SU_BEN_1.9

SU_BEN_1.9

<<<Previous verse             Next verse>>>

মন্ত্র ৯
জ্ঞাজ্ঞৌ দ্বাবজাবীশনীশৌ
অজাপ্যেকা ভোক্তৃভোগার্থযুক্তাঃ।
অনন্তশ্চাত্মা বিশ্বরূপো হ্যকর্ত্তা
ত্রয়ং যদা বিন্দতে ব্রহ্মমেতৎ।। ১/৯
অনুবাদ:- ঈশ্বর সর্বজ্ঞ ও জীব অজ্ঞ। উভয়েই অজ বা জন্মরহিত হলেও একজন ঈশ্বর সকলের নিয়ামক প্রভু, এবং অপরজন জীব নিয়ামক নন পরবশ। আর একটি বস্তু হচ্ছে প্রকৃতি যা ভোক্তাজীবের ভোগ্যবস্তু রূপে নিযুক্ত। বিশ্ব যার শরীর সেই অন্তরাত্মা পরমাত্মা অনন্তগুণসম্পন্ন। ও কোনরূপ কর্ত্তৃত্ব রহিত। এই তিনটি পৃথকতত্ত্বের স্বরূপ যিনি যথার্থ জানেন তিনি ব্রহ্ম হন অর্থাৎ মুক্ত হন। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:- পূর্বনির্দিষ্টয়োর্দ্বয়োর্মধ্যে একঃ সর্বজ্ঞঃ অতএব ঈশশ্চ, অপরস্ত্বজ্ঞোঽনীশশ্চ উৎপত্তিরাহিত্যং দ্বয়োরপি সমানং ঈশনীশৌ ইতি দীর্ঘাভাবশ্ছান্দসঃ, ভোক্তুরৃজীবস্য ভোগরূপপ্রয়োজনযুক্তা উৎপত্তিরহিত। কাচনান্যা প্রকৃতিরিত্যর্থঃ এবং ত্রিতয়ং উৎপত্তিরাহিত্যেন সমানমপি পরস্পরং বিলক্ষণমিত্যর্থঃ। ননু প্রকৃতের্জীবভোগোপকরণত্ববৎ পরমাত্মনোঽপি ভোগার্থত্বং কুতো ন ভবেৎ? প্রত্যুত একৈকশরীর জাবভোগার্থত্বেন তৎশরীরপরমাত্মভোগার্থত্বে অবর্জনীয়মিত্যত্রাহ বিশ্বশরীরকস্যাপি পরমাত্মনঃনান্তং গুণানাং গচ্ছন্তি তে নানন্তোঽয়মুচ্যত ইত্যুক্তরীত্যা সত্যকামত্বাদ্যনন্তগুণাশ্রয়স্য নিরপেক্ষস্য জীববৎ কর্মফলাভিসন্ধিপূর্বকং কর্ত্তৃত্বাভাবাৎ ন তদ্ভোগার্থত্বং প্রকৃতেরিতিভাবঃ।  এতাদৃশবৈলক্ষণ্যজ্ঞানস্য ফলমাহ, এতৎত্রয়ং পরস্পরবৈলক্ষণ্যেন দর্শনসমানাকারধ্যানেন বিষয়ীকরোতি তদা ব্রহ্ম ভবতিমুক্তো ভবতি ইত্যর্থঃ ব্রহ্মমিতি ছান্দসং রূপং সংযুক্তং।। ১/৯ 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:-পূর্ব মন্ত্রে বর্ণিত দুই পুরুষের মধ্যে একজন সর্বজ্ঞ, অতএব নিয়ামক ঈশ্বর। এবং অপর জন অজ্ঞ এবং অনীশ অস্বতন্ত্র পরবশ জীব। দুটি পুরুষ ই সমানভাবে উৎপত্তিরহিত। ঈশানীশৌ শব্দের স্থানে ঈশনীশৌ শব্দের প্রয়োগ ছন্দ রক্ষার জন্য। ভোক্তা জীবের ভোগ্যবস্তুরূপী ও উৎপত্তি বিহীন প্রক‌ৃতি নামে  অপর একটি বস্তু আছে। এভাবে তিনটি বস্তুই যথা জীব, প্রকৃতি, পরমাত্মা উৎপত্তিবিহীন হলেও তারা পরস্পর পৃথক। এখন প্রশ্ন হয় যে প্রকৃতি যদি জীবের ভোগসাধনের বস্তু হয় তবে পরমাত্মারও ভোগ্য হবেনা কেন? সকল শরীরেই জীবাত্মা ও পরমাত্মা একসাথেই বিদ্যমান তাহলে জীব যদি ভোগের জন্য শরীর ধারণ করে তবে পরমাত্মা ও ভোগের জন্যই শরীরে অবস্থান করে  এই সিদ্ধান্ত হবে না কেন? 
তার উত্তরে বলা হচ্ছে সমস্ত বিশ্বের যিনি অন্তরাত্মা, অর্থাৎ সমস্ত বিশ্বই যার‌ শরীর সেই পরমাত্মা অনন্তগুণবিশিষ্ট। তিনি সত্যকাম, সত্যসঙ্কল্প ইত্যাদি অনন্ত গুণের আশ্রয়। তার কোনো কিছুর ই অপেক্ষা নেই। তিনি পূর্ণকাম। তাই জীবের মতো‌ কর্মফলপ্রাপ্তির জন্য তিনি কোনো কাজ করেননা। তাই প্রকৃতি সৃষ্ট কোনো ভোগ্যবস্তুতে তার প্রয়োজন নেই। চিৎ, অচিৎ, ও ঈশ্বর এই তিনটি তত্ত্বের পরস্পর পার্থক্য যিনি প্রত্যক্ষের মতো দর্শণ করেন তিনি তখন ব্রহ্ম হন অর্থাৎ জীবন্মুক্ত হয়ে যান। ছন্দ রক্ষার জন্য ব্রহ্ম শব্দটি প্রয়োগ না করে ব্রহ্মং শব্দটি ব্যাবহার হয়েছে। 

রঙ্গরামানুজ ভাষ্য:-  মন্ত্রনির্দিষ্টক্ষরাক্ষরশব্দার্তং বিবৃণ্বন্ পরস্পরবৈলক্ষণ্যজ্ঞানমাত্রেণ মুক্তৌ মনননিদিধ্যাসনবৈয়র্থ্যমিতি শঙ্কাং চ শময়ন্তি। 
রঙ্গরামানুজ ভাষ্যের অনুবাদ:-পূর্ব মন্ত্রে কথিত ক্ষর ও অক্ষর শব্দের অর্থ বিবৃত করে তাদের পরস্পর বিশেষত্বের জ্ঞানমাত্রেই যদি মুক্তি হয় তাহলে মনন ও নিদিধ্যাসনের আর প্রয়োজন থাকে না। এই সন্দেহ নিরসন করতে পরবর্তী মন্ত্র বলা হচ্ছে।