কর্মাবাই খিচুড়ী
পুরীতে শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে প্রাতঃকালে এই কর্মাবাই খিচুড়ী ভোগ লাগানো হয়। প্রাচীনকালে কর্মাভাই নামে একজন ভক্ত ছিলেন, তিনি সকালে স্নান না করে ঠাকুরজির জন্য খিচুড়ী বানিয়ে ভোগ লাগাতেন।
জনশ্রুতি আছে যে , ঠাকুরজী নিজেই শিশু আকারে কর্মবাই খিচুড়ি খেতে মন্দির থেকে চলে আসতেন। কিন্তু একদিন এক সন্ন্যাসী অতিথি এসেছিলেন কর্মাবাঈ এর বাড়িতে। যখন তিনি দেখলেন যে, কর্মাবাই স্নান না করে খিচুড়ি তৈরি করেন এবং ঠাকুরজির কাছে তা অর্পণ করেন, তখন তিনি তাকে এভাবে ভোগ রান্না করতে নিষেধ করেন এবং ঠাকুরজীকে ভোগ নিবেদন করার বিধি শিখিয়ে দিয়েছিলেন।
পরের দিন এই নিয়ম অনুসারে কর্মবাই ঠাকুরজির জন্য খিচুড়ি তৈরী করেন, কিন্তু সেভাবে ভোগ লাগাতে অনেক দেরী হয়ে যায়, তাতে কর্মাবাঈ খুব দুঃখ পেয়েছিল যে আজ আমার ঠাকুরজীর খুব খিদে পেয়ে গেছে, অনেক দেরী হয়ে গেছে। ঠাকুরজি তাঁর খিচুড়ী খেতে খেতে মন্দিরে আরতির সময় হয়ে গেল তাই মন্দিরের দর্শন খোলার আগেই ঠাকুরজি ঝুটা মুখে ছুটতে ছুটতে মন্দির পৌঁছালেন।
সেখানে পুরোহিতেরা দেখলেন যে ঠাকুরজির মুখে উচ্ছিষ্ট খিচুড়ী লেগে রয়েছে, পূজারী পান্ডা ঠাকুরজিকে জিজ্ঞাসা করলে জগন্নাথ পুরো ঘটনা তাঁকে বললেন। যখন এই কথা সেই সন্ন্যাসীর কানে পৌছালো তিনি অত্যন্ত অনুশোচিত হয়ে কর্মবাইয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন এবং আগের মতোই স্নান না করে ঠাকুরজির কাছে খিচুড়ী ভোগ তৈরি করে ভোগ লাগাতে বললেন।
আজও, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে সকালে বাল্যভোগে এই কর্মাবাই এর খিচুড়ী ভোগ দেওয়া হয়।