বলদেব বিদ্যাভূষণ
উড়িষ্যার অন্তর্গত বালেশ্বর জেলায় রেমুণার নিকটবর্তী অঠান্তর গ্রামে (আনুমানিক খৃ: )অষ্টাদশ শতাব্দীতে শ্রী বলদেব বিদ্যাভূষণের জন্ম হয়। চিল্কাহ্রদের তীরে কোনও বিদ্বদবসতি স্থলে তিনি ব্যাকরণ,অলঙ্কার ও ন্যায়শাস্ত্র অধ্যয়ন করে বেদ অধ্যয়নের জন্য মহীশূরে গমন করেন। এই সময়ে তিনি মাধ্ব-সম্প্রদায়ের শিষ্যত্ব স্বীকার করে তৎসম্প্রদায়ী হন। পরে সন্ন্যাস গ্রহণ করে পুরুষােত্তমক্ষেত্রে পণ্ডিত সমাজকে শাস্ত্রযুদ্ধে পরাজয় করিয়া তত্ত্ববাদিমঠে অবস্থান করেন।
কিছুদিন পরে রসিকানন্দ প্রভুর প্রশিষ্য কান্যকুব্জবাসী শ্রীরাধাদামােদরের নিকটে ষট্সন্দর্ভ অধ্যয়ন করে গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের বিগাঢ় মর্মে আকৃষ্ট হয়ে রাধাদামােদরের শিষ্য হন। পীতাম্বরদাসের নিকট ভক্তিশাস্ত্র এবং শ্রীল বিশ্বনাথচক্রবর্তি ঠাকুরেরর কাছে শ্রীমদ্ভাগবত অধ্যয়ন করেছিলেন বলে জানা যায়।
বিরক্ত বৈষ্ণৰবেশ গ্রহণ করে তিনি একান্তি গােবিন্দদাস নামেও প্রখ্যাত হয়েছিলেন। শ্ৰীবৃন্দাবনের শ্রী শ্যামসুন্দর বিগ্রহ ও তার প্রতিষ্ঠিত।
উদ্ধবদাস ও নন্দমিশ্র তার দুই প্রধান শিষ্য ছিলেন। এই উদ্ধবদাস এর ই বেশ এর শিষ্য সূর্য্য কুন্ডের মধুসূদন দাস বাবাজী। নন্দমিশ্র বলদেব বিদ্যাভূষণ রচিত সিদ্ধান্ত দর্পণ ও আরো কয়েকটি গ্রন্থের টীকা রচনা করেছেন। বলদেব বিদ্যাভূষণ গৌড়ীয় বেদান্তাচার্য্য, ও গােবিন্দ-ভাষ্যকার।
শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তি ঠাকুরের শেষ বয়সে শ্রীবৃন্দাবনে যখন খবর আসল যে জয়পুরের মন্দিরসমূহ থেকে গৌড়ীয় সেবায়েতগণকে অসম্প্রদায়ী বলে সেবাচ্যুত করা হয়েছে, তখন শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্ত্তী ঠাকুরের আদেশে শ্রীল বলদেব বিদ্যাভূষণ শ্রীল কৃষ্ণদেব সার্বভৌম কে সঙ্গে নিয়ে জয়পুরে গিয়া বিচারে বিপক্ষগণকে পরাজিত করে ‘গলতা’ নামক পার্বত্য প্রদেশে গৌড়ীয়দের আসন পুনঃ প্রতিষ্ঠাকরে ‘বিজয়-গােবিন্দ’ শ্রীবিগ্ৰহ স্থাপন করেন। এখনো এই বিগ্রহ সেখানকার দেবমন্দিরে বিরাজমান। (বৃন্দাবনে শ্রীল বিজয়গোবিন্দ দেবের বিগ্রহ শ্রী রাধাগোকুলানন্দ মন্দিরে বর্তমানে সেবিত হচ্ছেন) এই সময় তিনি গােবিন্দের কৃপাদেশে ‘গােবিন্দভাষ্য রচনা করে গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণের মুখ উজ্জ্বল করেন। এছাড়াও বিবিধ গ্রন্থাবলী রচনা করে তিনি গৌড়ীয় বৈষ্ণব সাহিত্যের প্রভূত সেবা করিয়াছেন।
মন্ত্র গুরুপরম্পরা:- শ্যামানন্দপ্রভু> রসিকানন্দদেব গোস্বামী > রাধাদামোদর গোস্বামী > বলদেব বিদ্যাভূষণ
বেশগ্রহণ:- শ্রীল বিশ্বনাথচক্রবর্ত্তী (?) র থেকে বেশ গ্রহণ করে তার নাম হয় একান্তী গোবিন্দ দাস।
আবির্ভাব স্থল:- রেমুণায়। বর্তমানে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সঙ্ঘ ও শ্রী শ্রীমদ জয়পতাকা স্বামী মহারাজের দ্বারা বলদেব বিদ্যাভূষণের আবির্ভাব স্থল পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। ও একটি ছোটো মন্দির সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে
গ্রন্থাবলি