SU_BEN_1.1

SU_BEN_1.1

<<<Main menu            Next verse>>>

প্রথম অধ্যায় 


মন্ত্র ১
ॐ ব্রহ্মবাদিনো বদন্তি—
কিং কারণং ব্রহ্ম কুতঃ স্ম জাতাঃ
জীবাম কেন ক্ব চ সম্প্রতিষ্ঠাঃ।
অধিষ্ঠিতাঃ কেন সুখেতরেষু
বর্ত্তামহে ব্রহ্মবিদো ব্যাবস্থাম্।। ১/১ 
অনুবাদ:- একবার ব্রহ্মবাদী মুনি ঋষিগণ মিলিত হয়ে পরস্পর জিজ্ঞাসা করলেন— জগৎকারণ ব্রহ্ম কি প্রকার? আমরা কোথা থেকে জন্মেছি? কার সহয়তায় আমরা জীবিত আছি? কার‌ মধ্যে আমাদের লয় হবে? কার দ্বারা আমরা পরিচালিত হয়ে দুঃখবহুল জীবনযাপন করছি? 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- 
অতসীগুচ্ছসচ্ছায় মঞ্জিতোরঃস্থলং শ্রিয়া।
অঞ্জনাচলশৃঙ্গারমঞ্জলির্মম গাহতাম্।।
ব্যাসং লক্ষণযোগীন্দ্রং প্রণম্যান্যান্ গুরূনপি।
শ্বেতাশ্বতর মন্ত্রাণাং বিবৃতিং করবাণ্যহম্।।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- ভাষ্যের মঙ্গলাচরণে পরমতত্ত্ব ও ইষ্ট নির্দেশ করছেন। অতসী পুষ্পের ন্যায় অত্যন্ত মনোহর শ্রী ভগবানের শ্যামবর্ণ বক্ষস্থল শ্রীদেবী দ্বারা সুশোভিত। শ্রী ব্যেঙ্কটেশ ভগবান অঞ্জনাচল বা বেঙ্কটাদ্রির শৃঙ্গার স্বরূপ। তিনি আমার প্রণাম স্বীকার করুন। ভগবানের স্তুতি করে পূর্বাচার্য্য গণের স্তুতি করতে বলছেন শ্রী ব্যাসদেব, শ্রীরামানুজাচার্য্য ও অন্যান্য পূর্বাচার্য্য গণকে প্রণাম করে আমি শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ব্যাখ্যা করছি। 
শ্বেতরসমস্তচেতনাচেতনবিলক্ষণ পরমাত্মস্বরূপ নির্দিধারয়িষয়েয়মুপনিষদারভ্যতে, বিদ্যাস্তুত্যর্থমাখ্যায়িকামাহ।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- সমস্ত চেতন ও অচেতনবস্তু যার থেকে ভিন্ন ও যিনি এই উভয়বিধ বস্তু থেকে বিলক্ষণ সেই পরমাত্মবস্তুর স্বরূপনির্ধারণ করতে এই উপনিষদ আরম্ভ করা হচ্ছে। এই পরমাত্মাবিষয়ক বিদ্যা, স্তুতি অর্থ ও রূপক বলা হচ্ছে।  
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- ব্রহ্মবাদনশীলা মুনয়ো বক্ষ্যমাণ প্রকারেণ বদন্তিস্ম ইত্যর্থঃ— হে ব্রহ্মবিদঃ জগতঃ কারণং ব্রহ্ম কিং দেবতারূপং? কস্মাদব্রহ্মণোঽস্মাকং জন্মস্থিতিশ্চ সম্প্রতিষ্ঠাশব্দিতো লয়শ্চ কেন বা ব্রহ্মণাধিষ্ঠিতা স্তৎপরতন্ত্রাঃ সন্তঃ জিহাসিতেষু দুঃখরূপেষু কষ্টরূপেষু জন্মসু বিশিষ্টামবস্থিতিমনুসৃত্য বর্ত্তামহে।‌ সুপ্রতিষ্ঠা ইতি পাঠেঽপ্যয়মেব অর্থঃ।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- একবার ব্রহ্মবাদী মুনিগণ একত্রিত হয়ে নিম্নোক্ত প্রকারে পরষ্পর জিজ্ঞাসা করলেন। (ঋষিরা পরষ্পরের মধ্যে চারটি প্রশ্ন আলোচনা করেছিলেন।) 
হে ব্রহ্মবিদগণ! জগৎকারণ ব্রহ্মবস্তুটি কি প্রকার? অর্থাৎ ইহার স্বরূপ কি প্রকার? কোন ব্রহ্ম হতে আমাদের জন্ম স্থিতি এবং কোন ব্রহ্মে আমাদের লয়? সম্প্রতিষ্ঠা শব্দে লয় বোঝাচ্ছে। কোন‌ ব্রহ্ম কর্ত্তৃক পরিচালিত হয়ে তাঁর পরতন্ত্ররূপে বর্জনীয় দুঃখরূপ কষ্টদায়ক জন্ম প্রাপ্ত হয়ে সেইরূপ জন্ম অনুসরণ করে আমরা অবস্থান করছি। সম্প্রতিষ্ঠার স্থানে সুপ্রতিষ্ঠা পাঠ ধরলেও একই অর্থ হয়। ১/১
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:-  ননু কারণং ব্রহ্ম সিদ্ধবৎ কৃত্যং, কিং দেবতারূপমিতি প্রশ্ন এবানুপপন্নঃ তস্যৈবানভ্যুপগন্তব্যত্বাৎ, লোকে হি কালজ্ঞাঃ কালমেবহি সর্বকারণমাচক্ষ্যতে লোকায়তিকাস্তু স্বভাবহেতুমাচক্ষ্যতে মীমাংসকাস্তু নিয়তিলক্ষণং কর্মৈব হেতুং মন্যন্তে অপরে অহেতুকত্বলক্ষণং যাদৃচ্ছিকত্বং অপরে পঞ্চভূতানি প্রকৃতিমেব বা কেচিৎ পুরুষং কেচিদাচক্ষ্যতে তেষামন্যতমঃ পক্ষোস্তু কিং ব্রহ্মকারণবাদাভ্যুপগমেন ইত্যাশঙ্কাহ। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- যদি প্রশ্ন হয় যে ব্রহ্ম যে কারণবস্তু তা তো স্বতঃসিদ্ধ। আর ব্রহ্মবিদগণ তো তার স্বরূপ জানেনই। তাহলে  ব্রহ্মের স্বরূপ কি প্রকার এইরূপ প্রশ্নের তো কোনো প্রয়োজন ই হয় না। তার উত্তরে বলা হচ্ছে জগতে কালজ্ঞ পুরুষগণ কাল কে ই সর্ব কারণ বলে থাকেন। চার্বাকাদি লোকায়তিকগণ স্বভাবকেই কারণ বলে থাকেন। মীমাংসক গণ নিয়ত যে কর্ম তাকে কারণ মনে করে। আর কেউ মনে করে যে এই জগৎ সৃষ্টির কোনো কারণ নেই।‌ এটি যাদৃচ্ছিক ভাবে সৃষ্ট।‌ কেউবা পঞ্চভুতকে কেউ বা প্রকৃতি কে কেউ বা পুরুষকে জগৎ সৃষ্টির হেতু বলে থাকেন। এইসকল বিভিন্ন কারণবাদী থেকে পৃথক বেদান্তবাদী গণ ব্রহ্মকেই জগৎ কারণ বলে থাকেন। পরবর্তী মন্ত্র সমূহে বিভিন্ন কারণবাদ কে খন্ডন করা হয়েছে। 

*আচার্য্য এখানে কালজ্ঞা বলতে শৈব মতবাদের কথা বলেছেন। যারা মনেকরে কাল ই সৃষ্টি ও সংহারের কারন। অথর্ববেদ এ কালসূক্ত ১৯/৬/৮-৯ দেখিয়ে শৈব রা বলে কাল ই পরম তত্ত্ব। আসলে কাল ব্রহ্মের দ্বারা চালিত হয়। তা পরবর্তী মন্ত্রে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।