কালঃ স্বভাবো নিয়তির্যদৃচ্ছা
ভূতানি যোনিঃ পুরুষ ইতি চিন্ত্যম্।
সংযোগ এষাং ন ত্বাত্মভাবা-
দাত্মাপ্যনীশঃ সুখদুঃখহেতোঃ।। ১/২
অনুবাদ:- জগৎ কারণ বস্তু সম্ভন্ধে অন্যান্য যে বিভিন্ন প্রকার মতবাদ আছে তা খন্ডন করে ব্রহ্ম কারণবাদ দৃঢ় করার উদ্দ্যেশ্যে এই মন্ত্রে সেই মতবাদ গুলিকে উল্লেখ করা হচ্ছে। কাল, স্বভাব, নিয়তি, যদৃচ্ছা, পঞ্চভূত বা প্রকৃতি ও পুরুষ বা জীবাত্মা অথবা প্রকৃতি ও পুরুষের সংযোগ জগৎ কারন কিনা তা চিন্তণীয়। অর্থাৎ তা নিশ্চয় করে বলা যায় না। তারা কেউই কারণ নয়। চেতন আত্মা ও কারণ নয় যেহেতু সে কর্মাধীন ও সুখ দুঃখের ভোক্তা।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- কালাদীনি কারণমিত্যেতন্ন যুক্তিসহং দোষাণাং, বহুনাং স্ফুরণাৎ, চিন্ত্যং ন নিশ্চেতুং শক্যং, অচেতনানাং চেতনস্য বা প্রত্যেকং হেতুত্বাসম্ভবাদিত্যর্থঃ, ননু এষাং সংযোগোহেতুর্ভবিতুমর্হতি ন চৈষাং সংযোজকাভাবঃ শঙ্কিতব্যঃ তেষাং মধ্যে আত্মনশ্চেতনস্য সংযোজকস্য সদ্ভাবেন সংযোগসম্ভবাদিত্যাশঙ্ক্য আত্মনঃ স্বাতন্ত্র্যে সুখভোক্তৃত্বমেবস্যাৎ ন দুঃখভোক্তৃত্বং অতঃ সুখদুঃখানুভবিতুর্জীবস্যাপি ন নিয়ন্তৃত্বং সম্ভবতীত্যাহ। উক্তোর্থঃ ন ত্বাত্মভাবাদিত্যত্র তু শব্দ এবার্থঃ আত্মসদ্ভাবাৎ সংযোগঃ সম্ভবতাত্যেতন্নৈবেত্যর্থঃ।। ১/২
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- কাল ইত্যাদিকে (স্বভাব, নিয়তি, যাদৃচ্ছিক ব্যাপারকে) জগৎকারণবস্তু বলাও যুক্তিযুক্ত নয়। এতে বহু দোষ দেখা যায়। এখানে চিন্ত্য শব্দটির অর্থ যা নিশ্চিত করে বলা যায় না। অচেতন জড় পদার্থ বা চেতন বস্তু আত্মা পৃথক পৃথক ভাবে জড় চেতনাত্মক জগতের কারণ হতে পারেনা। তা অসম্ভব। যদি বলা হয় যে এই জড় ও চেতনের সংযোগ জগত কারণ। কেননা চেতন বস্তু আত্মার তো জড়বস্তুর সাথে সংযুক্ত হওয়ার শক্তি আছে। না তা বলা যায়না কারণ আত্মা ভোক্তা, সে যদি স্বতন্ত্র ভাবে জড় বস্তুর সাথে সংযুক্ত হয় তাহলে সে কেবল সুখভোগ ই বেছে নেবে। দুঃখভোগ চাইবে না। কিন্তু জীবকে সুখ দুঃখ দুই ই ভোগ করতে হয়। তাই জীব নিয়ন্তা নয়। এই মন্ত্রে তু শব্দটি এব অর্থে প্রযোজ্য হয়েছে। অর্থাৎ জড়ের সাথে চেতন বস্তুর সংযোগ যে জগৎকারণের হেতু হতে পারে তা বলতে পারোনা।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- ব্রহ্মণোপ্যপরিণামিনঃ উপাদানত্বং চ ন সম্ভবতি ইতি—
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- ব্রহ্মবস্তু নির্বিকার অপরিনামী তাই ব্রহ্মের পক্ষে জগৎকারণ হওয়া সম্ভব নয়। এই আশঙ্কার উত্তরে পরবর্তী মন্ত্র বলা হচ্ছে—