SU_BEN_1.5

SU_BEN_1.5

<<<Previous verse             Next verse>>>

মন্ত্র ৫
পঞ্চস্রোতোহম্বুং পঞ্চযোন্যুগ্রবক্ত্রাং
পঞ্চপ্রাণোর্মিং পঞ্চবুদ্ধ্যাদিমূলাম্।
পঞ্চবর্ত্তাং পঞ্চদুঃখৌঘবেগাং
পঞ্চশদ্ভেদাং পঞ্চপর্বামধীমঃ।।
অনুবাদ:- ব্রহ্মাধিষ্ঠিত এই প্রকৃতি বা সংসার একটি নদীবিশেষ। এই নদীর জল পাঁচটি ধারা বিশিষ্ট।পঞ্চতন্মাত্র এই নদীর উগ্র প্রবাহমুখ, প্রাণাদি পাঁচটি তরঙ্গবিশিষ্ট। এর মূল হচ্ছে বুদ্ধি র কারন পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়। এই সংসার নদীতে পাঁচটি প্রতিকূল ঘূর্ণি বিদ্যমান। পঞ্চমহাভূত, পঞ্চপ্রকার দুঃখের আকররূপ এই নদীর বেগবতী প্রবাহ। এই নদীর পঞ্চাশটি বিভিন্ন ভেদ আছে, ও পাঁচটি পর্ব আছে। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- স্রোতোরূপেণ বিচ্ছিন্নতয়া প্রবর্ত্তমানানি তমোঽক্ষরাব্যক্তমহদহঙ্কাররূপাণি অম্বুস্থানীয়ানি যস্যাঃ সা তথোক্তা মহাভূতোপাদানতয়া যোনিভূতানি পঞ্চতন্মাত্রাণ্যেবোগ্রবক্ত্রাণি প্রবাহমুখরূপাণি যস্যাঃ সা পঞ্চযোন্যুগ্রবক্ত্রা প্রাণাপানাদয়ঃ পঞ্চোর্মিস্থানিয়া যস্যাঃ সা পঞ্চপ্রাণোর্মিঃ বুদ্ধের্জ্ঞানস্য আদিভূতানি পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়াণি মূলং যস্যাঃ সা পঞ্চবুদ্ধ্যাদিমূলা পঞ্চকর্মেন্দ্রিয়াণি আবর্ত্তস্থানীয়ানি যস্যাঃ সা পঞ্চবর্ত্তা পঞ্চমহাভূতানি অত্যন্ত প্রতিকূলতয়া প্রবর্ত্তমানানি ওঘোবেগস্থানীয়ানি যস্যাঃ সা পঞ্চদুঃখৌঘবেগা আকারাদি পঞ্চাশৎবর্ণলক্ষণানাম্ ভেদযুক্তা ‘তমোমোহোমহামোহস্তামিস্রঃ' ইতি পুরাণপ্রসিদ্ধপঞ্চবিধ সৃষ্টিলক্ষণপর্বপঞ্চকযুক্তাং ব্রহ্মাত্মিকাং প্রকৃতিং তদধিষ্ঠাতারং চ পরমাত্মানমধীমঃ স্মরাম ইতি অপশ্যন্নিতি পূর্বেণান্বয়ঃ।।
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- এই মন্ত্রে ঋষিরা ব্রহ্মে অধিষ্ঠিত প্রকৃতিকে স্রোতোস্বিনী নদী রূপে যেমন উপলব্ধি করেছিলেন তা বর্ণনা করা হয়েছে‌। এই স্রোতোস্বিনীর স্রোত অবিচ্ছিন্নভাবে প্রবাহিত। তমঃ, অক্ষর, অব্যাক্ত, মহৎ, অহঙ্কার এই পাঁচটি স্রোতোস্বিনীর জল। ক্ষিতি, অপ ইত্যাদি পঞ্চমহাভূতের উপাদানের কারণরূপী পঞ্চতন্মাত্র ই প্রকৃতিরূপ স্রোতোস্বিনীর উগ্র প্রবাহমুখ। প্রাণাদি বিবিধ চেষ্টা পঞ্চতরঙ্গ স্থানীয়। বুদ্ধি বা জ্ঞানের দ্বার স্বরূপ চক্ষু কর্ণ ইত্যাদি পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয় এই স্রোতোস্বিনীর মূল বা আদি উৎস। পঞ্চকর্মেন্দ্রিয় ইহার ঘুর্ণাবর্ত্ত স্বরূপ, অত্যন্ত প্রতিকূল ভাবে দুঃখফলদায়ী। পঞ্চমহাভূত এই নদী স্রোতের বেগ স্থানীয়। এটি বিভিন্ন পাঞ্চভৌতিক আকারাদি, পঞ্চাশপ্রকার ভেদযুক্ত। তমঃ, মোহ, মহামোহ, তমিস্র, এই প্রকার পুরাণপ্রসিদ্ধ পঞ্চপ্রকার লক্ষণবিশিষ্ট সৃষ্টি হল এই প্রকৃতি নদীর পঞ্চপর্ব। এই স্রোতোস্বিনী রূপী প্রকৃতির মধ্যে ব্রহ্ম আত্মা রূপে অধিষ্ঠিত। মুণিগণ এভাবে সেই প্রকৃতিকে ও তার মধ্যে অধিষ্ঠিত ব্রহ্মবস্তুকে ও স্মরণ করলেন ও দর্শন করলেন। তৃতীয় মন্ত্রে দর্শন করলেন‌ এই ক্রিয়ার প্রসঙ্গ এই মন্ত্র বিষয়েও প্রযোজ্য। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- এবং কিং কারণং ব্রহ্ম কুতঃস্ম জাতা ইতি চিন্তায়াং দেবাত্মশক্তিং যঃ কারণানি নিখিলানি ইতি অনেন চ দেবশব্দিত নারায়ণ এব সর্বকারণং অপরিণামিনোঽপি তস্য কারণত্বনির্বাহিকা প্রকৃতিরিতি বিস্তারো দর্শিতঃ অধিষ্ঠিতাঃ কেন সুখেতরেষ্বিতি চিন্তায়াঃ বিস্তারং দর্শয়তি। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- উপরোক্ত মন্ত্রে জগৎকারণ ব্রহ্মবস্তুটি কি প্রকারের ও কোন বস্তু হতে আমরা জাত এই প্রশ্নের উত্তরে দেবতার নিজ শক্তিই যে নিখিল জগতের উপাদান কারণ, দেবশব্দে নারায়ণ ই যে সর্বকারণ এবং এই বিচিত্র জগৎ সৃষ্টিতে এই অপরিণামী ব্রহ্মবস্তু নারায়ণের সৃষ্টি নির্বাহিকা শক্তি যে বিকাশশীল প্রকৃতি তা তৃতীয় মন্ত্রে সবিস্তারে বর্ণনা করা হয়েছে।‌ এখন এই দুঃখময় জন্মে কে আমাদের প্রেরণ করেছেন? এই বাকি প্রশ্নগুলির উত্তর ষষ্ঠ মন্ত্রে সবিস্তারে বলা হচ্ছে।