মহাভারত তাৎপর্য্য
মহাভারতের বিভিন্ন কাহিনী নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন জাগে কোথাও শ্রীহরিকেই পরম তত্ত্ব বলা হয়েছে তো কোথাও শিবকে।
যেমন কোথাও বলা হয়েছে
১) শিবের বরে শ্রীকৃষ্ণ বাণাসুর সংগ্রামে শিব কে পরাজিত করতে সক্ষম হন।
২) শ্রীকৃষ্ণ শিবের কাছে সুদর্শন চক্র প্রাপ্ত হন।
৩) শ্রীকৃষ্ণ শৈবাচার্য্য উপমন্যু মুনির কাছে শিব সহস্র নাম শ্রবণ করেন ও শিব মন্ত্র প্রাপ্ত হন।
৪) রুদ্র হতে বিষ্ণুর উৎপত্তি।
৫) কেশব রুদ্র সম্ভব, রুদ্রের থেকে শ্রীকৃষ্ণের উৎপত্তি।
মহাভারতের সর্বপ্রথম শ্লোকে বলা হয়েছে
আদিপর্ব/প্রথম অধ্যায়/১ম শ্লোক
নারায়ণং নমস্কৃত্য নরঞ্চৈব নরোত্তমম্।
দেবীং সরস্বতীঞ্চৈব ততো জয়মুদীরয়েৎ।।
ভারত কৌমুদী টীকা:- নারায়ণম আদিপুরুষং বিষ্ণুম্।
নারায়ণ, নর, নরশ্রেষ্ঠ ব্রহ্মা(যিনি প্রথম সৃষ্ট জীব) ও বাগ্দেবী সরস্বতীকে(যার কৃপায় ছদ, ব্যাকরণাদি বোধগম্য হয়) নমস্কার করে এই মহাভারত আরম্ভ করছেন।
এবং মহাভারতের সর্ব শেষ শ্লোকে বলা হয়েছে—
য ইদং শৃণুয়াদভক্ত্যা মহাভারতমাদিতঃ।১৭৭
বিবুধ সর্বপাপানি তমাংসীব দিবাকরঃ।
মোদতে বিষ্ণুলোকেঽসৌ বিষ্ণুবন্নাত্র সংশয়ঃ।।১৭৮
যে লোক প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই মহাভারত ভক্তিপূর্বক শ্রবণ করে,.....তিনি সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন, সূর্য যেমন সমস্ত অন্ধকার নষ্ট করেন, তেমন সেই ব্যাক্তি নিজের সমস্ত পাপ নষ্ট করে অন্তিমে বিষ্ণুলোকে গিয়ে বিষ্ণুতুল্য আমোদ লাভ করেন।
এর থেকে বোঝা যায় মহাভারত শাস্ত্রের উদ্দেশ্য ই শ্রীহরির মাহাত্ম্য বর্ণনা করা। এবং এই কথাকে দৃঢ় ভাবে প্রমাণ করতে এই অন্তিম অধ্যায়েই বলা হয়েছে শুধু মহাভারত নয়, রামায়ণ অন্যান্য পুরাণ ও বেদের প্রথম থেকে শেষ সর্বত্র ভগবান শ্রীহরির মাহাত্ম্যই বর্ণিত হয়েছে।
বেদে রামায়নে পূণ্যে ভারতে ভরতর্ষভ।
আদি চান্তে চ মধ্যে চ হরিঃ সর্বত্র গীয়তে।।
মহাভারত ১৮/৫/১৬৪
অনুবাদ:- হে ভরত শ্রেষ্ঠ বেদ, রামায়ণ, মহাভারতে আদিতে মধ্যে ও অন্তে সর্বত্র শ্রীহরির মাহাত্ম্য ই বলা হয়েছে।
তাই শুধু মহাভারত ই নয় সমস্ত শাস্ত্রের উদ্দেশ্য শ্রীহরির মাহাত্ম্য বর্ণনা করা। শ্রীহরির মাহাত্ম্য বোঝাতেই সৃষ্টি, (এই জড় জগৎ, দেবতা ইত্যাদি) সৃষ্ট বিভিন্ন দেবতা দের মহিমা বলা হয়েছে যার দ্বারা স্বয়ং ভগবান শ্রীহরির মহিমাই বোঝায়।