পূর্বপক্ষ:- শুকদেব পরীক্ষিতের জন্মের পূর্বেই মারা যান। ভীষ্মদেব শরশয্যায় যুধিষ্ঠির কে বহুকাল পূর্বে শুকদেব এর এই মুক্তি লাভের কাহিনী বলেছেন। যুধিষ্ঠির ভীষ্মদেবের কাছে এই মোক্ষধর্ম এর জ্ঞান লাভের পর সিংহাসনারোহন করেন। তারপর তিনি ৩৬ বছর রাজত্ব করেন ও তারপর পরীক্ষিত কে সিংহাসনে বসিয়ে মহাপ্রস্থান যাত্রা করেন। পরীক্ষিত ৬০ বছর রাজত্ব করেন। তারপর শমীক মুনির অভিশাপে তার মৃত্যু হয়। ভাগবতে উল্লেখ আছে তার মৃত্যুর ৭ দিন পূর্বে শুকদেব তাকে শ্রীমদ্ভাগবত কথা শুনিয়েছিলেন। এতদিন পরে শুকদেব কোথা থেকে আসলেন?
অন্তর্হিতঃ প্রভাবং তু দর্শয়িতা শুকস্তদা।
গুণান্সন্ত্যাজ্য শব্দার্দান্পদমভ্যগমৎপরম্।। শান্তিপর্ব/ ৩৩৩/২৬
অনুবাদ:- ধর্মাত্মা শুকদেব এইরূপে শব্দাদি গুণ সমুদায় পরিত্যাগ করে অন্তর্হিত হয়ে স্বীয় প্রভাব প্রদর্শন পূর্বক ব্রহ্মপদ লাভ করলেন।
স গতিং পরমাং প্রাপ্তৌ দুষ্প্রাপামজিতেন্দ্রিয়ৈঃ।
দৈবতৈরপি বিপ্রর্ষে তং ত্বং কিমনুশোচসি।। ৩৬
অনুবাদ:- মহাদেব বললেন হে ব্যাস তোমার সেই পুত্র দেবদুর্লভ পরমগতি লাভ করেছে। অতএব তুমি কিসের জন্য অনুতাপ করছো?
উত্তর পূর্বাচার্য্য গণ ভাগবতের টীকায় এর যা ব্যাখ্যা করেছেন তা আমরা আলোচনা করব।
মহাভারতের ঘটনাক্রম
শ্রীমদ্ভাগবতের ঘটনাক্রম
তং প্রকামন্তমাজ্ঞায় পিতা স্নেহসমন্ধিতঃ।
উত্তমাং গতিমাস্থায় পৃষ্ঠতোঽনুসসার হ।। ১৮
শ্রী শুকদেব এভাবে মোক্ষ লাভের জন্য উৎক্রমণ করেছেন জেনে শ্রী ব্যাসদেব ও উত্তমগতির আশ্রয় করে পুত্র স্নেহবশে তার পিছন পিছন যেতে লাগলেন।
স্বয়ং পিত্রা স্বরেণোচ্চৈস্ত্রীলঁলোকাননুনাদ্য বৈ।
শুকঃ সর্বগতো ভূত্বা সর্বাত্মা সর্বতোমুখঃ।। ২৩
প্রত্যভাষত ধর্মাত্মা ভো শব্দেনানুনাদয়ন্।
যখন পিতা ব্যাসদেব উচ্চস্বরে তাকে ডাকছিলেন, তখন সর্বব্যাপী, সর্বাত্মা ও সর্বতোমুখ হয়ে ধর্মাত্মা শুকদেব ‘ভোঃ' শব্দে সম্পূর্ণ জগৎ কে প্রতিধ্বনিত করে পিতাকে উত্তর দিলেন।
এই সমস্ত ঘটনার সাথে শ্রীমদ্ভাগবতমের কোনো বিরোধ নেই। ভাগবতে ও উল্লেখ আছে বহু পূর্বেই শুকদেব মুক্তি লাভ করেছিলেন।
যং প্রব্রজন্তমনুপেতমপেতকৃত্যং
দ্বৈপায়নো বিরহকাতর আজুহাব ।
পুত্রেতি তন্ময়তয়া তরবোঽভিনেদু-
স্তং সর্বভূতহৃদয়ং মুনিমানতোঽস্মি ॥ ১/২/২
ততো মন্দাকিনী রম্যামুপরিপ্টাদভিব্রজন্।।
শুকো দদর্শ ধর্মাত্মা পুষ্পিতদ্রুমকাননাম্। ৩৩৩/১৬
হে রাজন ধর্মাত্মা শুক উর্দ্ধলোকে যাওয়ার সময় বৃক্ষ লতা সুশোভিত রমণীয় মন্দাকিনী র দর্শন করলেন।
তস্যাং ক্রীড়ন্ত্যভিরতাস্তে চৈবাপ্স্যরসাং গণঃ।।
শূন্যাকারং নিরাকারাঃ শুকং দৃষ্ট্বা বিবাসসঃ।
সেখানে অনেক অপ্সরাগণ স্নান ও জলক্রীড়া করছিল, যদিও তারা নগ্ন হয়েছিল, তবু বাহ্যজ্ঞান রহিত ও আত্মনিষ্ঠ শুকদেব কে দেখে তারা তাদের শরীর কে আবৃত করার চেষ্টা করেনি।
ততো মন্দাকিনীতীরে ক্রীড়ন্তোঽপ্সরসাং গণাঃ।। ২৮
আসাদ্য তমৃষিং সর্বাঃ সম্ভ্রান্তা গতচেতসঃ।
জলে নিলিলিরে কাশ্চিৎ কাশ্চিৎ গুল্মান্ প্রপেডিরে।।
বসনান্যাদদুঃ কাশ্চিৎ তং দৃষ্ট্বা মুনিসত্তমম্।
তাং মুক্ততাং তু বিজ্ঞায় মুনিঃ পুত্রস্য বৈ তদা।। ৩০
সক্ততামাত্মনশ্চৈব প্রীতোঽভূদ্ ব্রীড়িতশ্চ হ।। ৩১
ঐ সময় মন্দাকিনী তটে জলক্রীড়ারত অপ্সরা গণ নিকটে ব্যাসদেব কে দেখে কেউ জলের তলায় কেউ লতার আড়ালে লুকিয়ে পড়ল, কেউ বস্ত্র দ্বারা শরীর আবৃত করল, তা দেখে ব্যাসদেব নিজ পুত্রের মুক্ততা ও নিজের বিষয়াসক্তি দেখে যুগপৎ প্রসন্ন ও লজ্জিত হলেন।
অনন্তর মহর্ষিগণপূজিত ভগবান পিণাকপাণি দেবতা ও গন্ধর্বগণ পরিবেষ্টিত হয়ে পুত্রশোকে কাতর মহর্ষি বেদব্যাসের কাছে আগমণপূর্বক সান্ত্বনা বাক্যে তাকে বললেন হে মহর্ষি তুমি পূর্বে আমারকাছে অগ্নি বায়ু, জল, ভূমি ও আকাশের ন্যায় বীর্য্য সম্পন্ন পুত্র প্রার্থনা করেছিলে। আমিও তোমাকে তোমার প্রার্থনা অনুরূপ পুত্র প্রদান করেছিলাম। এখন তোমার সেই পুত্র দেবদুর্লভ পরমগতি লাভ করেছে। অতএব তুমি কিসের জন্য অনুতাপ করছো?
এরপর মহাভারতে আর কোনো উল্লেখ নেই। তারপরের কথা শ্রীমদভাগবত এ উল্লেখ করা হচ্ছে।
শুক দেব যখন এভাবে বনে বিচরণ করছিলেন ব্যাসদেবের শিষ্য দের মুখে ভাগবতের শ্লোক শুনলেন।
অহো বকীয়ং স্তনকালকূটং জিঘাংসয়াঽপায়যদপ্যসাধ্বী।
লেভে গতিং ধাত্র্যুচিতাং ততোঽন্যং
কং বা দয়ালুং শরণং ব্রজেম।।
তার মত ব্রহ্মভূত ব্যাক্তিও ভগবানের গুণে আকৃষ্ট হয়ে ভক্তি করেন।
স সংহিতাং ভাগবতীং কৃত্বানুক্রম্য চাত্মজম্ ।
শুকমধ্যাপয়ামাস নিবৃত্তিনিরতং মুনি: ॥১.৭.৮ ॥
শৌনক ঋষি ও সেই প্রশ্ন করেছেন যে ব্রহ্মনিষ্ঠ মায়ার জগতের সাথে যার কোন সম্পর্ক নেই, যার আর কোনো সাধনার প্রয়োজন নেই সেই শুকদেব কেন এই ভাগবত অধ্যয়ণ করলেন?
স বৈ নিবৃত্তিনিরত: সর্বত্রোপেক্ষকো মুনি: ।
কস্য বা বৃহতীমেতামাত্মারাম: সমভ্যসৎ ॥ ১.৭.৯ ॥
তার উত্তর সুত গোস্বামী বলছেন ভগবানের গুণাবলীই এমন যে তাতে আকৃষ্ট হয়ে আত্মারাম, আপ্তকাম, মুক্ত, মোক্ষপ্রাপ্ত ব্যাক্তিও ভগবানের ভজন এ যুক্ত হন।
সূত উবাচ
আত্মারামাশ্চ মুনয়ো নির্গ্রন্থা অপ্যুরুক্রমে ।
কুর্বন্ত্যহৈতুকীং ভক্তিমিত্থম্ভূতগুণো হরি: ॥ ১/৭/১০
হরের্গুণাক্ষিপ্তমতির্ভগবান্ বাদরায়ণিঃ ।ভাঃ ১/৭/১১
রামচরিত মানসে
মূরতি মধুর মনোহর দেখী।
ভয়েউ বিদেহ বিদেহ বিসেষী।।
শ্রীরামচন্দ্রের মনোহর মূর্তি দেখে বিদেহ জনক এর দেহানুভূতি বিরহিত হয়ে গেল।
ইনহিঁ বিলোকন অতি অনুরাগা।
বরবস ব্রহ্মসুখহিঁ মন ত্যাগা।।
হে মুনিবর বিশ্বামিত্র এদের দর্শন করে প্রেমময় চিত্তে এখন যেন আমার ব্রহ্মসুখ ও নীরস মনে হচ্ছে।
স্বসুখনিভৃতচেতাস্তদ্বযুদস্তান্যভাবো-
ঽপ্যজিতরুচিরলীলাকৃষ্টসারস্তদীয়ম্ ।
ব্যতনুত কৃপয়া যস্তত্ত্বদীপং পুরাণং
তমখিলবৃজিনঘ্নং ব্যাসসূনুং নতোঽস্মি ॥ ১২.১২.৬৯ ॥
১) ভাগবতম এর সঙ্গে মহাভারতের উক্তির বিরোধ নেই। ভাগবত ও বলে যে শুকদেব মুক্ত ই ছিলেন।
শুকদেব জীবন্মুক্ত ছিলেন। তিনি জীবদ্দশাতেই মুক্তি লাভ করেছিলেন। এখানে পূর্বপক্ষকারীরা ভুল বুঝেছে।
রাজা জনক, সনকাদি, উদ্ধব, শুকদেব এঁনারা জীবদ্দশাতেই ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করে মুক্ত হয়েছিলেন।
মহাভারতেই উল্লেখ আছে রাজর্ষি জনক মোক্ষ ধর্মের জ্ঞাতা ছিলেন। তিনি জীবদ্দশাতেই মুক্ত হয়ে ও রাজকার্য্য শাসন করতেন।
সুলভা ত্বস্য ধর্মেপু মুক্তো নেতি সসংশয়া।
সত্ত্বং সত্ত্বেন যোগজ্ঞা প্রবিবেশ মহীপতেঃ।। ৩২০/১৬
রাজা জনক জীবন্মুক্ত ছিলেন কিনা তাই নিয়ে সুলভার মনে সন্দেহ ছিল তাই সে তাকে মোক্ষধর্মের বিষয়ে প্রশ্ন করতে চেয়েছিলেন ও যোগশক্তিতে সিদ্ধ সুলভা রাজা জনকের বুদ্ধিতে প্রবেশ করেন।
রাজা জনক তাকে বলেন
তেনাহং সাংখ্যমুখ্যেন সুদ্দপ্টার্থেন তত্ত্বতঃ।
শ্রাবিতস্ত্রিবিধং মোক্ষং ন চ রাজ্যাদ্ধি চালিতঃ।। ২৭
সোঽহংতামখিলাং বৃত্তিং ত্রিবিধাং মোক্ষসংহিতাম্।
মুক্তরাগশ্চরাম্যেকঃ পদে পরমকে স্থিতঃ।। ২৮
সাংখ্য শাস্ত্রের পরম জ্ঞাতা ঋষি পঞ্চশিখ এর কাছে আমি ত্রিবিধ মোক্ষশাস্ত্র শ্রবণ করি। কিন্তু তিনি আমাকে রাজকার্য্য পরিচালন ত্যাগ করতে আজ্ঞা করেননি। তার উপদেশ প্রাপ্ত হয়ে বিষয়াসক্তি রহিত হয়ে মুক্তি বিষয়ক তিন প্রকারের সমস্ত বৃত্তি র আচরণ করে আমি পরমপদে স্থিত আছি।
ভগবদ গীতায় শ্রীকৃষ্ণ রাজর্ষি জনকের উল্লেখ করেছেন যে —তিনি জীবন্মুক্ত হয়েও লোকশিক্ষার জন্য কর্তব্যকর্ম যথা রাজ্যশাসন, গৃহস্থধর্ম পালন করেছিলেন।
কর্মণৈব হি সংসিদ্ধিমাস্থিতা জনকাদয়ঃ ।
লোকসঙ্গ্রহমেবাপি সম্পশ্যন্কর্তুমর্হসি ॥ গীতা৩/২০
২) যদি বলা হয় ভাগবত কে প্রামাণিক মানিনা। মুক্ত ব্যাক্তি ভগবানের গুণ ইত্যাদি দ্বারা আকৃষ্ট হবেন কেন?
নৃসিংহপূর্বতাপনী ২/৪
“অথ কস্মাদুচ্যতে নমামীতি। যস্মাদ্ যং সর্বে দেবা নমন্তি মুমুক্ষবো ব্রহ্মবাদিনশ্চ" এর টীকায় শ্রীপাদ শঙ্করাচার্য্য ও বলেছেন মুক্তা অপি লীলয়া বিগ্রহং কৃত্বা ভগবন্তং ভজন্তে
৩)শুকদেব এর এই মুক্তি লাভ যদি জীবন্মুক্তি না মানা হয় তবে মহাভারতের শ্লোকের সাথেই বিরোধ হয়।
স্বর্গারোহণ পর্বে ৫ম অধ্যায় ৪২ শ্লোক এ বলা হয়েছে
নারদমুনি দেবলোকে মহাভারত পাঠ করেছিলেন, অসিত ও দেবল পিতৃ লোকে ও শুকদেব যক্ষ ও গন্ধর্বদের কাছে এই মহাভারত পাঠ করেছিলেন তা ঋষি বৈশম্পায়ণ এই পৃথিবীতে জন্মেজয় এর কাছে পাঠ করেন।
কোন মহাভারত? যা ষাটলক্ষ শ্লোকে ব্যাসদেব রচনা করেন।
ষষ্ঠিং শতসহস্রাণি চকারান্যাং স সংহিতাম্।
ত্রিংশচ্ছতসহস্রঞ্চ দেবলোকে প্রতিষ্ঠিতম্।।
পিত্র্যে পঞ্চদশ প্রোক্তং গন্ধর্বেষু চতুর্দ্দশ।
একং শতসহস্রন্তু মানুষেষু প্রতিষ্ঠিতম্।।
নারদোঽশ্রাবয়দ্দেবান্ অসিতো দেবল পিতৃন্।
গন্ধর্ব্বযক্ষরক্ষাংসি শ্রাবয়ামাস বৈ শুকঃ।। ৬৯
অস্মিংস্তু মানুষে লোকে বৈশম্পায়ন উক্তবান্।
শিষ্যো ব্যাসস্য ধর্মাত্মা সর্ববেদবিদাং বরঃ।।
বেদব্যাস ষাটলক্ষ শ্লোকে আর একখানি মহাভারত রচনা করেন, তার ত্রিশ লক্ষ দেবলোকে, পনেরলক্ষ পিতৃলোকে, চৌদ্দ লক্ষ গন্ধর্বলোকে ও একলক্ষ মনুষ্যলোকে রয়েছে।
নারদ দেবগণকে, অসিত ও দেবল পিতৃগণকে এবং শুকদেব গন্ধর্ব যক্ষ ও রাক্ষস দেরকে শুনিয়েছিলেন।
ব্যাস শিষ্য সমস্ত বেদবিদগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ধর্মাত্মা বৈশম্পায়ণ মুনি এই মনুষ্যলোকে এক লক্ষ শ্লোকাত্মক মহাভারত বলেছেন।
এই মহাভারত ব্যাসদেব কবে রচনা করেন? যুধিষ্ঠিরের রাজত্বকালের শেষভাগে অর্থাৎ শুকদেব এর মুক্ত হওয়ার বহু পরে।
আদিপর্ব ১ম অধ্যায় ৫৮ শ্লোক
তেষু জাতেষু বৃদ্ধেষু গতেষু পরমাং গতিম্।
অব্রবীদ্ভারতং লোকে মানুষেঽস্মিন্ মহানৃষিঃ।।
যুধিষ্ঠিরের রাজত্বের শেষ বয়সে ধৃতরাষ্ট্র ও বিদুর আশ্রমে বাস করেন ও স্বর্গারোহণ করেন। এই সময় মহাভারত রচিত হয়। যুধিষ্ঠির ৩৬ বছর রাজত্ব করে পরীক্ষিত মহারাজ কে রাজ্যাভিষেক করেন। পরীক্ষিত মহারাজ ২৪ বছর রাজত্ব করে তক্ষক দংশনে অপ্রকট হন। পরীক্ষিত এর পুত্র জন্মেজয় সর্পযজ্ঞ সমাপ্ত হলে ব্যাসদেবের নির্দেশে বৈশম্পায়ন জন্মেজয় কে মহাভারত শ্রবণ করান। এভাবে মনুষ্যলোকে মহাভারত প্রচারিত হয়।
ত্রিভির্বর্ষৈর্মহৎ পূণ্যং কৃষ্ণদ্বৈপায়নঃ প্রভূ্ঃ।
অখিলং ভারতং চেদং চকার ভগবান মুনিঃ।।
প্রভাবশালী ভগবান কৃষ্ণদ্বৈপায়নমুনি তিন বৎসরে বিশাল ও পূণ্যজনক এই সমগ্র মহাভারত রচনা করেছিলেন।
অনেকে প্রশ্ন তোলেন মহাভারতে উল্লেখ আছে মহাভারত রচনার অনেক আগেই শুকদেব কে ব্যাসদেব চার শ্লোকে মহাভারতের সার শিখিয়েছিলেন। শুক দেব তা গন্ধর্বলোকে প্রচার করেন।
না ব্যাসদেব শুকদেব কে মহাভারতের সার চারশ্লোকে শিখিয়ে থাকতে পারেন কিন্তু তিনি যে মহাভারত ষাটলক্ষশ্লোকে রচনা করেন তা ই শুকদেব কে অধ্যাপনা করান, তাই শুকদেব গন্ধর্ব লোকে পাঠ করেন। সেই মহাভারত ই বৈশম্পায়ণ মানব লোকে প্রচার করেন।
৪) মুক্ত ব্যাক্তি সর্বত্র স্বচ্ছন্দ বিচরণ করেন। তাই যদি ধরেও নেওয়া হয় তার মৃত্যু হয়েছিল তবে ছান্দোগ্য শ্রুতি অনুসারে তিনি সমস্ত লোকে স্বচ্ছন্দে বিচরণ করতে পারেন। স্বর্গলোক, ব্রহ্মলোক, মর্ত্যলোক।
ছান্দোগ্য শ্রুতি ৭/২/২৫
স বা এষ এবং পশ্যন্নেবং মনন্বান এবং বিজানন্নাত্মরতিরাত্মক্রীড় আত্মমিথুন আত্মানন্দঃ স স্বরাড়্ ভবতি তস্য সর্বেষু লোকেষু কামচারো ভবতি।।
যিনি এভাবে ব্রহ্মকে সর্বগত, সর্বাত্মক রূপে দর্শন করেন, মনন করেন, ও জানেন। তিনি আত্মরতি হন, আত্মক্রীড় হন, আত্মমিথুন হন, ও আত্মানন্দ হন। তিনি স্বরাট হয়ে সমস্ত লোকে তিনি স্বচ্ছন্দগতি হন।
শ্রীপাদ শঙ্করাচার্য্য ৪/৪/৯ ব্রহ্মসূত্রের ভাষ্যে একটি শ্রুতি মন্ত্র উদ্ধৃত করেছেন
অথ য ইহ আত্মানমনুবিদ্য ব্রজন্ত্যেতাংশ্চ সত্যান্ কামান্, তেষাং সর্বেষু লোকেষু, কামচারো ভবতি।।
অনুবাদ:- যারা এই শরীরে ব্রহ্ম কে জেনে পরলোকে গমন করেন তারা সত্যকামত্বাদি প্রাপ্ত হয়ে সমস্ত লোকে স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেন।
৫) পদ্মপুরাণে
অম্বরীষ শুকপ্রোক্তং নিত্যং ভাগবতং শৃণু।
পঠস্ব স্বমুখেনাপি যদীচ্ছসি ভবক্ষয়ম্।