Kunja barnan Narottam das thakur

Kunja barnan Narottam das thakur


কুঞ্জ-বর্ণন 


নরোত্তম-দাস-ঠাকুর


শ্রী-শ্রী-কৃষ্ণ-চৈতন্য-নিত্যানন্দাভ্যাং নমঃ।।


অজ্ঞান-তিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন-শলাকয়া।

চক্ষুর্ উন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রী-গুরবে নমঃ।।

বাঞ্ছা-কল্প-তরুভ্যশ্চ কৃপা-সিন্ধুভ্য এব চ ।

পতিতানাং পাবনেভ্যো বৈষ্ণবেভ্যো নমো নমঃ।।


বন্দিব শ্রী-গুরুদেব আনন্দ করিয়া।

পুনঃ পুনঃ প্রণাম করো~ ভূমেতে পডিয়া।।

যাহার প্রসাদে সর্ব সিদ্ধি অব্যাহতি।

তাহার চরণ বিনু অন্য নাহি গতি ।।

কৃপা করি প্রভু মোরে বৈষ্ণব জানাইলা ।

বৈষ্ণব জানিহ বুলি উপদেশ কৈলা ।।

সেই আজ্ঞা বলি ল{ই}নু বৈষ্ণব শরণ।

বৈষ্ণব আজ্ঞাতে পাইনু সন্ধান ভজন ।।

পতিত পাবন প্রভু বৈষ্ণব গোসাঞি ।

যে না ভজে বৈষ্ণব তার কভু সিদ্ধি নাই ‌।।

অনন্য হৈয়া করে বৈষ্ণব শরণ ।

সব অকারণ বিনা বৈষ্ণব চরণ ।।

সর্ব-শাস্ত্র জ্ঞানে করে সদা নিত্য গান ‌।

তথাপি তাহাতে কৃষ্ণের নাহি অবধান ।।

কলি প্রতি কহিল প্রভু অনেক বিধানে ।

তাহারে বিষয় যাতে কহিল কারণে ।।

আমা ভজে যে না পূজে বৈষ্ণব চরণ ।

তাহারে বিষয কর কহিল কারণ ।।


তথাহি, দশম-স্কন্ধে—

নৃত্যন্তি গায়ন্তি জপন্তি নিত্যং

যদায়মানাং তব নাম গৃহ্ণন্।

তথাপি লোকানুভজন্তি ভক্ত্যা

ন সদৈবমন্ত্র বিষয়ো ভবিষ্যতি ।।  


অত এব ভজ ভাই বৈষ্ণব চরণ।

কায় মন বাক্য লও চরণে শরণ ।।

বিদ্যা ধন জাতি কুল নাহিক যাহার।

বৈষ্ণব হ{ই}লে সেই পূজ্য সভাকার ।।

আমি অতি হীন দৃষ্ট মোরে কৃপা কৈল।

ইহাতেই বৈষ্ণববের মহিমা জানিল ।।

বৈষ্ণব গোসাঞি জাতি কুল নাহি চান ।

সবেই এক নামাএ  শ্রদ্ধা ভক্তি পান ।।

সেই শ্রদ্ধা লক্যে  প্রবিষ্ট হয়েন হৃদয়ে।

প্রবেশিয়া হৃদি মাঝে প্রেম প্রকাশয়ে ।।

বর্ষান্তরে জল বৃষ্টি সদা সেই স্থানে ।

বসিতে না পাই হয় পর্বত প্রমাণে ।।

কোন স্থানে নীর যদি এক সন্ধি পায় ।

তবহি তাহা ভাঙ্গি সকল ভাসায় ।।

এমন বৈষ্ণববের শরণ যে না লয়।

অমৃত তেজিযা যেন বিষ ভক্ষয় ।।

মনুষ্য হ{ই}য়া যে বৈষ্ণব না ভজিল |

হেন-ই দুর্লভ জন্ম বৃথা মাত্র গেল ।।

দশনে ধরিয়া তৃণ করি নিবেদন ।

দম্ভ কপট ছাড়ি ভজ বৈষ্ণব চরণ ।।

জানি বা না জানি মুই শ্রী-গুরু আজ্ঞায় ।

সব তেজি ল{ই}নু শরণ বৈষ্ণবের পায় ।।

শরণ ল{ই}নু মাত্র বৈষ্ণব চরণে ।

কৃপা করি দিলা মোরে ভজন সন্ধানে ।।

তাহা পাঞা মোর মনে আনন্দ হ{ই}ল।

বুঝিতে নারিলে সুখ নাহি হয় মনে ।।

নিবেদন কৈল তাহা শ্রী-গুরু-চরণে |

মোর মাথে পাদ ধরি আপনে কহিলা ।।

বুঝহ পয়ার করি মোর আজ্ঞা লৈলা |

বৈষ্ণবের প্রাঙ্গণে কদরি মূলে বসি ।

এই আজ্ঞা দিলা মোরে কৃপা দৃষ্টে হাসি ।।

শ্রী-গুরু আজ্ঞায় মোর এতেক সাহসা ।

বৈষ্ণব চরণে তেঞি এতেক ভরসা ।।


শ্রী-ব্রজ মণ্ডল আগে করিব বর্ণন ।

স্বযং ভগবান্ যাতে ব্রজেন্দ্র নন্দন ।।

তার মধ্যে বৃন্দাবন করিব বর্ণন ।

অনুক্ষণ যাহা রাধা-কৃষ্ণের ক্রীড়ন ।।

নন্দাদি বন্দিব আগে আর যশোমতি ।

সব মতে জানেন যেহো কৃষ্ণের পিরিতি ।।

শ্রী-কুণ্ড গোবর্ধন বন্দিব এক-মনে ।

নিত্য-লীলা কৃষ্ণ-চন্দ্র করে যেই খানে ।।

শ্রী-কুণ্ডের মহিমা আমি কি কহিতে জানি ।

সেই সব লিখি যাহা সাধু মুখে শুনি ।।

শরণ ল{ই}নু মুই অষ্ট সখীর পায় ।

অষ্ট সখীর কুঞ্জ আগে করিব নির্ণয়।।

আগেতে করিব শ্রী-কুণ্ডের বর্ণন ।

অত্যন্ত প্রেয়সী কৃষ্ণের হয় সেই জন ।।

কৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয় রাধা ঠাকুরাণী।

অত এব কুণ্ডের মহিমা শাস্ত্রেতে বাখানি ।।


তথাহি—

যথা রাধা প্রিয়া বিষ্ণোস্তস্যা কুণ্ডং প্রিয়ং তথা ।

সর্ব-গোপীষু সৈবৈকা বিষ্ণোর্ অত্যন্ত-বল্লভা ।।


চারি দিকে রতনের বান্ধা চারি ঘাট ।

প্রতি ঘাট উপরেতে মণ্ডপ সুঠাট ।।




© Gaudiya scripture এ প্রকাশিত সমস্ত রচনা লেখকের স্বত্বাধিকার ভুক্ত। ভক্তদের পড়ার জন্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে কপি করবেন না।