাস করেন।
সখ্যৌ—তথা ভবতু দেব্যাঃ অনুগ্রহ মাহাত্ম্যেন।
সখীগন— দেবীর কৃপায় যেন তাই হয়।
বিজ্ঞানবতী—(প্রতীচীমবলোক্য) অহো! শকুনাবলোকন পারবশ্যেন ন বিজ্ঞায়তে মহান্ কালো অতীতঃ।
আদিবসমম্বরতলে হত্বা তিমিরমৃগমপরশৈলগতঃ।
উদ্যুঙ্ক্তে বরূণাশামুপৈতুং উষ্ণাংশুরনুরাগী।। ১৯
বিজ্ঞানবতী—(পশ্চিমদিকে তাকিয়ে) অহো! জ্যোতিষশাস্ত্র চিন্তায় আমি লক্ষই করিনি,অনেক সময় ব্যাতীত হয়ে গেছে। সূর্যদেব সারাদিন অন্ধকার রূপ মৃগ কে শিকার করতে করতে পশ্চিমদিকে অস্তাচলে পৌছে সন্ধ্যাদেবীর প্রতি অনুরক্ত হয়ে তার কথা চিন্তা করছেন।
সখ্যৌ—আসন্নঃ খলু ভগবত্যাঃ ইদৃশালাপ বিধাতনিষ্ঠুর সন্ধ্যাসময়ঃ।
সখীগন— নিষ্ঠুর সন্ধ্যাকাল আসন্ন হয়ে ভগবতী বিজ্ঞানবতী র সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তালাপ এ বিঘ্ন করলো।
বিজ্ঞানবতী—বৎসে বাসন্তিকে, অতিক্রামতি সন্ধ্যাবেলা,  তদভিনন্দনার্থ সাধয়ামি
বিজ্ঞানবতী—বৎস বাসন্তিকে, সন্ধ্যাকাল সমাপ্ত প্রায় আমাকে সন্ধ্যা আহ্নিক করতে যেতে হবে।
ইতি নিষ্ক্রান্তা।।
এই বলে তিনি বেরিয়ে গেলেন।
বাসন্তিকা—প্রথমং দেবীবচনং পশ্চাৎ দেবেন স্বপ্নাসংগঃ।
শকুনমপি ভগবত্যাঃ ইদানীং মন্যে বিপ্রলম্ভ ইতি।। ২০
বাসন্তিকা—প্রথমে দেবী আশ্বাসিত করলেন পত্রিকা দ্বারা, তারপর দেব স্বপ্নে দরশন দিলেন, এখন ভগবতী বিজ্ঞানবতী স্বয়ং জ্যোতিষশাস্ত্র বিচার করে শুভ সংকেত ই দিয়েছেন। তবু আমার মনে কেন বিপ্রলম্ভ(বিরহ জনিত ভাব) হচ্ছে।
চতুরিকা—সখী বাসন্তিকে, কিমিদানীং ভগবত্যা বচনেপ্যবিশ্বাসঃ? যদেষা খলু পূর্বানুভূতং তব সকলং বৃত্তান্তমপ্যনুভবচরমিব কথিতবতী। তস্মাৎ অবশ্যং দেবী ঘটয়িষ্যতি।
চতুরিকা—সখী বাসন্তিকে, তুমি এখনো কেন ভগবতী বিজ্ঞানবতী র কথায় বিশ্বাস করছোনা। তিনি তো তোমার সকল পূর্বানুভূতি এমন ভাবে বর্ননা করেছেন যেন স্বচক্ষে তা দর্শন করেছেন। অবশ্য দেব অহোবিলেশ তোমার পাণিগ্রহন করবেন।
ভ্রমরিকা—তস্মাৎ অস্মাভিঃ একাকিনীভিঃ অত্র ন যুক্তম্ স্থাতুম্। অন্তঃ পুরমেব গচ্ছামঃ।।
ভ্রমরিকা— অনেক দেরী হয়ে গেছে একাকিনী আমাদের এই অরণ্যে থাকা উচিত নয়। চলো আমরা অতঃপুরে ফিরে যাই।
ইতি নিষ্ক্রান্তাঃ সর্বাঃ।
সকলে বেরিয়ে যাবে।
।।ইতি বাসন্তিকাপরিণয়নাটকে দ্বিতীয়োহঙ্কঃ।।
বাসন্তিকা পরিণয় নাটকে দ্বিতীয় অঙ্ক সমাপ্ত।

।।অথ তৃতীয়োহঙ্কঃ।।
ততঃ প্রবিশতি মায়াময়ঃ শাম্বরী চ।
মায়াময় ও শাম্বরীর প্রবেশ।
শাম্বরী— আর্যপুত্র, কিং নিমিত্তং তত্রভবতঃ এতাবন্তং কালমবলম্ব্য বিলম্বঃ?
শাম্বরী—আর্যপুত্র, এতদিন পরে কি কারনে এখানে আপনার আগমন হলো?
মায়াময়ঃ—অয়ং কিমন্যৎ অহোবিলেশিতুঃ অভিবন্দনাৎ।
মায়াময়— অন্য আর কি কারন থাকতে পারে, ভগবান অহোবিলেশের অভিবন্দন ভিন্ন।
শাম্বরী—দাণিং কিং বিশেষেণ বিলম্বে কারণম্?
শাম্বরী— আপনি কি মনে করেন না বহুদিন পর আজ এখানে এলেন।
মায়াময়ঃ—প্রিয়ে শ্রুয়তাং কদাচিৎ আখেটবিহারে কামপি কিরাতরাজকন্যকাং নির্বর্ণ্য বলবৎ উৎকণ্ঠিতো দেবঃ।
মায়াময়—শোনো প্রিয়ে ভগবান অহোবিলেশ মৃগয়াবিহারে গিয়ে কিরাতরাজ নন্দিনী কে দর্শন করে উৎকন্ঠিত হয়ে রয়েছেন।
শাম্বরী—(সানুস্মরণম্)
আরভ্য মৃগয়ৈ বিহারং দেবঃ উৎকণ্ঠিত ইতি দেব্যা লক্ষ্ম্যা সনির্বেদং কথিতমপি। কথং এষোৎকণ্ঠা কিরাতরাজকন্যায়াম্?
শাম্বরী—(স্মরণ করে) হ্যাঁ লক্ষ্মীদেবীও স্বয়ং আমাকে বলেছেন ভগবান অহোবিলেশ মৃগয়াবিহারে গিয়ে কিরাতরাজকন্যা কে দর্শন করার পর থেকে তার মন উৎকন্ঠিত হয়ে আছে।
মায়াময়ঃ—(সাশঙ্কম্) অপি বিদিতং দেব্যা দেব বিরহ বৈধুর্যম্?
মায়াময়—(আশঙ্কিত হয়ে) দেবী লক্ষ্মী ও কি ভগবানের বিরহ তাপে বিবশ হওয়ার বিষয়ে বিদিত আছেন?
শাম্বরী— ন কেবলং বিদিতম্। অরণ্যে দেবস্য কস্যাঃ উপরি উৎকণ্ঠা ইতি নিদানমুপলব্ধুং বনপালকং সোদরসুধাকরং প্রতি প্রেষিতা পত্রিকা
শাম্বরী—তিনি কেবল বিদিত আছেন তাই নয় তিনি তার ভ্রাতা সুধাকর যিনি এই অরণ্যের অধিপতি তাকে পত্র পাঠিয়ে সেই কন্যার পরিচয় জানার জন্য বলেছেন।
মায়াময়ঃ—
শবরী মোহজালেন বদ্ধং চেতো মৃগং হরেঃ।
হরিণীব কথং লক্ষ্মীঃ উন্মোচয়িতুং ইহতে।। ১
মায়াময়—শবর কন্যার পাতা মোহজালে অহোবিলেশের মন রূপ মৃগ বদ্ধ হয়েছে। হরিণী রূপ লক্ষ্মীদেবী কিভাবে সেই জাল থেকে ভগবান কে উদ্ধার করতে পারেন?
শাম্বরী—যদ্যেবং দেবস্য তস্যাঃ উপরি অমোচনীয় এব অনুষঙ্গঃ।
শাম্বরী— ভগবানের এই উৎকন্ঠা, শবরী কন্যার প্রতি এই মোহ কি অমোচনীয়(দূর করা যাবেনা)
মায়াময়ঃ—কিমুচ্যতে?  অস্য তাবৎ অনিবারণীয়ং আস্থান্যামপি বিরহবৈধুর্যম্।
আশীর্ন প্রণতে বিড়ৌজসি বিধেরঙ্গীকৃতিনার্গমে
নাস্থাবাচিগুরোঃ সুপর্বগণিকা নাট্যে নসংভাবনা।
সঙ্গীতেষু চ নৈব বৈণিকমুনেঃ সাকঘতমাকর্ণনং
সর্ব তিষ্ঠতু নাম কিঞ্চিদপি ন ত্রাসো রমায়া হরেঃ।।২
মায়াময়— কি করে তা দূর হবে? ভগবানের বিরহ দুঃখ অনিবারন যোগ্য অবস্থায় পৌছেছে। শোনো তবে দেবরাজ ইন্দ্র যে তার পদতলে প্রণতি নিবেদন করছেন আশীর্বাদ করার জন্য  তিনি ফিরেও দেখছেন না। ব্রহ্মা যে তার দর্শনে এসে তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তা তিনি অনুভব ও করতে পারছেন না। দেবগুরু বৃহষ্পতি উপস্থিত রয়েছেন তার প্রতিও কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। নারদমুনি তার প্রশস্তি বাচন করে বীনাবাদন করে অপূর্ব সঙ্গীত করলেও অন্য দিনের মতো তাকে অভিবাদন জ্ঞাপন করছেন না। অন্যের কি কথা, স্বয়ং লক্ষ্মীদেবীর প্রতি ও ভগবান কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
শাম্বরী—কিং কর্তু ব্যাবস্যতি দেবঃ?
শাম্বরী—তবে ভগবান অহোবিলেশ কি করবেন এই অবস্থায়।
মায়াময়ঃ—(সহর্ষস্মিতম্)
বীণামুনি প্রভৃতয়ো বিবিধমহান্ত
স্থিতষ্ঠন্ত্যসংঘটিত সংঘটনৈকতানাঃ।
দেবস্তথাপি দয়য়া বহুমানপূর্ব
মাহূয় মাং রহসি বাচমবোচ দেবম্।।
(ইতি শাম্বর্যাঃ কর্ণে কথয়তি)
মায়াময়—(আনন্দে হেসে বললেন)দেখো  যদিও নারদাদি মুনি দেবতা ও ঋষি গন নানা কার্য্যের জন্য তার কাছে উপস্থিত হয়েছেন, তার কৃপা প্রার্থনার জন্য অপেক্ষারত। দেব অহোবিলেশ কৃপা করে বহু সম্মান প্রদর্শন করে আমায় আহ্বান করেছেন ও গোপনে আমার কর্নে এই কথা বলেছেন—
(শাম্বরীর কর্নে মায়াময় মৃদুস্বরে কিছু কথা বললেন)
শাম্বরী—(সশ্লাঘম্)
অহো দেবস্য সংবিধান বিজ্ঞানম্। যদ্যেবং অন্তঃপুরাৎ বহিঃ আনীতায়াঃ কন্যায়াঃ অন্যোন্য সল্লাপো ভবিষ্যতি দেবস্য চ।
শাম্বরী(প্রশংসা করে) —অহো ভগবান অহোবিলেশ কি চতুর, তার কথা অনুযায়ী যদি এভাবে কুমারী বাসন্তিকাকে অন্তঃপুরের বাইরে আনা যায় তবে একে অপরে সামনাসামনি বার্তালাপ করতে পারবে।
মায়াময়ঃ—তথৈব দেবাদেশং আচরামি।
মায়াময়—তাই আমি দেব অহোবিলেশ এর আদেশ পালন করতে চলেছি।
(ইতি নিষ্ক্রান্তঃ।)
উভয়ের প্রস্থান।
মিশ্র বিষ্কম্ভকঃ

।।দ্বিতীয় দৃশ্য।।
(ততঃ প্রবিশতি কাময়মানাবস্থো দেবো বিদূষকশ্চ)
বিদূষক সহ গভীর প্রেমাক্রান্ত দেব অহোবিলেশ এর প্রবেশ,
দেবঃ—(স্মরণং অভিনীয়) ইদানীং তস্যাঃ পৃথুলতরনিতম্ব লম্বমান স্নপন বিরাম নিবদ্ধকুন্তলাগ্রম্। অপি পুনরবলোকয়ামি তন্ব্যাঃ ব্রত পরিপূত মনোহরং শরীরম্।। ৪
অস্যাঃ তাবৎ ঔপম্যং অসৎস্বভাবাঃ কথং ভজেরন? তস্যা বক্ত্ররূচোহধিগচ্ছতি গুরুদ্রোহী ন চেৎ চন্দ্রমাঃ
শাখাচংক্রম নিস্পৃহা যদি পিকাঃ গৃহ্ণন্তি বাঙ্মাধুরীম্।
অভ্যস্যন্তি বিলাস সংক্রমমিভা মন্দা ন চেৎমেধয়া
নিশিচন্বন্তি চলা ন চেৎ মধুলিহো নীলালকপ্রক্রিয়াম্।। ৫
প্রায়ো মনোভুবস্তস্যাঃ পাবকাস্ত্রাধিকে দৃশৌ।
জায়তে মম সন্তাপাস্স্মরণেহপি তয়োর্যতঃ।। ৬
দেব—(স্মরন করে) এখনো আমি সেই কন্যার পৃথুল নিতম্ব পর্যন্ত বিস্তৃত কেশপাশ দর্শন করতে পারছি, কতো সহজে যা তিনি স্নানের পর বেঁধে রাখেন। তার ব্রত তপস্যাদি দ্বারা পবিত্র শরীর যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। কি করে অজ্ঞ কবি  তার সমান কোনো উপমা খুঁজে পাওয়ার আশা করে। চন্দ্রমার সাথে কি করে তার মুখমন্ডলের তুলনা হয় যে চন্দ্রদেব তার গুরুর কাছে অপরাধী। সেই ধীর কন্যার কন্ঠস্বর কি কোকিলের কলতানের সাথে তুলনা করা যায়, যে কোকিল এক বৃক্ষ শাখা থেকে আরেক শাখায় চঞ্চল ভাবে লাফিয়ে বেড়ায়। মূঢ়মতি গজরাজের চলার সাথে কি করে এই বুদ্ধিমতি কন্যার গমন কে তুলনা করা যায়?
মন হতে জাত কামদেব কি আগ্নেয়াস্ত্র হতেও শক্তিশালী বান তার চক্ষু তে সংযোজন করেছেন। নয়ত কেন তার চোখের কথা স্মরন করলেও আমার শরীর তপ্ত হয়ে যায়।
বিদূষকঃ—(স্বগতম্)
হন্ত অতিমাত্রো মদনজ্বরো দেবস্য।
(প্রকাশম্)
দেব ভবনাশিনী সলিলাসার শীতলং গরুড়াচল শিখর পর্যন্তোপবনং প্রবিশ্য বিরহসন্তাপমপনয়ন্তু ভবান্।
বিদূষক—(স্বগত) হায়! দেবের বিরহতাপ সমস্ত সীমা কে অতিক্রম করছে।
(প্রকাশ্যে) হে দেব গরুড়াচল পর্বত শিখর সমীপে ভবনাশিনী নদী তীরে শীতল বায়ু দ্বারা স্নিগ্ধ ঐ উপবনে চলুন সেখানে গেলে আপনার বিরহতাপ কিছু প্রশমিত হতে পারে।
দেবঃ—যদভিমৎমাহ ভবান্। তদা দর্শয় উপবনমার্গম্।
দেব— তোমার যা অভিমত। আসো আমায় সেই উপবনের পথ দেখাও।
বিদূষকঃ—ইতো ইতো ভবান্।
বিদূষক— এই যে এই পথে আসুন।
দেবঃ—(পরিক্রামন্ পুরোবলোক্য) সখে, পশ্যেদং বেদগিরি গরুড়াচলয়োঃ অন্তরে সানূনি অভিতো ভবনাশিনাং বসন্ত রমানিরন্তরবিহারভবনং চিত্রবনম্। (প্রবেশম্ নাটয়ন্) যদিহ বিহরতঃ কন্তোঃ অত্রত্যৈঃ এব অনুবধ্যতে রাজোপচারঃ।
দদতি মলয়বাতাঃ তালবৃন্দোপচারং
রচয়তি কলিকাভিঃ ছত্রমূর্ধ্ব রসালঃ।
পরভৃতপরিবারাঃ পাঠকত্বং ভজন্তে
কলয়তি মধুপালী কাকলী দোহলানি।। ৭
অপি নিরশ্চাং অভ্যাগারিকতা,
(অন্যতোহবলোক্য)
প্রতিবিটপমটন্তঃ পল্লবান্ হর্তুকামা
পরভৃত পরিবারাঃ প্রাপ্য সাকং প্রিয়াভিঃ।
পৃথুক চরিত শেষান্ এব তত্রাপ্যদন্তঃ
পরিসর তরূবাটীং পর্যবষ্টভ্রুবন্তি।। ৮
দেব—(কিছুদূরে এগিয়ে সামনে তাকিয়ে) সখা! দেখো বেদাদ্রী ও গরুড়াদ্রী পর্বতশিখর দ্বয়ের মধ্য দিয়ে ভবনাশিনী র ধারা বয়ে চলেছে, দেখো এই উপবন যেন চির বসন্তের ও সৌভাগ্যের(রমা) নিরন্তর বিহারভূমি। (বনের মধ্যে প্রবেশ করে)
দেখো এই অরণ্যভূমি ও বন্য প্রাণী গন যেন রাজ সেবার উপচারের আয়োজন করেছে। পর্বতপ্রদেশ থেকে আগত মৃদু মন্দ মলয় বাতাস তালপাতার পাখার সেবা করছে। নব মুকুল শোভিত রসাল আম্র ফলের বৃক্ষ গুলি মাথায় ছত্র ধারণ করে রয়েছে। কোকিলের কলতানে অভিবন্দন করছে। মধুকর গন গুঞ্জন দ্বারা মধুর সঙ্গীত সেবা করছে।
দেখো এই মূক প্রানী গুলিও কিরকম সংসার ধর্ম পালন করছে। এই পক্ষীগন তার সঙ্গিনী দের সাথে বৃক্ষ থেকে বৃক্ষ শাখায় উড়ে যায় নবপল্লবের খোঁজে, নব পল্লব সংগ্রহ করে বৃক্ষশাখায় বাসা বাঁধে ও সারাদিন খাবার খুঁজে এনে পক্ষীশাবক দের খাইয়ে যা বাঁচে তা খেয়ে জীবনধারণ করে।
বিদূষকঃ—দেব, ইতোহপি পুষ্পিণ্যাঃ লতায়াঃ প্রতিবিম্ব সনাথং আলবালভাজন সংপূর্ণ মরন্দঘৃতং প্রতিগৃহ্য মধুকরদ্বিজাঃ পরিতঃ প্রবল্গন্তি।
বিদূষক—হে দেব এই লতায় জাত পুষ্প থেকে ক্ষরিত মকরন্দে প্রতিবিম্বিত পুষ্প কে আসল পুষ্প মনে করে ভ্রমরপুঞ্জ তার আশে পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
দেবঃ—(সস্মিতম্) অয়ে তির্যক্ষু চ স্বজাতি ধর্মমারোপয়সি।
(পরিতঃ পশ্যন্ সোৎকণ্ঠম্)
গুরুতরকুচকুম্ভৌ কোরকে কোরকেহস্যাঃ
পদমবনিরূহাণাং পল্লবে পল্লবে চ।
পরভৃত মিথুনানাং পঞ্চমে পঞ্চমেহহং
বচনমপি চহাহা বিস্মরামি ভ্রমামি।। ৯
দেব—(স্মিত হেসে) তুমি কি এই পশুপক্ষী দের মধ্যে নিজ স্বজাতির ধর্ম আরোপ করছো?
(চারদিকে তাকিয়ে উৎকন্ঠিত হয়ে বললেন)
দেখ সখা আমি চারদিকে যা দেখছি তাতেই আমার সেই কন্যার সৌন্দর্য্য, মাধুর্য্য চোখে পড়ছে। প্রতিটি পুষ্প কোরক তার গুরুতরভার কুচকুম্ভের স্মরণ করাচ্ছে। প্রতিটি পত্রপল্লব দেখে তার চরণকমলের স্মৃতি উদয় হচ্ছে। কোকিলের পঞ্চমস্বরে কলতানে তার কন্ঠধ্বনি শুনতে পাচ্ছি।
বিদূষকঃ —(সনির্বেদং স্বগতম্)
আশ্চর্য্যমেতৎ খলু নিগলাদন্যদপি দারূবন্ধনম্। তস্মাৎ কেনাপি অপদেশেন অস্য উৎকণ্ঠাম্ অপনয়ামি।
(প্রকাশং, অন্যতো নির্দিশন্)
দেব ইতো বিলোক্য গরুড়াচলশিখর রামণীয়কম্।
বিদূষক—(দুঃখের সহিত মনে মনে বললেন)
ইহা অতি আশ্চর্য্যের যে দারুতে বন্ধনের দ্বারা কেউ কি করে ফাঁস বা অর্গল বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারে? আমাকেই তার উৎকন্ঠা দূর করতে কোনো উপায় করতে হবে।
(প্রকাশ্যে, অন্য দিকে নির্দেশ করে)
হে দেব এদিকে দেখুন গরুড়াচল শিখর কি রমণীয় লাগছে।
দেবঃ—ন সংভাবয়তি কিম্?  কিং কিমতি পরিচয়ঃ?
প্রকৃতিপরমমৌগ্ধ্যাৎ পাশয়ন্ত্রং চ তন্ত্রীং
সকলমপি চ বীণাং নালদণ্ডং বিধায়।
শবরবরকুমারৈঃ সাকমাখেটলোলাঃ
চিরমিহ বিহরন্তে সিদ্ধগন্ধর্ব বালাঃ।। ১০
দেব— হে সখা দেখো বহুদিনের সখ্যতা ও সঙ্গপ্রভাবে সরলমতি সিদ্ধ গন্ধর্ব বালক গন এখানকার শবর বালক দের সাথে  মৃগয়াবিহার খেলার জন্য তাদের বীণা গুলিকে বান ছোঁড়ার দন্ড, ও বীনার তন্ত্রী গুলি দিয়ে জাল বানিয়ে নিয়েছে। তাই দেখে আমার মনে হচ্ছে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।
বিদূষকঃ—ইতো দৃষ্টি দানেন কৃতার্থয় বেদাচলদধিণ পার্শ্বে প্রসন্ন পাবনানি উপবনানি।
বিদূষক—হে দেব আসুন আপনার দৃষ্টি দানে বেদাদ্রী পর্বত সন্নিকটস্থ এই পবিত্র অরণ্য কে আপনার কৃপাদৃষ্টি দান করুন।
দেবঃ—(নির্বর্ণ্য সপ্রত্যভিজ্ঞম্)
এষা পর্ণকুটী পরাশরমুনেঃ এতৎ বসিষ্ঠাশ্রমং
প্রহ্লাদস্য মুনেস্তপোবনমিদং তৎপুণ্ডরীকোটজম্।
বৈধাত্রস্য মুনেঃ নিবেশনমিদং ব্যাসাদিমানামিমে
প্রাচ্যাং ভাগবতাগ্রণীঃ পরিষদাং পর্ণালয়াঃ পাবনাঃ।। ১১
দেব—(সেদিকে তাকিয়ে সসম্মানে বললেন) হ্যাঁ এই পর্ণকূটীর টি ঋষি পরাশরের আশ্রম। এইটি বশিষ্টমুনির আশ্রম। এই তপোবনটি প্রহ্লাদের, তার উপরে পুন্ডরীক মুনির গুহা। এইটি নারদমুনির তপস্যা স্থলী। ব্যাসাদি ঋষিগন এখানে বাস করছেন। এই সকল মহাভাগবত গনের সঙ্গগুনে এই স্থান সত্যই পবিত্র।
বিদূষকঃ—কিং কথয়ামি ইদানীং অচলরাজমাহাত্ম্যম্। যস্মিন্ দিব্যতপস্বিনোহপি যোগানন্দ সৌখ্যমনুভবন্তি।
বিদূষক— এই পর্বতরাজের আর কি মাহাত্ম্য বলবো? যেখানে দিব্য ঋষি গন ও যোগানন্দ অনুভব করেন।
দেবঃ—(অন্যতঃ পরিক্রামন্)
পশ্যাগ্রে ভবনাশিনীং তটবতীং পাপৌঘবিধ্বংসিনীং
স্বচ্ছস্বাদু জল স্বভাব সুভগামন্তঃ প্রবাহামিমাম্।
উন্মজ্জন্ত্যপরে চ যত্র কতিচিৎ মজ্জন্তি পুণ্যোদকে
নিত্যং কেচন নির্বহন্তি নিয়মং দেবর্ষি পত্নীগণাং।। ১২
(সংস্পর্শ অভিনীয়)
রসালনবমালিকা কমলকৈরবাশোকভূ
মরন্দরসকন্দলী মহিকগন্ধপাণিংঘমঃ।
মনোমম মনোভুবো যুগপদত্রবিস্তারিতং
তনোতি ভবনাশিনীং তটবতীং তরঙ্গানিলঃ।। ১৩
(সধৈর্যাবষ্টংভমিব) অনার্য দুর্ললিত
যাহি যাহি পুনর্দূরে দূরে মারূত মারূত।
আকুলঃক্ষুধয়েদানীমাসীৎ তলিমপন্নগঃ।। ১৪
দেব— অন্য দিকে কিছুদূর পরিক্রমন করে, দেখো আমাদের সামনে ভবনাশিনী নদীর রমণীয় তটভূমি। এখানে স্নান করলে সমস্ত পাপ নাশ হয়। এই নদীর জল স্বাদু ও শুদ্ধ। এই পূন্য জলধারায় সকলেই নিমজ্জন করে  শুদ্ধ ও পবিত্র হন। মহর্ষি দেবর্ষি দের পত্নীগন নিত্যদিন এই জলে স্নান করে পবিত্র হন।
(সেই জলধারা স্পর্শ করে)
নদী তটবর্তী আগত মৃদু মন্দ বাতাস অশোক, আম্র, জুঁই, পদ্ম প্রভৃতি পঞ্চ প্রকার পুষ্পের মকরন্দ ও সুগন্ধ বহন করে আনছে যা আমার মনে পুনরায় কামদেব কে জাগ্রত করার ভয় উৎপাদন করছে।
(ক্রোধ ও প্রকাশ করে)
আরে আরে অনার্য, দুর্ললিত বায়ু,যা এখান হতে দূরে পলায়ন কর। আমার আসন রূপে অধিষ্ঠিত আদিশেষ বহুকাল ক্ষুধায় অধৈর্ষ্য হয়ে রয়েছে। এক নিঃশ্বাসে তোমায় শোষণ করে নেবে।
বিদূষকঃ—(স্মৃতিমভিনীয়)
ইদানীং তব তলিম শেষ ইব অহমপি ক্ষুধাকুলঃ সংবৃত্তঃ।
বিদূষক—(কিছু স্মরণ করে) হে দেব এখন তোমার শয়নস্থল রূপ আদিশেষের মতো আমিও প্রবল ক্ষুধা অনুভব করছি
দেবঃ—(সস্মিতম্) সখে, উপপন্নমিদং যদভিলষিতং তত্রৈব চেতাংসি।
শ্রুতিমহিভৃতশশৃঙ্গেহপি বা ভবনাশিনীং
পৃষৎশিশিরে কুঞ্জে কুঞ্জে গুহাসু গুহাসু যা।
কিসলয়ময়ে তল্পে সলীলমুপেয়ুষা
চিরমিহ ময়া সাকং সা কিং শয়ীত রমেত বা।। ১৫
(ইতি মদন পারবশ্যেন স্খলিত গতিমভিনয়তি)
দেব—(স্মিত হেসে) প্রত্যেকেই তার রুচি অনুযায়ী অনুভব করে। তুমি এখন সুখাদ্যের জন্য ব্যাস্ত। আমার মন এখন এই চিন্তায় ব্যাস্ত যে আমি যদি এখন তার সঙ্গ লাভ করতাম, তবে এখানে বেদাদ্রী শিখরে অরণ্য মধ্যে ভবনাশিনী নদী হতে আগত শীতল বায়ুতে স্নিগ্ধ বৃক্ষছায়া তলে কেলিবিলাস করতাম বা বেদাদ্রী পর্বতের গুহায় তরুন পল্লব বিছানো শয্যায় শয়ন করতাম,
(এই বলে মদন বশীভূত হওয়ায় তার গতি স্খলিত হতে লাগলো।)
বিদূষকঃ —(স্বগতম্ সবৈধুর্য্যম্)
গমনেনাপি মদনেনাপি ইদানীং দেবো দৃঢ়ংপরিশ্রান্তঃ। নিশ্বসিতি দীর্ঘ দীর্ঘ সমেহপি মার্গে পদে পদে স্খলিতি।।
বিদূষক—(স্বগত, অত্যন্তচিন্তিত হয়ে ) দেব অহোবিলেশ পথশ্রমে ও মদনদহনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তার জোরে জোরে শ্বাস পড়ছে, ও মসৃণ পথেও বার বার পদস্খলন হচ্ছে।
(প্রকাশম্)
অস্মিন্ স্ফটিক গণ্ডশিলাতল সনাথে মাধবী মণ্ডপ দ্বারপর্যন্তে মুহুর্ত বিশ্রম্য প্রবহন্ নির্ঝরাসারশীকরৈঃ বিষমশিলাতল সংচরণ পরিশ্রমং অপনয়াবঃ।
(প্রকাশ্যে)
হে দেব, আমরা বহুক্ষণ ধরে বন্ধুর উঁচু নীচু পথে হেঁটে চলেছি, পাহাড়ী ঝর্না থেকে জলবিন্দু ছিটে আসায় এই পথ খুব পিচ্ছিল।  আসুন এই মাধবীলতা বেষ্টিত মন্ডপের পাশে স্ফটিক শিলায় বসে কিছুক্ষন বিশ্রাম করি।
দেবঃ—তথা কুর্বঃ। (ইতি উপসৃত্য নিবসতঃ।)
(পরিতঃ পশ্যন্) বিরহতাপোদ্দীপনানি ইমানি কাননানি। বনে বনে চ মধুপাঃ মধুপে মধুপে স্বরাঃ।
স্বরে স্বরে চ মে ভাবাঃ ভাবে ভাবে মনোভবঃ।। ১৭
(পরিতো নির্বর্ণ্য) যত্র যত্র মমালোকঃ তত্র তত্রাপি মে প্রিয়া। স্মরোহনুতাপাৎ চক্রে কিং তন্ময়ং ভুবনত্রয়ম্।। ১৮
(ইতি নিমীলিতাক্ষঃ সংকল্পমনুভবন্ প্রলপতি।)
চরণযুগলীমঙ্কে সংবাহয়তি নিবেশয় বা চিবিটয় পুনঃপীঠীং সংবীজয়েত্যনুশাস্ত্র বা।
স্তনমকরিকা মুদ্রা সংভাবিতোরসমদ্য মাং
পরিজনপদে যোক্তুং বালে তবাবসরো ন বা।। ১৯
দেব—বেশ চলো তাই করি। (বলে তিনি বসলেন)
(চারপাশে তাকিয়ে) এই অরণ্য যেন আমার বিরহ তাপকে আরো উদ্দীপন করছে। বনে বনে মধুকর গন মধুর স্বরে গুঞ্জণ করছে। সেই মধুকরদের গুঞ্জণ ভাবে পরিপূর্ণ যা আমার মনে মদনোদ্দীপন করছে।
(চারিপাশে তাকিয়ে) যেদিকে আমি তাকাচ্ছি সর্বত্রই আমার প্রিয়া কে দর্শন করছি। কামদেব কি আমার অনুতাপের জন্য জগতে সর্বত্র তার মূর্তি ছড়িয়ে রেখেছেন?
(তিনি চোখ বন্ধ করলেন ও প্রলাপের ন্যায় বলতে লাগলেন)
হে বালিকে এখনো কি সময় আসেনি যে তুমি তোমার কোমল পদ পল্লব আমার ক্রোড়ে স্থাপন করবে ও আমি সেই পদদ্বয় সম্বাহন করবো। অথবা তোমার পৃষ্ঠদেশ সুশীতল করার জন্য আমায় বীজন করতে বলবে, তোমার কি অবসর হয়না আমায় দৃঢ় আলিঙ্গনে বদ্ধ করতে যাতে আমার বক্ষ তোমার বক্ষস্থিত মকরমণির সংস্পর্শ লাভ করতে পারে। তুমি কি আমায় তোমার পরিজন রূপে স্বীকার করবেনা?
বিদূষকঃ—হী হী সংকল্প সমাগতাং তাং প্রত্যক্ষিতামিব সান্ত্বয়িতুং প্রবৃত্তঃ।
বিদূষক— হায়! দেব কল্পনায় সেই কন্যার সাথে প্রেমালাপ করে সান্ত্বনা লাভ করছেন যেন সেই কন্যা তার সামনেই রয়েছে।
দেবঃ—(উন্মীল্য চক্ষুষী) হা নিষ্করূণে কিরাতরাজনন্দিনি কিমকারণে কোপঃ?
উপসৃত্যপুনং অপসরন্তয়াস্তে ময়া কিমপরাদ্ধম্ অথবা মন্দা গতির্মদবদক্ষিকুচৌ চ কুম্ভৌ
দন্তৌ কপোলফলকৌ করসম্পদূরূ।
ত্বং হস্তিনী তদপি কিঞ্চকিতাসি গন্তুং
হা হন্ত হন্ত বিদিতং হরিশব্দযোগাৎ।।২০
প্রিয়ে ন ভেতব্যম্। (ইতি তদন্বেষণায় উত্থাতুং ইচ্ছতি।)
দেব—(চোখ খুলে) হে কিরাতরাজ কন্যা কি কারনে তুমি আমার ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে আছো। তোমার কি করূণা হয়না। আমার কোন ভুলের জন্য আমার নিকটে ক্ষণকালের জন্য উপস্থিত হয়ে পুনরায় অন্তর্ধান করলে। তুমি কি আমার নাম হরি বলে সিংহ ভেবে আমার কাছে আসতে ভীত হলে, হস্তিনী সিংহের থেকে ভীত হয় তেমন তোমার ও করি কুম্ভ সদৃশ কুচযুগ, করিশুন্ডসদৃশ উরুদ্বয়, হস্তিনীর মতো মদমত্ত চক্ষুদ্বয়, মত্ত হস্তিনীর মতো তোমার গতি, তোমার শুভ্রদন্তরাজি গন্ডস্থল কে আলোকিত করে। তাই তুমি ও কি হস্তিনীর মতো ভয় পাচ্ছো।
প্রিয়ে ভয় পেয়োনা। (এই বলে তাকে খুঁজতে লাগলেন)
বিদূষকঃ—(দেবস্য হস্তমবলম্ব্য)
ইদানীং তব প্রাকৃতজনস্যেব শূন্যহৃদয়ত্বম্।
বিদূষক—(ভগবানের হাত ধরে তাকে আটকালেন।) হে দেব আপনার কি হয়েছে। প্রাকৃত মনুষ্য জনের মতো আপনি বিচলিত ও সবকিছু শূন্য অনুভব করছেন।
দেব—(সোদ্বেগম্) তৎ তদানীন্তনমেব জানীহি।
শ্রুতিবিততৌ শ্রুতিলগ্নং রাগে রাগান্বিতং লয়ে সলয়ম্।
সমজনি মনো মদীয়ং সঙ্গীতাবসর এব তন্বঙ্গয়াঃ।। ২১
দেব—(উদ্বেগের সহিত) তোমায় আমি বলছি আমার হৃদয়ের কি অবস্থা। যখন সে সঙ্গীত করে,সেই গীতধ্বনি আমার কর্ণে প্রবেশ করে রাগের প্রতি অনুরাগান্বিত করে, ও সেই একই লয়ে আমার মন বাঁধা হয়ে যেন নৃত্য করে, তারপর আমার মন তার সঙ্গীতে আকৃষ্ট হয়ে সেখানেই আটকে যায়।
সরলগমকসন্ধৈঃ চারুসঙ্গীতবন্ধৈঃ
মম হৃদয় কুরঙ্গী মন্দচৈতন্যভঙ্গীম্।
সপদি বিরচয়ন্তী সন্নিধাবানয়ন্তী
তদনু সুবদনা তামাহরন্তী প্রয়াতা।। ২২
সে যে  গমক, সুন্দর সঙ্গীত, পরিবেশণ করে আমার মন হরিণের মতো তা অনুসরণ করে। তা থেকে পলায়নের উপায় নেই। তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসে আমার মন কে সে বন্দী করে নিয়ে যায়।
বিদূষকঃ —তয়া স্বজাত্যাঃ অনুরূপং আচরিতম্।
বিদূষকঃ— সে তার স্বজাতিজনোচিত আচরণ ই করে।
দেবঃ— ন শক্নোমি দুর্লভপ্রার্থিতং আত্মানং ধারয়িতুম্।  তর্হি তদুপলম্ভে কো বাভ্যুপায়ঃ?
দেব—আমি এই দুর্লভ প্রার্থনা পূরণ না হলে জীবনধারন করতে পারবোনা তাকে লাভ করার কোনো উপায় বলতে পারো?
বিদূষকঃ—(স্বগতং সানুস্মরণম্) এতদপি মন্মথোন্মাদিনা বিস্মৃতম্।
(প্রকাশম্)
দেব্ব শবরপক্কণং প্রতি প্রেষিতপূর্বঃ মায়াময়ঃ। ইদানীং সোহপি তব প্রিয়তমাং বাদ্যোদ্যানং আনয়িষ্যতি। তস্মাৎ তত্র আবাভ্যাং উপসর্পিতুং যোগমায়াশক্তিমনুস্মরতু ভবান্।
বিদূষক—(নিজ মনে চিন্তা করে বললেন) ওঃ ভগবান মদনমোহিত হয়ে সব ভুলে গেছেন।
(প্রকাশ্যে) হে দেব আপনি তো ইতিমধ্যেই কিরাতরাজের কাছে মায়াময় কে পাঠিয়েছেন,এতক্ষনে হয়তো সে তাকে প্রাসাদের বাইরের উদ্যানে নিয়ে এসেছে। এখন আপনাকে শুধু আপনার যোগমায়াশক্তি কে স্মরণ করে তার নিকটে যেতে হবে।
দেবঃ—(সপ্রত্যয়োল্লাসম্) সখে সম্যক্ আহ ভবান্, তথা ভবতু
দৃঢ়চিত্তঃ কিঞ্চিৎ মুকুলিতাক্ষো ভব।
দেব—(বিশ্বাস ও উল্লাসের সহিত) সখে! উচিত বলেছো। তাই হোক। এখন তোমার চক্ষুদ্বয় বন্ধ করে মন কে সংযত করো(ধ্যানে নিবিষ্ট করো)
(ইতি যোগমায়াবিদ্যাং অভিনয়তি)
(এই বলে যোগমায়া শক্তি কে স্মরণ করলেন)
বিদূষকঃ—(উন্মীল্য চক্ষুষী)
হী হী কিমেতৎ আশ্চর্য্য আশ্চর্য্যম্। দেব, তব মায়াবলেন ক্ষণমাত্রে গরুড়াচলাৎ শবরপক্কণমুত্তরেণ বাহ্যোদ্যানং উপগতৌ স্বঃ।
বিদূষক—(চোখ খুলে)  অহো কি চমৎকার। ইহা অত্যন্ত আশ্চর্য্যের যে এক মুহুর্তে আপনি আপনার যোগমায়া বলে আমাদের গরুড়াচল পর্বত প্রদেশ হতে শবররাজ্যের নিকটস্থ এক উদ্যানে নিয়ে এলেন। দেবঃ—(পুরোহবলোক্য) সখে, পশ্যেদং অভিনববসন্ত রমানিরন্তর সৌভাগ্য চিত্রীয়মাণং আরামরামণীয়কম্।
দেব—(সামনে তাকিয়ে) হে সখা এখানে একটি সুন্দর রমণীয় উদ্যান আছে মনে হচ্ছে তা ছবিতে আঁকা। যেখানে নিরন্তর অভিনব বসন্ত লক্ষ্মী অবস্থান করে।