<<<Previous verse Next verse>>>
মন্ত্র ১২
মন্ত্র ১২
এতজ্জ্ঞেয়ং নিত্যমেবাত্মসংস্থং
নাতঃপরং বেদিতব্যং হি কিঞ্চিৎ।
ভোক্তা ভোগ্যং প্রেরিতারং চ মত্বা
সর্বং প্রোক্তং ত্রিবিধং ব্রহ্মমেতৎ।।
অনুবাদ:- ইতিপূর্বে বর্ণিত পরব্রহ্ম জীবাত্মার মধ্যে অন্তর্যামী রূপে অবস্থিত আছেন বলে জানতে হবে। এইপ্রকারে যিনি জানেন তার আর অন্য কোন জ্ঞাতব্য বিষয় নেই। ভোক্তা জীবের শরীরী, ভোগ্যবস্তু প্রকৃতির শরীরী এবং প্রেরিতা ঈশ্বর এই তিনপ্রকার এই ত্রিবিধ তত্ত্ব বিশিষ্ট ব্রহ্মকে যিনি জানেন তিনি ব্রহ্ম অর্থাৎ মুক্ত হন।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- এবম্ভূতং পরংব্রহ্ম আত্মনি অন্তর্য্যামিতয়া সংস্থিতং জ্ঞেয়ং জ্ঞানবতশ্চ জ্ঞাতব্যান্তরং নাবশিষ্যতে। ভোক্তৃশরীরকত্বং ভোগ্যশরীরকত্বং অপহতপাপ্মত্বাদিবিশিষ্টসত্যজ্ঞানাদিস্বরূপত্বমিতি বিধাত্রয়বিশিষ্টং ব্রহ্ম জ্ঞাতব্যমিতি বেদার্থসংগ্রহে বর্ণিতম্, কেচিৎভোক্তা ভোগ্যং প্রেরিতেতি এবং ত্রিবিধং প্রোক্তমেতৎ সর্বং মত্বা ব্রহ্ম ভবতিমুক্তো ভবতি ইত্যর্থঃ ইত্যুপসংহার ইতি বদন্তি। প্রেরিতেতি বক্তব্যে প্রেরিতারমিতি ছান্দসং রূপং।। ১/১২
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- এই রূপ যে পরমব্রহ্ম আত্মার মধ্যে অন্তর্যামীরূপে সম্যক অবস্থিত তিনিই জ্ঞেয়। এই জ্ঞেয়বস্তুকে যিনি জেনেছেন তার আর অপর কোনো জ্ঞাতব্য বস্তু থাকেনা। আচার্য্য রামানুজ তার বেদার্থসংগ্রহ গ্রন্থে ভোক্তা, ভোগ্য ও প্রেরিতা এই তিনটি শব্দের অর্থ করেছেন যে ভোক্তা হলো জীব, ভোগ্য হলো পরিণামশীল প্রকৃতি ও এই উভয়ের প্রেরক হলেন ব্রহ্ম। এবং ব্রহ্ম এই জীব ও প্রকৃতি অর্থাৎ ভোক্তা ও ভোগ্য উভয় শরীরের শরীরী। এই ত্রিবিধরূপে ব্রহ্মকে যিনি জানেন তিনি ব্রহ্ম হন অর্থাৎ জীবন্মুক্ত হন। মন্ত্রে প্রেরিতা শব্দের পরিবর্তে প্রেরিতারং শব্দ আর্ষ প্রয়োগ বা বৈদিক প্রয়োগ।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- ন তু এতজজ্ঞেয়ং নিত্যমেবাত্মসংস্থমিত্যনুপপন্নং আত্মসংস্থপরস্যানুপলম্ভাদিত্যাশংক্য যথারণিগতস্য বহ্নেঃ প্রত্যক্ষেণানুপলম্ভেঽপি মথনে ধূমোপলম্ভনাৎ ন তৎসত্তাপহ্নবার্হা এবং প্রত্যক্ষাদ্যগ্রাহিস্যাপি আত্মস্থস্য পরমাত্মাত্মনঃ প্রণবনির্মথনে উপলম্ভ্যমানত্বান্নতৎসত্তাপহ্নবার্হেত্যাহ।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- যদি প্রশ্ন হয় যে পরব্রহ্ম নিত্য আত্মার মধ্যে অন্তর্যামীরূপে সম্যকস্থিত তিনি ইন্দ্রিয় দ্বারা গ্রাহ্য নন অতএব তিনি কি করে জ্ঞেয় হতেপারেন? তার উত্তরে বলা হচ্ছে যেমন কাঠের মধ্যে অগ্নি থাকলে ও তার প্রত্যক্ষ উপলব্ধি হয় না। কিন্তু তাদের ঘর্ষণে ধোঁয়া উৎপন্ন হতে দেখা যায় বলে কাঠের মধ্যে থাকা অগ্নি সত্ত্বা প্রকট হয়ে পড়ে। সেরকম আত্মার মধ্যে স্থিত পরমাত্মা প্রত্যক্ষ ইন্দ্রিয়ের অগোচর হলে ও এই দেহে প্রণব কে উত্তম রূপে মথন করলে তার উপলব্ধি হয়ে থাকে। অতএব এই অন্তরাত্মা পরমাত্মার সত্ত্বা প্রকাশিত হয়। পরবর্তী মন্ত্রে তা বলা হয়েছে।