বারাণসী
বরুণা ও অসি নদীর সঙ্গম স্থলে অবস্থিত বলে কাশী শহরের আরেক নাম বারাণসী। পরে মুসলিম শাসনকালে এই শহরের নাম হয় বেনারস। স্বাধীনতার পর আবার এই শহরের বারাণসী নাম হয়। বারাণসীর পাঁচটি প্রধান তীর্থ অসিসঙ্গম ঘাট, পঞ্চগঙ্গা, বরুণাসঙ্গম ঘাট, দশাশ্বমেধ, ও মণিকর্ণিকা।
বারাণসী শহরের উত্তর সীমানায় আছে গঙ্গা ও বরুণা নদীর সঙ্গমস্থল, ও দক্ষিণ সীমানায় অসি ও গঙ্গা নদীর সঙ্গম স্থল। এই অসি ঘাটেই বসে ভক্তকবি তুলসীদাস শ্রীরাম চরিত মানস লিখেছিলেন।
বারাণসী গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের একটি তীর্থ ক্ষেত্র কারন শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভূ বারাণসী তে এসে চারমাস ছিলেন। এখানে সনাতন গোস্বামীকে দুই মাস থেকে শিক্ষা প্রদান করেন। ও প্রকাশানন্দ সরস্বতী সহ মায়াবাদী সন্ন্যাসী দের পরাজিত করেন।
কাশী শৈব ক্ষেত্র রূপে অধিক প্রসিদ্ধ হলেও দ্বাদশ বিষ্ণু ক্ষেত্র রূপে ও প্রাচীন কাল থেকে পরিচিত ছিল। স্কন্দপুরাণে কাশীর দ্বাদশ বিষ্ণু ক্ষেত্রের মাহাত্ম্য সম্বন্ধে জানা যায়। যবন আক্রমণের সময় এই প্রাচীন মন্দির গুলি ধ্বংস হলে এই বিষ্ণু তীর্থ গুলি লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যায়। অসি ঘাট থেকে দশাশ্বমেধ পর্যন্ত স্থান শিব কাশী ও মণিকর্ণিকা ঘাট থেকে পঞ্চগঙ্গা তীর্থ পর্যন্ত স্থান বিষ্ণুকাশী নামে পরিচিত। স্কন্দপুরাণে বলা আছে এই বিষ্ণু কাশীতে ১২টি প্রধান বিষ্ণু তীর্থ আছে। এই ১২ জন বিষ্ণু হলেন।
১) শ্রী আদিকেশব
২) হয়গ্রীব কেশব
৩) গঙ্গা কেশব
৪) শ্রী বিন্দুমাধব
৫) শ্বেত মাধব
৬) প্রয়াগ মাধব
৭) প্রচন্ড নরসিংহ
৮) বিটঙ্ক নরসিংহ
৮) অত্যুগ্র নরসিংহ
১০) কোক বরাহ
১১) শ্রী ধরনীবরাহ
১২) যজ্ঞ বরাহ
এছাড়া আরো ছয়টি পৌরানিক বিষ্ণু মন্দির রয়েছে।
১) বৈকুন্ঠ মাধব
২) কোলাহল নরসিংহ
৩) শ্রী নারদকেশব
৪) শ্রী প্রহ্লাদ কেশব
৫) বিদার নরসিংহ
৬) গোপী গোবিন্দ
গঙ্গার ঘাট বরাবর হাঁটতে হাঁটতে এই মন্দির গুলি দর্শন করে নেওয়া যায়। কাশীতে গঙ্গার পাড় বরাবর অর্ধচন্দ্রাকারে ঘাট গুলি অবস্থিত। প্রতিটি ঘাটেই অসংখ্য মন্দির আছে। আমরা অসি ঘাট থেকে পরিক্রমা শুরু করলাম। কথিত আছে দেবী দূর্গা শুম্ভ নিশুম্ভ কে বধ করে এখানে তার অসি ফেলেছিলেন বলে এর নাম অসি ঘাট।
প্রচন্ড নরসিংহ
অসি ঘাটের কাছে জগন্নাথ মন্দিরে শ্রী প্রচন্ড নরসিংহ দেবের বিগ্রহ আছে। স্কন্দ পুরাণে শ্রী বিষ্ণু অগ্নিবিন্দু ঋষিকে বলছেন —
প্রচন্ডনরসিংহোহহং চন্ডভৈরবপূর্বতঃ।
প্রচন্ডমপ্যন্বং কৃত্বা নিষ্পাপ্যা স্যাত্তদর্চ্চনাৎ।। ১৯০
আমি চন্ডভৈরবের পূর্বাংশে প্রচন্ডনরসিংহ নামে অধিষ্ঠিত আছি। ঘোরপাতকী মনুষ্য ও যদি সেই স্থানে আমাকে অর্চ্চনা করে তার ও সমস্ত পাপ বিলয় প্রাপ্ত হয়।
প্রাচীন নরসিংহ বিগ্রহটি যবন রা ধ্বংস করে ফেললে তার প্রতিমূর্তি নির্মাণ করে জগন্নাথ মন্দিরে সেবা করা হচ্ছে। এই নরসিংহ বিগ্রহের কিছু বিশেষত্ব আছে তিনি ত্রিনেত্র, লোলজিহ্ব, ও শ্রীকৃষ্ণের মত ডান চরণ বাম চরণের ওপর রেখে ত্রিভঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
এর পর অসিঘাটের কাছে লাল পাথরে নির্মিত দূর্গা মন্দির ও তুলসীমানস মন্দির দর্শন করে আবার গঙ্গার ঘাটের দিকে চললাম। তুলসীমানস মন্দিরের দেওয়ালে সম্পূর্ণ রামচরিত মানসের দোঁহা লিখিত আছে। মন্দিরে শ্রীরাম, জানকী ও লক্ষ্মণজী সেবিত হচ্ছেন। গঙ্গার ঘাটে পৌছে ঘাট বরাবর চলতে থাকলাম।
হয়গ্রীব কেশব
ভদৈনী ঘাটের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে আনন্দময়ী হসপিটালের পাশেই একটি হনুমান মন্দিরে হয়গ্রীব কেশবের প্রাচীন বিগ্রহ আছেন। হয়গ্রীব কেশবের সেবা যৎসামান্য ভাবেই স্থানীয় লোকেদের দ্বারা পরিচালিত হয়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের একটি বোর্ড রয়েছে তবে সংরক্ষণের কোন ব্যাবস্থা নেই।
স্কন্দপুরাণে বলা আছে—
তথগ্রে চ হয়গ্রীবং তীর্থং পরমপাবনম্।
তত্র স্নাত্বা হয়গ্রীবঃ কেশবং পরিপূজ্য চ।। ৬১
পিন্ডং চ তত্র নির্বাপ্য হয়গ্রীবস্য সন্নিধৌ।
হায়গ্রীবীং শ্রিয়ং প্রাপ্য স মুচ্যেত সপূর্ব্বজঃ।। ৬২
পরমপাবন হয়গ্রীব তীর্থে স্নান করে হয়গ্রীবরূপী কেশবের পূজা ও হয়গ্রীবের সম্মুখে পিন্ডদান করলে হয়গ্রীব শ্রী প্রাপ্ত হয়ে পূর্বপুরুষগণের সাথে তার মুক্তি হয়।
বিটঙ্ক নরসিংহ
হয়গ্রীব কেশব দর্শন করে কেদারঘাটে গিয়ে কেদারেশ্বর মহাদেব দর্শন করলাম। গঙ্গার ঘাট থেকে কেদারেশ্বর মন্দিরে উঠবার সিঁড়িতে বিটঙ্ক নরসিংহ দেবের প্রাচীন বিগ্রহ আছে। সেবা পরিচর্য্যার অভাব লক্ষণীয়। স্কন্দপুরাণে বলা আছে—
বিটঙ্কনরসিংহোস্মি নীলকন্ঠেশ্বরাদনু।
তত্র মাং শ্রদ্ধয়াপূজ্য নরো ভবতি নির্ভয়ঃ।। ১৯৭
নীলকন্ঠেশ্বরের পশ্চাদভাগে বিটঙ্কনরসিংহ নামে আমি অবস্থান করছি। যে মানব শ্রদ্ধাপূর্বক সেখানে আমার অর্চ্চনা করে সে ভয়শূণ্য হয়।
বিশ্বনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ
কেদার ঘাট থেকে কিছুটা দূরে দশাশ্বমেধ ঘাট। এখানে সন্ধ্যাবেলায় ও ভোর বেলায় গঙ্গা আরতি দর্শনীয়। গঙ্গা আরতির সময় শীতকালে 6:00 pm ও গ্রীষ্মকালে 7:00 pm। দশাশ্বমেধ ঘাটের কাছেই বিশ্বনাথ মন্দির। বিশ্বনাথ জী দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে অন্যতম। ঔরঙ্গজেব এই মন্দির ভেঙ্গে জ্ঞানবাপী মসজিদ তৈরী করান। মুঘল সেনার আক্রমণের খবর পেয়ে মন্দিরের পিছনে জ্ঞানবাপী কূপে শিবলিঙ্গটি লুকিয়ে রাখা হয়। পরে পাঞ্জাবকেশরী রঞ্জিত সিং বিশ্বনাথ মন্দির পুনঃ সংস্কার করেন। ও শিবলিঙ্গ উদ্ধার করে মন্দিরে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের পাশে অন্নপূর্ণা মন্দির আছে।
শ্বেত মাধব
দশাশ্বমেধ ঘাটের পাশে মীরঘাটের সিঁড়ি দিয়ে উঠে বড় হনুমান মন্দির আছে। এই মন্দিরের ভেতরে হনুমানজীর বিপরীত দিকেই শ্বেতমাধবজীর প্রাচীন বিগ্রহ আছে। স্কন্দপুরাণে বর্ণনা আছে—
শ্বেতমাধবসংজ্ঞোঽহং বিশালাক্ষ্যাঃ সমীপতঃ।
শ্বেতদ্বীপেশ্বরং রূপং কুর্য্যাং ভক্ত্যা সমর্চ্চিতঃ।। ২৮
দেবী বিশালাক্ষীর নিকটে আমি শ্বেতমাধব নামে বিরাজমান আছি। সেখানে ভক্তিসহকারে আমার অর্চনা করলে আমি তাকে শ্বেতদীপের আধিপত্য প্রদান করি।
গঙ্গাকেশব
এরপর ললিতাঘাটে সিঁড়ি দিয়ে উঠে নেপালী পশুপতিনাথ মন্দির দর্শন করে সামনে ডানদিকের সিঁড়ি দিয়ে নেমে গঙ্গা কেশবজী ও গঙ্গাদিত্যের বিগ্রহ দর্শন করলাম। স্কন্দপুরাণ কাশীখন্ডে অধ্যায়ে বলা আছে—
দক্ষিণেঽগস্ত্যতীর্থাচ্চ তীর্থমস্ত্যতিপাবনম্।
গঙ্গাকেশবসংজ্ঞঞ্চ সর্বপাতক নাশনম্।। ১৮০
তত্র মে শুভদাং মূর্ত্তিং মুনে তত্তীর্থসংজ্ঞিকাম্।
সম্পূজ্য শ্রদ্ধয়া ধীমান মমলোকে মহীয়তে।। ১৮১
হে তপোধন! ঐ অগস্ত্যতীর্থের দক্ষিণভাগে সর্বপাপনাশক অতি পবিত্র গঙ্গাকেশব তীর্থ। সেই স্থানে গঙ্গাকেশব নামে এক মদীয় মূর্ত্তি অধিষ্ঠিত আছে। যে ব্যাক্তি শ্রদ্ধাপূর্বক সেই মূর্ত্তির অর্চ্চনা করে, তার আমার লোকে বাস হয়।
এরপর মণিকর্ণিকা ঘাটে পৌছলাম। কথিত আছে এখানে মৃত্যু হলে শিবজী কানে তারকব্রহ্ম হরিনাম মহামন্ত্র শ্রবণ করান। তাই এখানে শ্মশান ঘাট আছে ও শবদাহ হয়। মণিকর্ণিকা ঘাটে বিষ্ণুচরণ চিহ্ন আছে। প্রাচীন পাদপদ্ম যবন আক্রমণের সময় ধ্বংস হলে নতুন একটি পাদপদ্ম বসানো হয়েছে। এটি চরণপাদুকা মন্দির নামে পরিচিত।
চক্রপুষ্করিণী
চক্রপুষ্করিণী তত্র যোনিচক্রনিবারিণী।।৮২
সংসারচক্রে গহনে যত্র স্নাতো বিশেন্ন নঃ
চক্রপুষ্করিণীতীর্থ মমাধিষ্ঠানমুত্তমম্।।৮৩
সেখানে সংসারনাশিনী চক্রপুষ্করিণী নামে এক পুষ্করিণী আছে। যে মানব সেই পুষ্করিণীতে স্নান করে তাকে আর সংসারচক্রে প্রবেশ করতে হয়না। এই চক্রপুষ্করিণীতীর্থ আমার প্রধান বাসস্থল।
কোলাহল নরসিংহ
মণিকর্ণিকা ঘাট থেকে সামনের রাস্তায় গিয়ে সিদ্ধি বিনায়ক মন্দিরের কাছে কোলাহল নরসিংহ দেব দর্শন করলাম। স্কন্দ পুরাণেকোলাহল নরসিংহ দেবের মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে যে—
কোলাহলনৃসিংহোহস্মি দৈত্যদানবমর্দ্দনঃ।
মম নামসমুচ্চারাদঘকোলাহলো যতঃ।। ১৯৫
কঙ্কালভৈরবো যত্র কাশীরক্ষণদক্ষধীঃ।
তত্র মাং ভক্তিতোঽভ্যর্চ্চ্য নোপসর্গৈনিরুধ্যতে।। ১৯৬
যেখানে কঙ্কালভৈরব সতর্কতা সহকারে অবস্থান করে কাশীধাম রক্ষা করছেন। সেখানে কোলাহল নরসিংহ নামে আমি বিরাজমান আছি। আমার নাম সঙ্কীর্তন মাত্রে সমুদয় পাতক কোলাহল করে পলায়ন করে বলে সেখানে আমি এই নামে পরিচিত।
অত্যুগ্র নরসিংহ
সেখান থেকে সামনে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে গৌমথ এ অত্যুগ্র নরসিংহ দেব বিগ্রহ আছে। স্কন্দপুরাণে বলা আছে—
অত্যুগ্রনরসিংহোহহং কলসেশ্বরপশ্চিমে।
অত্যুগ্রমপি পাপৌঘং হরামি শ্রদ্ধয়ার্চ্চিতঃ।। ১৯৩
হে মুনিবর! আমি কলসেশ্বর নামক মহেশ্বরের পশ্চিমাংশে অত্যুগ্রনরসিংহ নামে বিরাজমান আছি। যে ব্যাক্তি শ্রদ্ধা সহকারে সেখানে আমার অর্চনা করে তার ভীষণ পাপপুঞ্জ ও বিনষ্ট হয়।
বৈকুন্ঠ মাধব
এখান থেকে সোজা রাস্তায় গিয়ে বৈকুন্ঠমাধব বিগ্রহ দর্শন করলাম। এই বিগ্রহ হরিশচন্দ্রেশ্বর শিব ও সঙ্কটামাতা মন্দিরের কাছে একটিছোট মন্দিরে আছেন। স্কন্দ পুরাণে বলা আছে—
সীমাবিনায়কাদযাম্যাং সর্ববিঘ্নবিঘাতনাৎ।।
বৈরোচনেশ্বরাৎপ্রাচ্যামহং বৈকুন্ঠমাধবঃ।
তত্র মাং ভক্তিতোঽভ্যর্চ্চ্য বৈকুন্ঠার্চ্চামবাপ্নুয়াৎ।। ১৮৪
সর্ববিঘ্নহর সীমা গণেশের দক্ষিনাংশে ও বৈরোচনেশ্বরের পূর্বাংশে বৈকুন্ঠমাধব নামে আমি বিরাজ করি। ঐ স্থানে আমার অর্চ্চনা করলে বৈকুন্ঠধাম অর্চনায় যেরূপ ফললাভ হয় সেরকম ফল লাভ হয়।
পঞ্চগঙ্গা ঘাট
সঙ্কটামাতা মন্দির দর্শন করে সিন্ধিয়া ঘাটে নেমে গঙ্গার পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পঞ্চগঙ্গা ঘাটে পৌছলাম। এখানে গঙ্গা,যমুনা, সরস্বতী, কিরণা, ও ধূতপাপা এই পাঁচটি নদীর মিলন বলে এই স্থানের নাম পঞ্চগঙ্গা ঘাট। এই তীর্থ সত্যযুগে ধর্মনদ ত্রেতাযুগে ধূতপাপা, দ্বাপরে বিন্দুতীর্থ, ও কলিযুগে পঞ্চনদ তীর্থ নামে পরিচিত ছিল। এই তীর্থের উৎপত্তি সম্পর্কে স্কন্দপুরাণে বর্ণনা আছে সত্যযুগে বেদশিরা নামে এক ঋষি ছিল, একবার এক অপ্সরা কে দর্শন করে তার মোহ হয়। ও অপ্সরার সঙ্গে রমণ করে তাদের এক কন্যা হয়। ঋষি কন্যার নাম রাখলেন ধূতপাপা। সেই কন্যা যৌবন প্রাপ্ত হলে উপযুক্ত পতি লাভের জন্য ব্রহ্মার তপস্যা করতে লাগলেন। তার কঠোর তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে ব্রহ্মা তাকে আশীর্বাদ করলেন কিন্তু সেই কন্যা যেরূপ পাত্রের অভিলাষী একমাত্র ভগবান বিষ্ণুই সেরকম পাত্র জেনে পিতামহ ব্রহ্মা বললেন তোমার উপযুক্ত পতি আমার অদেয় তবে তোমায় আশীর্বাদ করছি তুমি সমস্ত তীর্থের থেকে পবিত্রতমা হও। একবার ধর্ম নামে এক ব্রাহ্মণ কামার্ত হয়ে ধূতপাপা কে বিবাহ করতে চায়। ধূতপাপা তাকে অভিশাপ দেয় যেমন জড়ের মতো তোমার কাজ তুমি সেই জড় নদ হয়ে যাও । ধর্ম নামে সেই ব্রাহ্মণ ও ধূতপাপার হৃদয়ের কঠোরতা দেখে তাকে পাথর হয়ে যাওয়ার শাপ দেয়। ধূতপাপা তার পিতার কাছে এসে সব বললে তার পিতা তাকে বলে আমার তপোবলে তুমি চন্দ্রকান্ত শিলা হয়ে যাবে। চন্দ্রকিরণে দ্রবীভূত হয়ে তুমি ধূতপাপা নদীতে পরিনত হবে। তোমার তীরে অগ্নিবিন্দু ঋষির তপস্যায় ভগবান বিষ্ণু প্রকট হয়ে তোমায় সৌভাগ্যমন্ডিত করবে। এভাবে ধর্মনদ, ও ধূতপাপা নামে দুই নদীর উৎপত্তি হল। একবার সূর্যদেব এখানে উগ্রতপস্যা করেন তার অতিশ্রমের কারনে কিরণরাশি থেকে প্রবল স্বেদ নির্গত হয়। সেই স্বেদ বিন্দু থেকে কিরণা নামে নদী হয়। এভাবে পরম পবিত্র ধর্মনদে কিরণা, ধূতপাপা, গঙ্গা, যমুনা সরস্বতী এসে মিলিত হলে পঞ্চনদ বা পঞ্চগঙ্গা তীর্থ নামে পরিচিত হয়। এই পঞ্চনদে স্নান করে পিতৃতর্পণ করে যে বিন্দুমাধবের অর্চ্চনা করে তার আর পূনর্জন্ম হয়না।
স্নাত্বা পঞ্চনদে তীর্থে কৃত্বা চ পিতৃতর্পণম্।
বিন্দু মাধবমভ্যর্চ্চ্য ন ভূয়ো জন্মভাগভবেৎ।। স্কন্দপুরাণ কাশীখন্ড ১৫৯/১২০
বিন্দুমাধব
দ্বাপর যুগে অগ্নিবিন্দু নামে এক ঋষি র তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান বিষ্ণু এই পঞ্চনদ তীর্থে প্রকট হন। ও ঋষির প্রার্থনায় বিন্দুমাধব বিগ্রহ রূপে অধিষ্ঠিত হন। স্কন্দপুরাণে ১৬০ অধ্যায়ে বর্ণনা আছে—
ভগবন্ সর্বগোঽপীহ তিষ্ঠ পঞ্চনদ হ্রদে।
হিতায় সর্ববস্তুনাং মুমুক্ষুণাং বিশেষতঃ।।
হে ভগবান আপনি সর্বত্রগ হলেও সর্বপ্রাণিগণের বিশেষতঃ মুমুক্ষু গণের হিতের জন্য এই পঞ্চনদ তীর্থে অবস্থান করুন।
।। শ্রীবিষ্ণুরুবাচ ।।
এবমস্ত্বগ্নিবিন্দোঽত্র ভবতা যদবৃতং মুনে।
ত্বন্নাম্নোঽর্দ্ধেন মে নাম ময়া সহ ভবিষ্যতি।। ৬৬
বিন্দুমাধব ইত্যাখ্যা মম ত্রৈলোক্যবিশ্রুতা।
কাশ্যাং ভবিষ্যতি মুনে মহাপাপৌঘঘাতিনী।। ৬৭
যে মামত্র নরাঃ পুণ্যাঃ পুণ্যে পঞ্চনদে হ্রদে।
সদা সপর্য্যায়িষ্যস্তি তেষাং সংসারভীঃ কুতঃ।। ৬৮
শ্রীবিষ্ণু বললেন হে মুনে! অগ্নিবিন্দো! তুমি যা প্রার্থনা করলে তা ই হবে। আমার নামের সাথে তোমার নামার্দ্ধ মিলিত হবে। কাশীতে আমার ত্রিলোক বিখ্যাত বিন্দুমাধব নাম হবে এই নামমহাপাপ সমূহ বিনাশ করে। যে পবিত্র মানবেরা এই পবিত্র পঞ্চনদহ্রদে আমার সর্বদা পূজা করে তাদের সংসার ভয় কোথায়?
পঞ্চগঙ্গা ঘাটের সিঁড়ি দিয়ে উঠে বিন্দুমাধব মন্দির দর্শন হল। বিন্দুমাধব একটি মাত্র শালগ্রাম শিলা দ্বারা গঠিত স্বয়ং প্রকট বিগ্রহ। প্রাচীন বিন্দুমাধব মন্দির ঔরঙ্গজেব ধ্বংস করে আলমগীর মসজিদ নির্মাণ করে। আলমগীর মন্দিরের আকৃতি দেখে সুবিশাল বিন্দুমাধব মন্দিরের শোভা অনুমান করা যায়। বর্তমানে বিন্দুমাধব এক গৃহস্থ বাড়িতে সেবিত হচ্ছেন। বিন্দুমাধবের সামনে অগ্নিবিন্দু ঋষির সেবিত বিশাল লক্ষ্মী নৃসিংহ শালগ্রাম শিলা আছে।
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভূ বারানসী তে থাকাকালীন প্রতিদিন পঞ্চনদে স্নান করতেন ও বিন্দুমাধব দর্শন করে হরিনাম সঙ্কীর্তন করতেন। চৈতন্য চরিতামৃতে বর্ণনা আছে —
হেনকালে মহাপ্রভু পঞ্চনদে স্নান করি।
দেখিতে চলিয়াছেন বিন্দুমাধব হরি।।
মাধব সৌন্দর্য্য দেখি আবিষ্ট হইলা।
অঙ্গনেতে আসি প্রেমে নাচিতে লাগিলা।।
শেখর, পরমানন্দ, তপন, সনাতন।
চারিজন মিলি করে নাম সঙ্কীর্তন।।
হরি হরয়ে নমঃ কৃষ্ণ যাদবায় নমঃ।
গোপাল গোবিন্দ রাম শ্রীমধুসূদন।। (মধ্য/২৫/৬৩)
গোপীগোবিন্দ
বিন্দুমাধব দর্শন করে আবার ঘাটের সিঁড়ি দিয়ে নেমে পরের ঘাট লালঘাটে এলাম। লালঘাটের সিঁড়িতেই গোপীগোবিন্দ দেবের প্রাচীন বিগ্রহ দর্শন করলাম। স্কন্দপুরাণে বর্ণনা আছে—
গোপীগোবিন্দতীর্থং চ গোপীগোবিন্দপূর্বতঃ।
স্নাত্বা তত্র সমভ্যর্চ্চ্য বিষ্ণুং বিষ্ণুপ্রিয়ো ভবেৎ।। ৫৭
গোপীগোবিন্দ দেব ও তার পূর্বদিকে অবস্থিত গোপীগোবিন্দ তীর্থে স্নান করে যে বিষ্ণুপূজা করে সে বিষ্ণুপ্রিয় হয়।
নারদ কেশব
এরপর প্রহ্লাদ ঘাটে পৌছে সিঁড়ি দিয়ে উঠেই সামনে একটি শীতলা মন্দির আছে এই মন্দিরের মধ্যে নারদকেশব বিগ্রহ দর্শন করলাম। স্কন্দ পুরাণে বর্ণনা আছে—
তদগ্রে নারদং তীর্থং মহাপাতকনাশনম্।
ব্রহ্মবিদ্যোপদেশং চ প্রাপ্তবান্ যত্র নারদঃ।। ৪৫
তত্র স্নাতো নরঃ সম্যক্ ব্রহ্মবিদ্যামবাপ্নুয়াৎ।
কেশবাত্তেন তত্রোক্তঃ কাশ্যাং নারদকেশবঃ।। ৪৬
অর্চয়িত্বা নরো ভক্ত্যা দেবং নারদকেশবম্।
জনন্যা জঠরং পীঠমধ্যাস্তে ন কদাচন।। ৪৭
নারদ যেখানে কেশবের কাছে ব্রহ্মবিদ্যা উপদেশ লাভ করেন সেই মহাপাতকনাশন নারদতীর্থে স্নান করলে সম্পূর্ণ রূপে ব্রহ্মবিদ্যা প্রাপ্ত হয়। এজন্য কাশীতে সেই কেশব নারদকেশব নামে অভিহিত হন। মানব ভক্তি সহকারে এই নারদকেশব দেবের পূজা করলে তার আর জননী জঠরে বাস হয়না।
প্রহ্লাদ কেশব
ঐ শীতলা মন্দিরের বিপরীত দিকেই প্রহ্লাদেশ্বর মহাদেব মন্দির আছে। প্রহ্লাদেশ্বর মন্দিরের মধ্যে প্রহ্লাদ কেশব বিগ্রহ দর্শন করলাম। স্কন্দ পুরাণে বর্ণনা আছে—
প্রহ্লাদতীর্থং চস্যাগ্রে যত্র প্রহ্লাদকেশবঃ।
তত্র শ্রাদ্ধাদিকং কৃত্বা বিষ্ণুলোকে মহীয়তে।। ৪৮
নারদকেশব তীর্থের নিকটে প্রহ্লাদ তীর্থ আছে। সেখানে প্রহ্লাদকেশব বর্ত্তমান আছেন। সেখানে শ্রাদ্ধাদি কর্ম করলে বিষ্ণুলোকে বাস হয়।
বিদার নরসিংহ
এরপর মেন রোডে উঠে বিড়লা হসপিটালের কাছে গিয়ে বিদার নরসিংহ বিগ্রহ দর্শন করলাম। স্কন্দপুরাণে এই বিদার নরসিংহ দেবের মাহাত্ম্য বর্ণিত আছে যে—
বিদারনারসিংহাখ্যং তত্র তীর্থং সুনির্ম্মলম্।
স্নাতো বিদারয়েত্তত্র পাপং জন্মশতার্জ্জিতম্।। ৫৬
বিদার নরসিংহ নামক সুনির্ম্মল তীর্থে স্নান করলে শতজন্মার্জ্জিত পাপ বিদীর্ণ হয়।
আদিকেশব মন্দির
এখান থেকে ২ কিলোমিটার দূরে ব্যাটারী রিক্সা ধরে আদিকেশব মন্দির দর্শনে গেলাম। আদিকেশব মন্দিরের কাছে বরুণা ও গঙ্গা নদীর সঙ্গম আছে। স্কন্দ পুরাণ কাশীখন্ড উত্তরার্দ্ধে বর্ণনা রয়েছে— ভগবান বিষ্ণু কাশীতে প্রথম পদার্পন করেন এই গঙ্গা বরুণা সঙ্গম ঘাটে। তাই এই স্থান বিষ্ণু পাদোদক তীর্থ নামে পরিচিত হয়।
গঙ্গাবরণয়োর্বিষ্ণুঃ সম্ভেদে স্বচ্ছমানসঃ।
প্রক্ষাল্য পাণিচরণং সচৈলঃ স্নাতবানথ।। ১৭
তদা প্রভৃতি তত্তীর্থং পাদোদকমিতীরিতম্।
পাদৌ যদাদৌ শুভদৌ ক্ষালিতৌ পীতবাসসা।। ১৮
তত্র পাদোদকে তীর্থে যে স্নাস্যন্তীহ মানবাঃ।
তেষাং বিনশ্যতি ক্ষিপ্রং পাপং সপ্ত ভবার্জ্জিতম্।। ১৯
শ্রী বিষ্ণু গঙ্গা ও বরুণার সঙ্গমস্থলে হস্তপাদ প্রক্ষালন পূর্বক স্নান করলেন। পীতাম্বর শ্রী বিষ্ণু প্রথমে মঙ্গলপ্রদ স্বীয় চরণদ্বয় সেখানে প্রক্ষালিত করায় সেই তীর্থ বিষ্ণুপাদোদক তীর্থ নামে অভিহিত হয়েছে। যেসব মানুষ সেই পাদোদক তীর্থে স্নান করে তাদের সপ্তজন্মার্জ্জিত পাপ শীঘ্র বিনষ্ট হয়।
এখানে ভগবান তার নিজ বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন যা আদিকেশব নামে পরিচিত।
কৃত্যনিত্যক্রিয়ো বিষ্ণুঃ সলক্ষ্মীকঃ সকাশ্যপিঃ।
উপসংহৃত্য তাং মূর্ত্তিং ত্রৈলোক্যব্যাপিনীং তথা।। ২৭
বিধায় দার্ষদীং মূর্ত্তিং স্বহস্তেনাদিকেশবঃ।
স্বয়ং সম্পূজয়ামাস সরৃবসিদ্ধিসমৃদ্ধিদাম্।।২৮
আদিকেশব নাম্নীং তাং শ্রীমূর্ত্তিং পারমেশ্বরীম্।
সম্পূজ্য মর্ত্ত্যো বৈকুন্ঠং মন্যতে স্বগৃহাঙ্গনম।। ২৯
অনুবাদ:- তারপর ভগবান বিষ্ণু ত্রৈলোক্যব্যাপিনী নিজ মূর্তি সম্বরণ করে স্বহস্তে প্রস্তরময়ী লক্ষ্মী গরুড় সমভিব্যাহারে আদিকেশব মূর্ত্তি নির্মাণ করলেন। আদিকেশব নামক সেই পরমেশ্বরের শ্রীমূর্ত্তি পূজা করলে মানবের নিজ গৃহপ্রাঙ্গন বৈকুন্ঠবৎ বোধ হয়।
স্কন্দ পুরাণে একটি কাহিনী আছে যে একবার কাশীতে রিপুঞ্জয় নামে এক রাজা ছিল, তিনি অমরত্ব পাওয়ার জন্য কঠিন তপস্যা করেন। তার তপস্যার তেজ প্রভাবে কাশীতে খরা হয়ে যায়, সৃষ্টি নষ্ট হয় দেখে ব্রহ্মা তাকে বর দিতে চাইলে রিপুঞ্জয় অমরত্ব বর চেয়ে বসে। ব্রহ্মা তাকে অমরত্ব দিতে না চাইলে সে বলে কাশীতে তার একচ্ছত্র রাজত্ব দিতে, এখানে কোনো দেবতার পূজা হবেনা। ব্রহ্মা তাকে বলে যদি তুমি ধর্ম পরায়ণ হয়ে রাজত্ব করো, তোমার রাজত্বে প্রজারা ধার্মিক থাকে তবেই তুমি কাশীর একচ্ছত্র আধিপত্য পাবে। রিপুঞ্জয় তাতে রাজি হলে ব্রহ্মা তার রাজ্যাভিষেক করেন ও দিবোদাস নাম দেন। রাজা দিবোদাস দশটি অশ্বমেধ যজ্ঞ করে সারা জম্বুদ্বীপ জয় করে নিজেকে চক্রবর্ত্তী সম্রাট ঘোষণা করেন। তার যজ্ঞে ব্রহ্মা পৌরহিত্য করেন। কাশীতে এই দশাশ্বমেধ ঘাট খুবই বিখ্যাত। এদিকে ব্রহ্মার বরের কারনে সকল দেবগণ এবং দেবাদিদেব মহাদেব কে ও কাশী ছেড়ে চলে যেতে হয়। আর দিবোদাস ও ধর্মপরায়ণ হয়ে প্রজা পালন করতে থাকে। কিন্তু কাশী শিবের খুব প্রিয় স্থান তাই তিনি কাশীতে ফিরে আসতে চাইলেও ব্রহ্মার বরের কারনে ফিরতে পারছিলেন না। দেবতারা ও কাশীতে ফিরতে চাইছিলেন তাই তারা ভগবান বিষ্ণুর কাছে গেলেন। তাদের প্রার্থনা শুনে সর্বজীবপালক ভগবান লক্ষ্মী ও গরুড় দেব সহ কাশীতে আবির্ভূত হয়ে গঙ্গা বরুণা সঙ্গম স্থলে প্রথম চরণ স্থাপন করলেন। তাই এই স্থান বিষ্ণুপাদোদক তীর্থ নামে পরিচিত হল। এখানে তিনি নিজ বিগ্রহ আদিকেশব দেব প্রতিষ্ঠা করলেন ও নিজ অংশাংশের অংশ থেকে বুদ্ধ অবতার গ্রহণ করলেন।
তস্যাং মূর্ত্তৌ সমাবেশ্য কৈশব্যামথকেশবঃ।
শম্ভোঃ কার্য্যে কৃতমনা অংশাংশাংশেন নির্গতঃ।। ৬৬
কেশব সেই আদিকেশব মূর্ত্তিতে সমাবিষ্ট হয়ে শিবের অনুরোধে কাশীক্ষেত্র উদ্ধার করতে কৃতমনা হয়ে অংশাংশের অংশ রূপে নির্গত হলেন।
শ্রীপতি নারায়ণ বুদ্ধ অবতার রূপে আবির্ভূত হলেন। লক্ষ্মী দেবী অতি সুন্দর পরিব্রাজিকা হলেন, ও গরুড় দেব মহাপ্রাজ্ঞ পূণ্যকীর্ত্তি নামক বৌদ্ধভিক্ষু হলেন। এই সময় তান্ত্রিক ধর্মের প্রচার হওয়ায় বৈদিক ধর্মের সাথে তন্ত্র যুক্ত হয়ে যজ্ঞের নামে পশুবলি শুরু হয়। তাই এই ধর্মের এই গ্লানি দূর করতে ও বুদ্ধ অবতারের প্রয়োজন ছিল। কাশীর কিছু উত্তর দিকে ধর্মক্ষেত্র নামক স্থানে (সারনাথ) বুদ্ধ রূপে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেন।
কিঞ্চিৎ কাশ্যা উদীচ্যাং চ গত্বা দেবেন চক্রিণা।
স্বস্থিত্যৈ কল্পিতং স্থিনং ধর্মক্ষেত্রমিতীরতম্।। ৭১
শ্রীঃ পরিব্রাজিকা জাতা নিতরাং সুভগাকৃতিঃ। ৭৩
গরুত্মানপি তচ্ছিষ্যো জাতো লোকোত্তরাকৃতিঃ।। ৭৪
এভাবে ভগবান শ্রী নারায়ণ বুদ্ধ অবতারে কাশীর লোক দের বেদ বিরুদ্ধ বিভ্রান্তিকর পথে চালিত করলেন, রাজা দিবোদাস ও তার কাছে দীক্ষা নিয়ে বেদ বিরুদ্ধ বৌদ্ধ মত অনুসরণ করতে লাগলেন। তাই ব্রহ্মার বর অনুসারে রাজা অধার্মিক হওয়ায় শিব সহ অন্যান্য দেবতারা কাশীতে পুনরায় অধিষ্ঠিত হলেন।
আদিকেশব ক্ষেত্র থেকে অল্প দূরেই এই সারনাথ অবস্থিত। পরে সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করে বুদ্ধদেবের প্রথম ধর্ম প্রচার স্থান সারনাথে ধর্মচক্র ও অশোক স্তম্ভ স্থাপন করেন।
বারাণসী তে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু বৈঠক, চৈতন্যবট