<<<Previous verse Next verse>>>
মন্ত্র ১১
মন্ত্র ১১
জ্ঞাত্বাদেবং সর্বপাশাপহানিঃ
ক্ষীণৈঃ ক্লেশৈর্জন্মমৃত্যুপ্রহাণিঃ।
তস্যাঽভিধ্যানাত্তৃতীয়ং দেহভেদে
বিশ্বৈশ্বর্য্যং কেবল আপ্তকামঃ।। ১/১১
অনুবাদ:- দেবতাকে জানলে সর্বপাপের বিনাশ হয়। সমস্ত ক্লেশসহ জন্মমৃত্যুর প্রকৃষ্ট বিনাশ হয়। বারংবার অনুচিন্তনের দ্বারা এই দেবতার বিষয়ে জ্ঞানলাভ হলে তখন ভিন্নদেহ প্রাপ্ত হয়ে তৃতীয় ঐশ্বর্য্যের অধিকারী হয়। ও কৈবল্যমুক্তি লাভ করে আপ্তকাম হয়।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- দেবং জ্ঞাত্বা দর্শনসমানাকারজ্ঞানেন বিষয়ীকৃত্য সর্বপাশশব্দিত পাপহানির্ভবতি তদধিগমউত্তরপূর্বাঘয়োরশ্লেষবিনাশাবিতি সূত্রে দর্শনসমানাকারজ্ঞানারমৃভসময়ে পূর্বোত্তর পূণ্যাপূণ্যকর্মণামুপাসনাবসানে ক্ষমিষ্যে ইতি ভগবৎসঙ্কল্পরূপাশ্লেষবিনাশৌ ভবত ইত্যুক্তেঃ ক্ষীণৈঃ ক্লেশসাধনশরীরেন্দ্রিয়াদিভিঃ সহ জন্মমৃত্যুপ্রাপককর্মণাং ক্ষান্তমিতি সঙ্কল্পরূপা প্রকৃষ্টা হানিরৃভবতি সাম্পরায়ে তর্ত্তব্যা ভাবাদিত্যত্র সকল পূণ্যাপূণ্যকর্মণাং দর্শনসমানাকারজ্ঞানারম্ভসময়ে ক্ষমিষ্যে ইতি ভগবৎসঙ্কল্পরূপা প্রকৃষ্ট হান্যভ্যুপগমাৎ তস্যাভিধ্যানপরমফলীভুতমপহতপাপমত্বাদি লক্ষণং বিশ্বাতিশায়িতৃতীয়ং ঐশ্বর্য্যং তু প্রাকৃতদেহভিন্ন শুদ্ধসত্ত্বময়দেহভেদে ভবতি, কেবলঃ প্রকৃতিসম্বন্ধবিনির্মুক্ত এব দেশবিশেষবিশিষ্টং ব্রহ্ম প্রাপ্যাপ্তকামো ভবতি ন তু প্রকৃতিমণ্ডল ইতি ভাবঃ।।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:-পূর্বোক্ত প্রকারে দেবতাকে জানা হলে অর্থাৎ প্রত্যক্ষ দর্শনের মতো জ্ঞানের দ্বারা বিদিত হলে সর্বপাশ, অর্থাৎ সর্বপাপ বিনষ্ট হয়। এই বিষয়ে শাস্ত্র সূত্রাকারে বলছে জ্ঞানলাভের পরবর্ত্তী প্রমাদজনিত পাপের অশ্লেষ বা সংশ্লেষের অভাব হয় ও পূর্ববর্তী পাপের বিনাশ হয়। প্রত্যক্ষ দর্শনের ন্যায় জ্ঞানের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী পূণ্য ও পাপরূপ কর্ম আমি ক্ষমা করব—শ্রী ভগবানের এইরূপ সঙ্কল্পের অনুরূপ অশ্লেষ ও বিনাশ হয়ে থাকে। উপাসনার দ্বারা ক্লেশ সাধনে দেহ ও ইন্দ্রিয়গণ ক্ষীণ হয়। ও জন্মমৃত্যুর কারণ যে কর্ম তা বিনষ্ট হয়। এভাবে ভগবানের সঙ্কল্প অনুসারে সঙ্কটত্রাণ হবে।
যেহেতু এখানে দেখা যাচ্ছে যে প্রত্যক্ষ দর্শনের মতো জ্ঞানোৎপত্তির সময় থেকে সমস্ত পাপপূণ্যের ক্ষমা করব এই ভগবানের সঙ্কল্প অনুসারে সকল কর্ম বিনষ্ট হয়। অতএব সেই পরমাত্মা ভগবানের অনুধ্যানে পরমফলরূপ পাপরাহিত্য প্রভৃতি লক্ষণ বিশিষ্ট জড়জগতের অতীত তৃতীয় ঐশ্বর্য্য অর্থাৎ অপ্রাকৃত ঐশ্বর্য্য লাভ হয়। এই তৃতীয় ঐশ্বর্য্য কিন্তু প্রাকৃত দেহ বিনাশের পরে তার পরিবর্তে প্রাপ্ত, ও তা থেকে ভিন্ন শুদ্ধসত্ত্বময় দেহেই লাভ হয়ে থাকে। ‘কেবল' শব্দের অর্থ প্রাকৃত দেহ, ইন্দ্রিয়াদি সম্বন্ধ বিনির্মুক্ত হয়ে অপ্রাকৃত দেশবিশেষ বিশিষ্ট ব্রহ্মবস্তুকে প্রাপ্ত হয়ে আপ্তকাম হওয়া। এই আপ্তকাম হওয়া প্রকৃতি মণ্ডলের মধ্যে হওয়া সম্ভব নয়।