Authenticity of Brahma samhita
ব্রহ্মসংহিতার প্রামাণিকতা
সিদ্ধান্তশাস্ত্র নাহি ব্রহ্মসংহিতার সম ।
গােবিন্দমহিমা জ্ঞানের পরম কারণ ॥ ২৩৯
অল্পাক্ষরে কহে সিদ্ধান্ত অপার সকল।
বৈষ্ণবশাস্ত্রমধ্যে অতি সার ॥ ২৪০
দক্ষিণ ভারত পরিক্রমাকালে শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভু ত্রিবাঙ্কুর জেলায় তিরুবত্তর গ্রামে অবস্থিত আদিকেশব মন্দির দর্শনে এসে সেখানে ভক্তদের সাথে ইষ্টগোষ্ঠী করছিলেন। তখন সেখানকার ভক্তরা তাকে জানায় ঠিক এই(গৌড়ীয়) সিদ্ধান্তই একটি গ্রন্থে লেখা আছে। এই বলে তারা ব্রহ্মসংহিতা গ্রন্থ দেখান। ব্রহ্মসংহিতার প্রতিটি শ্লোকে অল্প অক্ষরে অনেক সিদ্ধান্ত বর্ণনা রয়েছে দেখে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই গ্রন্থ টি লিখিয়ে নেন।
সেই দিন চলি’ আইলা পয়স্বিনীতীরে ।
স্নান করি ’ গেল আদিকেশব মন্দিরে ॥ ২৩৪
মহাভক্তগণসহ তাহা গােষ্ঠী কৈল ।
ব্ৰহ্মসংহিতাধ্যায়পুঁথি তাহা পাইল ॥ ২৩৭
পুঁথি পাঞা প্রভুর হৈল আনন্দ অপার ।
কম্পাশ্রু স্বেদ স্তম্ভ পুলক বিকার ॥ ২৩৮
(মধ্যলীলা ৯/২৩৪-২৩৮)
এই ব্রহ্মসংহিতা গ্রন্থকে অনেকে কাল্পনিক গ্রন্থ বলে থাকেন। কিন্তু শ্রীমধ্বাচার্য্য তার ভাগবৎ তাৎপর্য্য নির্ণয় ও ব্রহ্মসূত্রভাষ্যে ব্রহ্মসংহিতা থেকে উদ্ধৃত করেছেন। তাই ব্রহ্মসংহিতা নামে একটি গ্রন্থ ছিল তা প্রমাণিত হয়। যা থেকে শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভু ৫ম অধ্যায় টি লিখে আনেন।
ভাঃ১১/১১/৫ শ্লোকের টীকায় শ্রীআনন্দতীর্থ মধ্বাচার্য্যপাদ শ্রীব্রহ্মসংহিতা থেকে উদ্ধৃত করেছেন। বদ্ধজীব সম্পর্কে ব্রহ্ম সংহিতায় বলা হয়েছে
বদ্ধা জীবা ইমে সর্বে পূর্ববন্ধসমন্বয়াৎ।
নিত্যমুক্তত্বতো বিষ্ণুর্মুক্তনামা সদোদিতঃ।
অবদ্ধত্বাদমোক্ষোঽপি দীপ্যতেঽসৌ রবির্যথা।।
ইতি ব্রহ্মসংহিতায়াম্।।
(ভাগবত তাৎপর্য্য নির্ণয় গোবিন্দাচার্য্য সংস্করণ পৃঃ ৬৬৯)
ব্রহ্মসূত্রভাষ্যে ১.১.১
যত্রানবসরোঽন্যত্র পদং তত্র প্রতিষ্ঠিতম্।
বাক্যঞ্চেতি সতাং নীতিঃ সাবকাশে ন তদ্ভবেৎ।।
ইতি ব্রহ্মসংহিতায়াম
অনুবাদ:- যেখানে যে পদ এর অর্থ বাক্যের অভীষ্ট লক্ষ্য যে তাৎপর্য্যে সেই তাৎপর্য্যেই মানতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তবে অন্য অর্থ কল্পনা করতে হবে। ব্রহ্মসংহিতায় বলা হয়েছে।
(ব্রহ্মসূত্রভাষ্য গোবিন্দাচার্য্য সংস্করণ পৃঃ৫)
ব্রহ্মসূত্র ২/৪/২২ বৈশেষ্যাত্তু তদ্বাদস্তদ্বাদঃ ভাষ্য
পার্থিবানাং শরীরাণামর্দ্ধেন পৃথিবী স্মৃতা।
ইতরেঽর্দ্ধত্রিভাগিন্য আপস্তেজস্তু ভাগতঃ।
ইতি সামান্যতো জ্ঞেয়ো ভেদশ্চ প্রতিপুরুষম্।
স্বর্গাস্থানাং শরীরাণামর্দ্ধং তেজ উদাহৃতমিতি।।
ইতি চ ব্রহ্মসংহিতায়াম
অনুবাদ:- পার্থিব শরীরে পৃথিবীর অর্দ্ধাংশ, অবশিষ্ট অর্দ্ধাংশের তিনভাগ জল, এবং এক ভাগ তেজ। এভাবে প্রতিপুরুষেই সামান্যতঃ ভুতবিভাগ জানতে হবে। স্বর্গস্থ শরীরে তেজ এর অর্দ্ধভাগ কথিত হয়।
(ব্রহ্মসূত্রভাষ্য গোবিন্দাচার্য্য সংস্করণ পৃঃ১১৬)
বৃহৎব্রহ্মসংহিতা বলে একটি গ্রন্থ পাওয়া যায় সেটি নারদপঞ্চরাত্রের অংশ। তাতে দশটি অধ্যায় আছে। এই গ্রন্থটি শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভূ সংগৃহীত ব্রহ্মসংহিতা নয়। মধ্বাচার্য্য উদ্ধৃত শ্লোকগুলি সেই গ্রন্থে পাওয়া যায়না।
মধ্ব সম্প্রদায়ের প্রখ্যাত পন্ডিত গোবিন্দাচার্য্য এই শ্লোকগুলিকে untraceable reference বলেছেন তাই শ্রীমধ্বাচার্য্য উদ্ধৃত শ্লোক গুলি সেই লুপ্ত গ্রন্থের ই অংশ যা থেকে শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভু ৫ম অধ্যায়টি লিখে আনেন।
Bibilography
Bhagavat tatparya nirnay Sarvamulagrantha purana prasthan, samputa 3 ed by Bannanje govindacharya udipi 1980 page no 669 |
Brahmasutra bhashya with anuvyakhyana Sarvamulagrantha prasthanatrayi, samputa 1 ed by Bannanje govindacharya udipi 1969 page no 5 |
Brahma sutra bhashya with anuvyakhyana Sarvamulagrantha prasthanatrayi, samputa 1 ed by Bannanje govindacharya udipi 1969 page no 116 |
Article by
Dr. Arjunsakha dasa