SU_BEN_1.6

SU_BEN_1.6

<<<Previous verse             Next verse>>>
মন্ত্র ৬
সর্বাজীবে সর্বসংস্থে বৃহন্তে
অস্মিন হংসো ভ্রাম্যতে ব্রহ্মচক্রে।
পৃথগাত্মানং প্রেরিতারঞ্চ মত্বা
জুষ্টস্ততস্তেনামৃতত্বমেতি।। ১/৬
অনুবাদ:- সর্বজীবের জীবন নির্বাহক ও সর্বজীবের আশ্রয়স্থল বৃহৎ ব্রহ্মচক্রে অর্থাৎ সংসার চক্রে যে হংসরূপী জীব অনাদিকাল থেকে ভ্রমণ করছে সে নিজ আত্মাকে এবং প্রেরিতা পরমাত্মাকে পৃথকবস্তু জানলে প্রীত হয়। ও পরমাত্মার কৃপায় মুক্তিলাভ করে। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- সর্বান্ আজীবয়তীতি সর্বাজীবং অনেন জীবাম কেন ইত্যস্যোত্তরং উক্তং ভবতি, সর্বেষাং সংস্থা সমাপ্তিঃ প্রলয়ো যস্মিন্ তৎ সর্বসংস্থং অনেন চ ক্ব চ সংপ্রতিষ্ঠা ইত্যস্য উত্তরং উক্তং ভবতি, বৃংহন্তে বৃহতীত্যর্থঃ অতশ্চ নিরতিশয় বৃহত্বাদেব সর্বসংস্থত্বাদিকং যুজ্যত ইতি ভাবঃ তাদৃশে ব্রহ্মরূপে চক্রে হংতি গচ্ছতি অনেকজন্মসহস্রসঞ্চরণশীল ইতি হংসো জীবঃ পরবশতয়া ভ্রাময়ন্ সর্বভূতানি যন্ত্রারূঢ়ানি মায়য়েত্যুক্তরীত্যা ব্রহ্মচক্রেণ ভ্রাম্যমানোঽয়ং ভ্রমতীত্যর্থঃ, এতজজ্ঞানস্য ফলমাহ পৃথগাত্মানং ইত্যাদিনা ইত্যুক্তরীত্যা ভ্রাময়িতৃত্বেন পরমাত্মানং তেন ভ্রাম্যমাণং তচ্ছরীরভুতং চ স্বাত্মানং পৃথক্ মত্বা জুষ্টতজ্জ্ঞানপ্রীতেন পরমাত্মনা প্রীত্যা বিষয়ীকৃতঃ সধ্ মুক্তিং প্রাপ্নোতি ইত্যর্থঃ। ততশ্চামৃতত্বফলপ্রাপ্তিহেতুভূতজ্ঞানবিষয়স্য প্রের্যপ্রেরকলক্ষণজীবপরভেদস্য পরমার্থত্বমুক্তং ভবতি অপরমার্থজ্ঞানস্য মোক্ষহেতুত্বাসম্ভবাদিতি।। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:- যিনি সকলের জীবন নির্বাহ করেন তিনি সর্বাজীব, এই শব্দে কার দ্বারা জীবন ধারণ করব এই প্রশ্নের উত্তর বলা হল। যাতে সকলেরই সংস্থা অর্থাৎ সমাপ্তি বা প্রলয় তিনি সর্বসংস্থ, এর দ্বারা কারমধ্যে আমাদের  লয় এই প্রশ্নের উত্তর কথিত হল। কিভাবে প্রলয়ে সকলের তার মধ্যে অবস্থান? ব্রহ্ম বৃহৎ বস্তু। তাই ব্রহ্মের নিরতিশয় বৃহত্বজনিত কারনে সকলেরই আশ্রয়স্থান হওয়ার উপযুক্ত। এটিই এখানে বৃহৎ শব্দের তাৎপর্য্য। হংসরূপী জীব পরবশ হয়ে এই ব্রহ্মের চক্রে অর্থাৎ সংসারে ভ্রমণ করতে থাকে অর্থাৎ অনেক জন্ম সঞ্চরণ করতে থাকে। গীতা তে ও বলা হয়েছে— যন্ত্রারূঢ় সমস্ত ভূতবর্গকে নিজ মায়াশক্তির দ্বারা ব্রহ্ম সংসারে ভ্রমণ করিয়ে থাকেন। 
এই মন্ত্রে পৃথগাত্মানং ইত্যাদি বাক্যে এই প্রকার আত্ম পরমাত্ম বিষয়ক জ্ঞানের ফল সম্পর্কে বলা হচ্ছে—সংসারচক্রে ভ্রমণ করানোর কর্ত্তা বা প্রেরক পরমাত্মা কে, ও তার দ্বারা ভ্রাম্যমান তার শরীর রূপী নিজ আত্মা কে পৃথক বস্তু রূপে জেনে সংসারী জীব প্রীত হয়। তখন এই প্রীত জীব পরমাত্মা কর্ত্তৃক প্রীতিপূর্বক স্বীকৃত হন অর্থাৎ মুক্তিলাভ করেন। অতএব অমৃতরূপী ফলপ্রাপ্তির অর্থাৎ মুক্তির কারণ যে জ্ঞান তা হল প্রেরিত জীব ও প্রেরক পরমাত্মার ভেদ জ্ঞান, এই জ্ঞানের পরমার্থত্ব বলা হল। যেহেতু অপরমার্থ জ্ঞানের দ্বারা মোক্ষলাভ সম্ভব নয়।