Refutation of Saivism in setaswatar upanishad

Refutation of Saivism in setaswatar upanishad

শিব ই উপনিষদের ব্রহ্ম এই পূর্বপক্ষ খন্ডন
১)শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে রুদ্রের কথা বলা হয়েছে
ক্ষরং প্রধানমমৃতাক্ষরং হরঃ ক্ষরাত্মনাবীশতে দেব একঃ ১/১০
একো হি রুদ্র ন দ্বিতীয়ায় তস্থূর্য ইঁমাল্লোকানীশত ঈশনীভিঃ ৩/২
অনুবাদ:- রুদ্র এক দ্বিতীয় কেউ নয় যে বিশ্ব সৃষ্টি পালন ও ধ্বংস করেন।
যো দেবানাং প্রভবশ্চোদ্ভবশ্চ বিশ্বাধিপো রুদ্রো মহর্ষিঃ
হিরণ্যগর্ভং জনয়ামাস পূর্বং সনো বুদ্ধ্যা শুভয়া সংযুনক্তু ৩/৪
অনুবাদ:- যিনি হিরণ্যগর্ভ কে জন্মাতে দেখেছেন।
যা তে রুদ্র শিবা তনূরঘোরাহপাপকাশিনী
তয়া নস্তনুবা শন্তময়া গিরিশন্তাভিচাকশীহি ৩/৫
যস্মাৎ পরং নাপরমস্তি কিঞ্চিদ যস্মান্নাণীয়ো ন জ্যায়োহস্তি কশ্চিৎ।
বৃক্ষ ইব স্তব্ধো দিবি তিষ্ঠত্যেকস্তেনেদং পূর্নং পুরুষেণ সর্বম।। ৩/৯
ততো যৎ উত্তরতরম তদরূপমনাময়ম।
য এতদ্বিদুরমৃতাস্তে ভব্যন্তথেতরে দুঃখমেবাপিযন্তি ৩/১০
যদাহতমস্তন্ন দিবা ন রাত্রির্ন সন্ন চাসন শিব এব হি কেবলঃ
তদক্ষরং তৎসহিতুর্বরেণ্যং প্রজ্ঞা চ তস্মাৎ প্রসৃতা পুরানী ৪/১৮
মায়াং তু প্রকৃতিং বিদ্যান্মায়িনং তু মহেশ্বরম।
তস্যাবয়বভূতৈস্তু ব্যাপ্তং সর্বমিদং জগৎ।। ৪/১০
তমীশ্বরাণাং পরমং মহেশ্বরং। ৬/৭
অজাত ইত্যেবং কশ্চিদ ভীরুঃ প্রপদ্যতে
রুদ্র যত্তে দক্ষিণং মুখং তেন মাং পাহি নিত্যম।। (৪/২১) অনুবাদ:-  হে রুদ্র তোমাকে অজাত জেনে জন্ম মৃত্যু ভয়ে ভীত মানুষ তোমার শরণ নেয়, আমি ও তোমার শরণ নিলাম। তোমার কল্যাণ ময় স্বরূপ দ্বারা আমাকে ভয় মুক্ত করো।
তাই শ্বেতাশ্বতর শ্রুতি বাক্য অনুসারে রুদ্রই পরব্রহ্ম এরূপ পূর্ব পক্ষ খন্ডন।
আগেই বলেছি এটি প্রধান দশটি উপনিষদের মধ্যে পড়ে না। এটি শৈব উপনিষদ। এরকম বহু উপনিষদ আছে তাই এই উপনিষদের বাক্য প্রধান দশটি উপনিষদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে হবে।
ক) শঙ্করাচার্য্য কথিত প্রধান দশটি উপনিষদে বলা আছে রুদ্র ব্রহ্মের থেকে উৎপন্ন:-
বৃহদারণ্যক উপনিষদ ১/৪/১১
ব্রহ্ম বা ইদমগ্রে আসীদেকমেহ তদেকং সন্ন ব্যভবৎ.........ইন্দ্র বরুন মৃত্যুঃ ঈশান।
অনুবাদ:-
খ) প্রশ্ন উপনিষদ ২/৯
ইন্দ্রস্ত্বং প্রাণ তেজসা রুদ্রোহসি পরিরক্ষিতা
ত্বমন্তরিক্ষে চরসি সূর্যস্তং জ্যোতিষাং পতি
অনুবাদ:- হে প্রান (ব্রহ্ম) তুমিই ইন্দ্র, প্রলয়কালে সকলের সংহারকারী রুদ্র, অন্তরীক্ষে বিচরনকারী বায়ু, ও জ্যোতিষাপতি সূর্য।
গ) সুবলোপনিষদ ২য় খন্ড/১ম মন্ত্র ললাটাতক্রোধোজঃ রুদ্রো জায়তে।
ঘ)একো হ বৈ নারায়ণ আসিৎ, ন ব্রহ্মা, ন ঈশানো ন ইমে দ্যাবাপৃথিবী। মহোপনিষদ ১/১
ঙ) তৈত্তীরিয় আরণ্যকের ১০ম প্রপাঠকের ১৩ অনুবাকে বলা হয়েছে।
নারায়ণঃ পরো জ্যোতির্আত্মা নারায়নঃ পরঃ
নারায়ণঃ পরং ব্রহ্ম তত্ত্বম নারায়ণঃ পরঃ
চ)মহানারায়নোপনিষদ ১ম অনুবাক/৩
য়মন্তঃ সমুদ্রে কবয়ো বয়ন্তি
পন্ডিতেরা বলেন পরমপুরুষ সমুদ্রে বাস করেন।
২)পূর্বপক্ষ:- শৈব মতবাদী রা বলে রুদ্র দুই জন একজন ব্রহ্মার থেকে উৎপন্ন জাত রুদ্র তিনি সৃষ্টির আদিতে ছিলেন না, তিনি সৃষ্ট, তার কথাই এই উপনিষদ সমূহ তে বলা আছে।  ও আরেকজন হলেন পরশিব তিনি সব কিছুর স্রষ্টা তিনি অজাত বা জন্মরহিত। তার থেকেই বিষ্ণু ও ব্রহ্মার উৎপত্তি। পরে ব্রহ্মা থেকে রুদ্র বা শিবের উৎপত্তি। এইরূপ পূর্বপক্ষের উত্তর
ক) এরকম দুই জন শিব আছে শ্রুতিতে কোনো প্রমান নেই। বরং শ্বেতাশ্বতর শ্রুতিই বলছে একো হি রুদ্র ন দ্বিতীয়ায় ৩/২। তাহলে দুই জন  আছে এটা শৈব পাশুপত মতের সামন্জস্য হীন কল্পনা। বেদান্তসূত্রেও শৈব পাশুপত মত খন্ডন করা হয়েছে
পত্যুঃ অসামন্জস্যাৎ। ব্রহ্মসূত্র ২/২/৩৭
সূত্রার্থ:- সামন্জস্যহীনতার জন্য পাশুপত মত খন্ডন করা হল।
খ) রুদ্র থেকে যে জীব ও জগতের উৎপত্তি সেরকম কোনো শ্রুতি শ্বেতাশ্বতর ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না। বরং রুদ্র যে ব্রহ্ম বা পরমাত্মা থেকে উৎপন্ন, পরমাত্মা নন তা শঙ্করাচার্য্য কথিত প্রধান দশটি উপনিষদে বলা আছে।  আর রুদ্র যে প্রজাপতি ব্রহ্মা র থেকে উৎপন্ন তার স্বপক্ষে শতপথ ব্রাহ্মণ ইত্যাদি শ্রুতি আছে। যজুর্বেদের রুদ্রাধ্যায়েও রুদ্র যে জাত সৃষ্টির আদিতে ছিলেন না তা বারবার বলা হয়েছে।শীঘ্র জাত ক্ষিপ্র জাত রুদ্র, তরঙ্গ হতে বা স্থির জল হতে জাত, নদীতে জাত, দ্বীপে জাত (৩১ মন্ত্র) বৃক্ষাদি মূলে জাত গন্ধর্বলোকে বিবাহোচিত ক্ষেত্রে জাত, গোষ্ঠে জাত, পাষাণে জাত, ইত্যাদি।
এবং ঋগ্বেদ থেকে দেখানো হয়েছে বিষ্ণুই পরম তত্ত্ব। কিন্তু নারায়নের উৎপত্তি বলা হয়েছে এমন কোনো শ্রুতি নেই। এমনকি শ্বেতাশ্বতর শ্রুতিতেও রুদ্র থেকে নারায়ন উৎপন্ন তা বলছেনা। আর দুইজন রুদ্র আছে শিব ও পরশিব তার সমর্থনেও কোনো শ্রুতি নেই। রুদ্রাধ্যায়ে জাত রুদ্রের কথা বলা আছে, শতপথ ব্রাহ্মণ ইত্যাদি তেও রুদ্রের জন্মের কথা বলা আছে, তবে পরাশিবের কথা কোথায় আছে? তাই শ্বেতাশ্বতর শ্রুতিতে রুদ্র শব্দে নারায়ন এই অর্থ ই ধরতে হয়।

গ)তাছাড়া  শ্বেতাশ্বতরে রুদ্রের সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা বিষ্ণু কে বোঝাতে ব্যাবহার করা হয়। যেমন
মহানপ্রভূর্বৈ পুরুষঃ সত্ত্বস্যৈষ প্রবর্ত্তকঃ ৩/১২সত্তগুনের প্রবর্ত্তককথা বলা হয়েছে। বিষ্ণু ই সত্তগুনের অধীশ্বর।
মৈত্রায়নীয়পনিষদে ও বলা হয়েছে বিষ্ণুই সত্ত্ব গুনের অধীশ্বর। অথো যো হবৈ খলু        রুদ্র
মহাপুরুষ শব্দে বিষ্ণু কেই বোঝায়, যথা পুরুষ সূক্তে বেদাহমেতম পুরুষম মহান্তম শুক্লযজুর্বেদ ৩১/
শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে তৃতীয় অধ্যায়ের মন্ত্র ১৪ ১৫
সহস্রশীর্ষা পুরুষঃ সহস্রাক্ষঃ সহস্রপাৎ
স ভূমিং বিশ্বতো বৃত্বাহত্যতিষ্ঠদ্দশাঙ্গুলম।। ৩/১৪
সর্বানন শিরোগ্রীব সর্বভূতগুহাশয়ঃ
সর্বব্যাপী স ভগবাংস্তস্মাত সর্বগতঃ শিবঃ ৩/১১
বিশ্বতশ্চক্ষুরুত বিশ্বতোমুখো বিশ্বতোবাহুরুত বিশ্বতস্পাৎ শ্বে ৩/৩ এগুলিও পুরুষসূক্ত অনুসারে নারায়ন কেই বোঝায়।
মহাভারতে শান্তিপর্বে মোক্ষধর্ম পর্বে ৩৪২ অধ্যায়ে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে :- কৃষ্ণ বলেছেন বেদ এ রুদ্র ইন্দ্র ইত্যাদি যে নাম রয়েছে তা কৃষ্ণ কেই নির্দেশ করে। কৃষ্ণের রূপ গুন ও কার্য্য কে লক্ষ্য করে সেই সকল নাম ব্যাবহৃত হয়। তাই শ্বেতাশ্বতর শ্রুতিতে রুদ্র শব্দের দ্বারা বিষ্ণুতত্ত্ব কেই নির্দেশ করছে।
অর্জুন উবাচ
বেদেষু স পুরানেষু যানি গুহ্যানি কর্মভিঃ
তেষাম নিরুক্তম তত্ত্বোহম শ্রোতুমিচ্ছামি কেশব
ন হি অন্যো বার্তায়েন নাম্নাম নিরুক্তম ত্বাম ঋতে প্রভো।
অনুবাদ:- হে কেশব বেদ পুরানে এ ঋষিরা তোমার বিভিন্ন লীলা ও সেইসম্পর্কিত তোমার যে বিভিন্ন নাম উল্লেখ করেছেন সেই সব নামের মাহাত্ম্য আমাকে বলো।
শ্রীকৃষ্ণ উবাচঃ
ঋগ্বেদে সযজুর্বেদে তথৈবথর্বসামসু পুরাণে
সোপনিষদে তথৈব জ্যোতিষে অর্জুন
সাংখ্যে চ যোগশাস্ত্রে চ আয়ুর্বেদে তথৈবচ
বহুনি মম নামানি কীর্তিতানি মহর্ষিভিঃ
গৌণানি তত্র নামানি কর্মজানি চ কানি চিত
নিরুক্তম কর্মজ্ঞম চ শৃণুস্ব প্রয়াতো অনঘ
অনুবাদ:- শ্রীকৃষ্ণ বললেন হে অর্জুন ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, অথর্ববেদে সামবেদে পুরানে উপনিষদে জ্যোতিষে সাংখ্যশাস্ত্রে যোগশাস্ত্রে, আয়ুর্বেদে ঋষিরা অসংখ্য যেসব নাম উল্লেখ করেছেন।
কিছু নাম আমার স্বরূপ সম্বন্ধিত কিছু আমার কার্য্য সম্পর্কিত। হে পাপরহিত অর্জুন আমি তোমার কাছে সেই সব নাম ও তাদের মাহাত্ম্য বর্ননা করছি তুমি তা মনোযোগ সহকারে শোনো।
৩) শ্বেতাশ্বতর ও অথর্বশিরোপনিষদ বাক্যে র রামানুজাচার্য্য কৃত সমাধান।
প্রানং মনসি সহকরণৈঃ নাদান্তে পরাত্মনি সম্প্রতিষ্ঠাপ্য ধ্যায়ীত ঈশানং প্রধ্যায়ীত এবং সর্বমিদম। ব্রহ্মাবিষ্ণুরুদ্রেন্দ্রাস্তে সর্বে সংপ্রসূয়ন্তে। ন কারনং....কারনং তু ধ্যেয়ঃ সর্বৈশ্বরয্যসম্পন্নঃ সর্বেশ্বরঃ শম্ভুঃ আকাশমধ্যে ধ্যেয়ঃ (অথর্ব শীর্ষ উপনিষদ )
অনুবাদ:- ইন্দ্রিয়ের সাথে প্রান কে পরমাত্মার মধ্যে স্থাপিত করে নাদের পরে মনে ঈশানের ধ্যান করবে, ধ্যানকারী ভাববে যে ব্রহ্মা বিষ্ণু রুদ্র ইন্দ্র ইহারা সকলেই উৎপন্ন হন। অতএব ইহারা কেহই কারনবস্তু হইতে পারেন না।  কিন্তু কারনবস্তুই ধ্যেয়। সর্বৈশ্বর্য্যসম্পন্ন সর্বেশ্বর শম্ভুই আকাশ মধ্যে ধ্যেয়।

রামানুজাচার্য্য কৃত ব্যাখ্যা:- অথর্বশিরোপনিষদে যে বলা হয়েছে রুদ্র থেকে বিষ্ণু ইন্দ্র বরুন এর জন্ম তার কারন তার মধ্যে ব্রহ্ম পরমাত্মা রূপে অন্তরেরও অন্তরে অবস্থান করেছিল। সোহন্তরাদন্তরং প্রাবিশৎ/ অথর্বশীর্ষ ২য় মন্ত্রএ তা বলা হয়েছে।
ওঁ দেবা হ বৈ স্বর্গং লোকমায়ংস্তে রুদ্রমপৃচ্ছন্কো ভবানিতি । সোঽব্রবীদহমেকঃ প্রথমমাসং বর্তামি চ ভবিশ্যামি চ নান্যঃ কশ্চিন্মত্তো ব্যতিরিক্ত ইতি । সোঽন্তরাদন্তরং প্রাবিশত্ দিশশ্চান্তরং প্রাবিশত্ সোঽহং নিত্যানিত্যোঽহং ব্যক্তাব্যক্তো ব্রহ্মাব্রহ্মাহং
প্রাঞ্চঃ প্রত্যঞ্চোঽহং দক্ষিণাঞ্চ উদঞ্চোহং অধশ্চোর্ধ্বং চাহং দিশশ্চ প্রতিদিশশ্চাহং পুমানপুমান্ স্ত্রিয়শ্চাহং গায়ত্র্যহং সাবিত্র্যহং ত্রিষ্টুব্জগত্যনুষ্টুপ্ চাহং ছন্দোঽহং গার্হপত্যো দক্ষিণাগ্নিরাহবনীয়োঽহং সত্যোঽহং গৌরহং গৌর্যহমৃগহং য়জুরহং সামাহমথর্বাঙ্গিরসোঽহং জ্যেষ্ঠোঽহং শ্রেষ্ঠোঽহং বরিষ্ঠোঽহমাপোঽহং......
যেমন বামদেব ঋষি বলেছিলেন আমি মনু ও সূর্য হয়েছিলাম(বৃহদারণ্যকে ১/৪/১০)। বামদেব ঋষি নিজেকে পরমাত্মার সাথে একাত্ম জেনে এই উক্তি করেছিলেন। ব্রহ্মসূত্রে ও তা বলা হয়েছে শাস্ত্রদৃষ্ট্যা তূপদেশো বামদেববৎ ১/১/৩০
রুদ্রের মধ্যে ব্রহ্ম পরমাত্মা রূপে অন্তরেরও অন্তরে প্রবেশ করেছিল। এজন্য রুদ্র সর্বেশ্বরত্বের কথা বলা হয়েছে।
প্রহ্লাদ ও সেই কথা বলছিলেন বিষ্ণু পুরানে সেই অনন্ত পুরুষ সর্বগত বলে আমিও তিনি, সকলেই আমার থেকে উৎপন্ন, আমিই সর্ববস্তু আমার মধ্যেই সকলে অবস্থিত, আমি সনাতন পুরুষ।
সর্বগত্বাদনন্তস্য স এবাহমবস্থিতঃ
মত্তঃ সর্বমহং সর্বং ময়ি সর্বং সনাতনে (বিষ্ণুপুরানে ১/১৯/৮৫)
Next >>>