SU_BEN_1.10

SU_BEN_1.10

<<<Previous verse             Next verse>>>

মন্ত্র১০ 
ক্ষরং প্রধানমমৃতাক্ষরং হরঃ
ক্ষরাত্মানাবীশতে দেব একঃ।
তস্যাভিধ্যানাদযোজনাৎ তত্ত্বভাবাদ্
ভূয়শ্চান্তে বিশ্বমায়ানিবৃত্তিঃ।। 
অনুবাদ:- প্রধান বা প্রকৃতি হচ্ছে ক্ষরণশীল বা পরিণামী। মরণরহিত জীবাত্মা অক্ষর অর্থাৎ কোন পরিণামরহিত। ইনি প্রকৃতিজাত ভোগ্যবস্তুর ভোক্তা বা হরণকারী‌ তাই হর পদবাচ্য। এক অদ্বিতীয় দেবতা উক্ত ক্ষরবস্তু প্রকৃতির ও অক্ষরবস্তু আত্মার নিয়ামক। এভাবে পরমাত্মার বারংবার অভিধ্যান ও‌ যোগের দ্বারা যথাতত্ত্ব আবির্ভূত হলে দেহান্তে সমস্ত প্রকৃতিসম্বন্ধ নিবৃত্তি হয়। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- প্রধানং প্রকৃতিরিতি প্রধানশব্দিতাপ্রকৃতিঃ ক্ষরমিত্যুচ্যতে, ভোগ্যমাত্মনোভোগার্থং হরতীতি হরো জীবঃ অমৃতাক্ষরং অমৃতত্বাৎ মরণধর্মশূণ্যত্বা দক্ষরমিত্যর্থঃ ক্ষরাক্ষরশব্দিত চেতনাচেতনবর্গেশিতা অপহতপাপ্মাদিব্যো দেব একো নারায়ণ ইতি নির্দিষ্টো নারায়ণ ইত্যর্থঃ। অভিধ্যানমারম্ভন সঁশীলনং যোজনং যোগঃ তত্ত্বভাবস্তত্ত্বাবির্ভাবঃ এতৈরন্তে শরীরাবসানে ভূয়ঃ সমস্ত প্রকৃতি সম্বন্ধনিবৃত্তিরিত্যর্থঃ। ততশ্চ ‘ত্রয়ং যদা বিন্দতে ব্রহ্মমেতৎ' ইতি মন্ত্রোক্তামুক্তির্ব্রহ্মোপাসীনকান ব্রহ্মানুভবরূপ ইত্যর্থঃ।।১/১০
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- ‘প্রধান অর্থাৎ প্রকৃতি' এই বাক্য অনুযায়ী প্রধান শব্দ দ্বারা যে প্রকৃতি কে বোঝায় তা ক্ষর নামে অভিহিত। এই প্রকৃতিজাত ভোগ্যবস্তুকে নিজের ভোগের জন্য যে হরণ করে সেই জীব কে হর বলা হয়। এই জীব মরণধর্মশূণ্য তাই অক্ষর বলাহয়। এই ক্ষর ও অক্ষর নামক অচেতন ও চেতন বর্গের নিয়ামক হচ্ছেন নারায়ণ, যার সম্পর্কে শ্রুতিতে বলা হয়েছে— ‘পাপবিরহিত দিব্য দেবতা অদ্বিতীয় নারায়ণ'। অভিধ্যান মানে জ্ঞানলাভের আরম্ভকরণে সম্যক অনুশীলন , যোজনং অর্থে সংযোগ অর্থাৎ এই তিনটি তত্ত্ব বিষয়ে বারংবার অনুচিন্তন, তত্ত্বভাব মানে তত্ত্বের আবির্ভাব। উপরোক্ত চিৎ, অচিৎ ও ঈশ্বর এই তিনটি তত্ত্বের যথার্থ আবির্ভাব বা প্রত্যক্ষ সমান দর্শন হয় পুনঃ পুনঃ মনন ও নিদিধ্যাসনাদির সংযোগে। বারংবার সংশীলনজনিত  এই সকল তত্ত্বের প্রত্যক্ষের ন্যায় দর্শনের জন্য শরীরাবসানে প্রকৃতিসম্বন্ধের নিবৃত্তি হয়, মুক্তিলাভ হয়। এবং তারপর “এই তত্ত্বত্রয়কে জানতে পারলে সেই জীব তখন ব্রহ্ম হয়" এই পূর্বমন্ত্রোক্ত বাক্য অনুসারে তখন মুক্তি হয় অর্থাৎ সিদ্ধ ব্রহ্মোপাসকগণের ব্রহ্মানুভবের মতো দশা প্রাপ্ত হয়।