Who is supreme brahma in upanishad

Who is supreme brahma in upanishad

Vishnutatwa, Rudra tatwa, Shakti tatwa in upanishad
উপনিষদ
এবারে উপনিষদের দ্বারা পরম তত্ত্ব নির্নয় করা হবে।
উপনিষদ অনেক আছে তার মধ্যে দশটি প্রধান।
ঈশ, কেন, কঠ, মুন্ডক, মান্ডুক্য, তৈত্তীরিয়, ঐতরেয়, ছান্দোগ্য,ও বৃহদারন্যক এই দশটি কে আচার্য্য শঙ্কর প্রধান উপনিষদ বলেছেন। এগুলি ছাড়া কালিকা উপনিষদে কালী ই পরম দেবী, নারায়ন উপনিষদে নারায়ন ই পরম, অথর্বশীর্ষ উপনিষদে শিবই পরম এরকম বলা হয়েছে। এই উপনিষদ গুলি পরবর্তী কালে রচিত বলেই মনে করা হয়। তাই কেবলমাত্র দশটি মূল উপনিষদ দ্বারা ব্রহ্ম নিরূপন করা হবে।
১)ব্রহ্ম এক ইহা সমস্ত উপনিষদের সিদ্ধান্ত।
একমেবাদ্বিতীয়ম (ছান্দোগ্য উপনিষদ ৬/২/১)
ন তৎসমশ্চাভ্যধিকশ্চ দৃশ্যতে (শ্বেতাশ্বতর ৬/৮)
সর্বে বেদা যৎ পদমানন্তি
তপাংসি সর্বাণি চ যদ বদন্তি (কঠ ১/২/১৫)
বেদাহমেতং পুরুষং মহান্তমাদিত্যবর্নং তমসঃ পরস্তাত
তমেব বিদিত্বাতি মৃত্যুমেতি নান্যঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায়ঃ (যজুর্বেদ ৩১/১৮)
সেই ব্রহ্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা ই কর্তব্য। তাকে জানলেই মৃত্যুকে অতিক্রম করা যায়। এছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।
সদেব সৌম্য ইদম অগ্র আসিৎ (ছান্দোগ্য উপনিষদ ৬/২/১)
ব্রহ্ম বা ইদমগ্র আসীৎ (বৃহদারণ্যক ১/৪/১০, মৈত্রী ৬/১৭)
আত্মা বা ইদমেক এবাগ্র আসীৎ। নান্যৎ কিঞ্চন মিষৎ। স ঈক্ষত লোকান্নু সৃজা ইতি(ঐতরেয় ব্রাহ্মণ ১/১/১)
অনুবাদ:- এই জগত সৃষ্টির প্রথমে একমাত্র পরমাত্মাই ছিলেন। তিনি ভিন্ন অন্য কেউ ছিলেন না। তিনি লোকসমূহ সৃষ্টির জন্য ইচ্ছা করলেন।
সোহকাময়ৎ। বহুস্যাম প্রজায়েয়তি (তৈত্তীরিয় উপনিষদের ব্রহ্মানন্দবল্লী ৬/৪)
অনুবাদ:- সেই পরমেশ্বর ইচ্ছা করলেন। আমি বহু হয়ে যাই।
স যথোর্ণনাভিস্তন্তুনোচ্চরেদ্যথাগ্নেঃ ক্ষুদ্রা বিস্ফুলিঙ্গাঃ ব্যুচ্চেরন্ত্যেবমেবাস্মাদত্মনঃ সর্বে প্রাণাঃ সর্বে লোকাঃ সর্বে দেবাঃ সর্বাণি ভূতানি ব্যুচ্চরন্তি তস্যোপনিষৎ সত্যস্য সত্যমিতি প্রাণা বৈ সত্যং তেষামেষ সত্যম।। (বৃহদারণ্যক উপনিষদ ২/১/২০)
শঙ্কর ভাষ্য অনুযায়ী অনুবাদ:- যেমন একটি মাকড়সা তার লালা দিয়ে জাল তৈরী করে সেই জালে স্বেচ্ছায় বিচরন করেন, যেমন আগুনের অসংখ্য স্ফুলিঙ্গ তৈরী হয় তেমন পরমাত্মার থেকে সকল ইন্দ্রিয় সকল জীব, সকল দেবতা, ত্রিলোক সহ এই জগত সৃষ্টি হয়।  সেই পরমাত্মার উপনিষৎ সত্যের সত্য। ইন্দ্রিয়বৃন্দই সত্য, ইনি তাহাদের সত্য।
তদৈক্ষত বহুষ্যা প্রজায়য়েতি (ছান্দোগ্য উপনিষদ ৬/২/৩)
সর্ব্ব বেদান্ত প্রত্যয়ঞ্চোদনাদ্য বিশেষাৎ (বেদান্ত সূত্র ৩/৩/১)
সূত্রার্থ:- সমস্ত বেদান্তে ভিন্ন ভিন্ন রূপ উপাসনার কথা বলা হলেও মূলত তাদের কোনো ভেদ নেই।

২)সেই পরম তত্ত্ব বা ব্রহ্ম হলেন ইন্দ্র, বা অগ্নি, বা মিত্রা, বা বরুণ, বা সোম এরূপ পূর্বপক্ষের উত্তর
ক) বৃহদারণ্যক উপনিষদ ১/৪/১১
ব্রহ্ম বা ইদমগ্রে আসীদেকমেহ তদেকং সন্ন ব্যভবৎ তচ্ছ্রেয়ো রূপমত্যসৃজত ক্ষত্রং যান্যেতানি দেবত্রা ক্ষত্রাণীন্দ্রো বরুণঃ সোমো রুদ্র পর্জন্যো যমো মৃত্যুঃ ঈশান ইতি।
অনুবাদ:-জগত সৃষ্টির পূর্বে একমাত্র ব্রহ্মই ছিলেন। ব্রহ্ম হতে জীবসমূহ যথা চন্দ্র সূর্য বংশের ক্ষত্রিয় রাজগন,  ইন্দ্র বরুণ সোম রুদ্র পর্জন্য যম মৃত্যু ঈশান প্রভৃতি সৃষ্টি হল।
খ) ভয়াদস্যাগ্নিস্তপতি ভয়াত্তপতি সূর্য্যঃ
ভয়াদচন্দ্রশ্চ বায়ুশ্চ মৃত্যুর্ধাবতি পঞ্চমঃ (কঠ ২/৩/৩)
অনুূবাদ:- তার ভয়ে অগ্নি সূর্য্য চন্দ্র বায়ু যম নিজ নিজ কার্য্য করেন।
গ) বৃহদারণ্যক ৩য় অধ্যায়ে নবম ব্রাহ্মণে শাকল্য যাজ্ঞবল্ক্য সংবাদ।
অথ হৈনং বিদগ্ধঃ শাকল্যঃ প্রপচ্ছ কতি দেবা। যাজ্ঞবল্ক্যেতি স হৈতয়ৈব নিবিদা যাবন্তো প্রতিপেদে বৈশ্বদেবস্য নিবিদ্যুচ্যন্তে ত্রয়শ্চ ত্রী চ শতা ত্রয়শ্চ ত্রী চ সহস্রেত্যোমিতি।
হোবাচ কত্যেব দেবা
যাজ্ঞবল্ক্যেতি ত্রয়স্ত্রিংশদিত্যোমিতি।
হোবাচ কত্যেব দেবা
যাজ্ঞবল্ক্যেতি ষড়িত্যোমিতি।
হোবাচ কত্যেব দেবা
যাজ্ঞবল্ক্যেতি ত্রয় ইত্যোমিতি।
হোবাচ কত্যেব দেবা
যাজ্ঞবল্ক্যেতি দ্বাবিত্যোমিতি।
হোবাচ কত্যেব দেবা
যাজ্ঞবল্ক্যেত্যধ্যর্ধ ইত্যোমিতি।
হোবাচ কত্যেব দেবা
যাজ্ঞবল্ক্যেতি এক ইত্যোমিতি।
অনুবাদ:- বেদে ভগবান কতজন তার সমাধান হয়েছে। শাকল্য ঋষি যাজ্ঞবল্ক্য কে প্রশ্ন করলেন হে যাজ্ঞবল্ক্য, কতজন দেবতা আছেন? বেদের আহ্বানীয় মন্ত্রে যতজন দেবতার উল্লেখ আছে সেই অনুসারে যাজ্ঞবল্ক্য বললেন তিন শত তিন ও তিন সহস্র তিন।
শাকল্য বললেন প্রকৃতপক্ষে বেদে কতজন দেবতা আছেন?
যাজ্ঞবল্ক্য বললেন তেত্রিশ
শাকল্য পুনরায় বললেন আচ্ছা প্রকৃতপক্ষে  কতজন দেবতা আছেন? যাজ্ঞবল্ক্য বললেন ছয়।
শাকল্য পুনরায় বললেন আচ্ছা প্রকৃতপক্ষে  কতজন দেবতা আছেন? যাজ্ঞবল্ক্য বললেন তিনজন।
শাকল্য পুনরায় বললেন আচ্ছা প্রকৃতপক্ষে  কতজন দেবতা আছেন? যাজ্ঞবল্ক্য বললেন দুই।
শাকল্য পুনরায় বললেন আচ্ছা প্রকৃতপক্ষে  কতজন দেবতা আছেন? যাজ্ঞবল্ক্য বললেন দেড়জন
শাকল্য পুনরায় বললেন আচ্ছা প্রকৃতপক্ষে  কতজন দেবতা আছেন? যাজ্ঞবল্ক্য বললেন একজন।
এক বৃক্ষ তার শত শত শাখা শত শত পাতা। তেমন এক পরম পুরুষোত্তম যার শত শত প্রকাশ।

৩) উপনিষদে ব্রহ্মের লক্ষণ
জ্ঞানকান্ড উপনিষদে ঋষিরা প্রশ্ন করেছেন বেদে এতজন দেবতা আছেন কার উদ্দেশ্যে হবি প্রদান করব? কে পরমদেব? যাকে অর্পন করলে সর্বদেব কে নিবেদন করা হয়। তার উত্তরে বলা হয়েছে যিনি সৃষ্টি র আদিতে ছিলেন। যার থেকে জীবাত্মা ও জগতের উৎপত্তি তিনিই ব্রহ্ম। এই হল ব্রহ্মের লক্ষ্মন। বেদে একমাত্র বিষ্ণু সকলের আদি তার থেকে সমস্ত দেবতা দের, জগত ও জীবের উৎপত্তি বলা হয়েছে। অন্য দেবতার ক্ষেত্রে যে মহান সর্ব দেবাগ্রগন্য ইত্যাদি বলা হয়েছে তা বরকন্যা ন্যায়ের মতো। অর্থাৎ বিয়ের দিন যেমন বর বা কনের গুরুজন রা উপস্থিত থাকলেও বর বা কন্যা কেই সবচেয়ে বড় উঁচু ও সুন্দর আসনে বসানো হয়, সবচেয়ে সুন্দর পোশাক সবচেয়ে বড়ো ও সুন্দর মালা পরানো হয় তেমন যে দেবতা কে যখন আহ্বান করা হয়েছে তাকে মহান বলে স্তুতি করা হয়েছে। অর্থবাদ।
ব্রহ্মের লক্ষন বাচক মন্ত্র :-
ক) যতো বা ইমানি ভূতানি জায়ন্তে যেন জাতানি জীবন্তি যৎ প্রয়ন্তভিসংবিশন্তি। তদ্বিজিজ্ঞাসস্ব।  তদ ব্রহ্ম।
তৈত্তীরিয় উপনিষদ ভৃগুবল্লী/১ম অনুবাক/১ম মন্ত্র।
অনুবাদ:- জীব জগত যার থেকে উৎপন্ন, উৎপত্তির পর যাতে স্থিত, বা যার সহায়তায় জীবিত, প্রলয়ে যাতে প্রবেশকরে, তাকে জানো তিনিই ব্রহ্ম।
খ) দ্যুভ্বাদ্যায়তনং স্বশব্দাৎ (ব্রহ্ম সূত্র১/৩/১)
সূত্রার্থ:-ব্রহ্ম শব্দে তাকে বোঝায় যিনি শ্রুতিতে দ্যুলোক ও ভূলোক প্রভৃতির আধার বলে কীর্তীত হয়েছেন।
গ) ব্রহ্ম সূত্র ১/১/২ জন্মাদস্য যতঃ
সৃষ্টি ইত্যাদি যার থেকে।
ঘ) জগদব্যাপারবর্জ্জং প্রকরণাদসন্নিহিতত্বাচ্চ।। ব্রহ্ম সূত্র ৪/৪/১৭
একমাত্র জগতসৃষ্টাদি কার্য্য বাদে (জগদব্যাপারবর্জ্জং) অণিমাদি অন্যান্য ঐশ্বর্য্য মুক্তজীবগন বা অন্যদেবতাগনের মধ্যেও থাকে। একমাত্র পরমেশ্বরই সৃষ্টিকার্য্যাদি করতে পারেন। মুক্তজীবগন সৃষ্টাদিকার্য্যের সঙ্গে যুক্ত নয় (অসন্নিহিত)। শ্রুতি পরমেশ্বর বিষয়ক প্রকরণে তাই বলে।
ঙ) স বৈ নৈব রেমে তস্মাদেকাকী ন রমতে স দ্বিতীয় মৈচ্ছত। বৃহদারণ্যক ১/৪/৩
সৃষ্টির আদিতে একমাত্র ব্রহ্মই ছিলেন। একাকী আনন্দ নেই তাই তিনি মনে করলেন বহু হব। তাই তিনি নিজ প্রকৃতির প্রতি ঈক্ষণ করলেন।
চ) রসো বৈ সঃ ব্রহ্ম রস স্বরূপ। তৈত্তীরিয়, ব্রহ্মানন্দবল্লী ৭/২
ছ) আনন্দ ব্রহ্মেতি ব্যাজানাত তৈত্তীরিয় ৩/৬/১
অনুবাদ:- আনন্দ ই ব্রহ্ম
জ) আনন্দময়োহভ্যাসাৎ।।  ব্রহ্মসূত্র ১/১/১২
ব্রহ্ম আনন্দময় বলে শাস্ত্রে পুনঃ পুনঃ উল্লেখ থাকায়।

৩) উপনিষদে বিষ্ণু তত্ত্ব
ক) বৃহদারণ্যক ৬/৪/২১
বিষ্ণুর্যোনিং কল্পয়তু ত্বষ্টা রূপাণি পিংশতু
অনুবাদ:- বিষ্ণু যেমন জগতের উৎপত্তির কারন বা যোনি।
খ) তৈত্তীরিয় ১/১/১
শং নো মিত্র শং বরুণঃ শং নো ভবত্বর্যমা
শং ন ইন্দ্রো বৃহষ্পতিঃ শং নো বিষ্ণুরুরুক্রমঃ।
নমো ব্রহ্মণে। নমস্তে বায়ো। ত্বমেব প্রত্যক্ষং ব্রহ্মাসি। ত্বামেব প্রত্যক্ষং ব্রহ্ম বদিষ্যামি। সত্যং বদিষ্যামি।  তন্মামবতু তদ্বক্তারমবতু। অবতু মাম। অবতু বক্তারম।
গ) কঠ১/৩/৯ যম নচিকেতা কে উপদেশ করছে
বিজ্ঞান সারথির্যস্তু মনঃপ্রগ্রহবান নরঃ।
সঃ অধ্বনঃ পারমাপ্নোতি তৎ বিষ্ণোঃ পরমং পদম
অনুবাদ:- তৃতীয় থেকে নবম মন্ত্র পর্যন্ত সাতটি মন্ত্রে পরমাত্মা লাভের সাধন সম্পর্কে বলতে গিয়ে শেষে বলছেন এভাবে বুদ্ধি দ্বারা মন কে নিয়ন্ত্রন করে ভগবান কে চিন্তন করে সে পরম অভীষ্ট বিষ্ণু র চরন প্রাপ্ত হয়। এই মন্ত্রটি মৈত্রী উপনিষদেও আছে ৬/২৬
ঘ) মহোপনিষদ ১/১
একো হ বৈ নারায়ণ আসিৎ, ন ব্রহ্মা, ন ঈশানো ন ইমে দ্যাবাপৃথিবী।
ঙ) হ্রীশ্চতে লক্ষ্মীশ্চতে পত্নৌ। তৈত্তীরিয় আরণ্যক নারায়ণ অনুবাক
৪) বিষ্ণু ও সূর্য
যো অন্তরাদিত্যে হিরণ্ময়ঃ পুরুষো দৃশ্যতে
হিরণ্যশ্মশ্রুর্হিরণ্যকেশঃ অপ্রণখাত্সর্ব এব সুবর্ণঃ
তস্য যথা কপ্যাসং পুন্ডরীকমেবমক্ষিনী তস্যোদিতি নাম স এব সর্বেভ্যঃ পাপমেব উদিত উদেতি হ বৈ সর্বেভ্যঃ পাপমভ্যো য এবং বেদ।(ছান্দোগ্য উপনিষদে ১/৬/৬-৭)
সূর্যমন্ডলের অভ্যন্তরে এই যে হিরণ্যবর্ন অর্থাৎ জ্যোতির্ময় পুরুষ দৃশ্য হয় তার কেশ স্বর্ণ বর্ন, অঙ্গজ্যোতি স্বর্ণ বর্ন  আপাদমস্তক স্বর্ণ বর্ণ।
তাহার চক্ষুদ্বয় বানরের পশ্চাদভাগের ন্যায় যে লোহিতাত্ম পদ্ম সেই পদ্ম সদৃশ সমুজ্জ্বল।
(রঙ্গরামানুজ ভাষ্যেপূর্ন প্রস্ফুটিত পদ্মের ন্যায় যার চক্ষুদ্বয় শোভমান), তার নাম উৎ কারন তিনি সকল পাপ থেকে উর্দ্ধে স্থিত। যিনি এইরূপ জানেন তিনি ও পাপরাশী থেকে উত্তীর্ন হন। (রঙ্গরামানুজ ভাষ্যে তিনি প্রাকৃত জগতের উর্দ্ধে, যিনি তাকে অনুরূপ ভাবে জানতে পারেন তিনি প্রাকৃত জগতের উর্দ্ধে গমন করেন।)
ইনিই পরমাত্মা কারন পরমাত্মাই সমস্ত পাপের অতীত।যথা ছান্দোগ্যে ৮/৭/১ য আত্মাহপতপাপ্না (সেই পরমাত্মা পূণ্য ও পাপের অতীত)।

ধ্যেয় সদা সবিতৃমন্ডল মধ্যবর্তী নারায়ণ সরসিজাসন সন্নিবিষ্ট কেয়ূরবান কনককুন্ডলবান হিরন্ময় বপুর্ধৃত শঙ্খ চক্রঃ।
Mahabharatam Shanti Parv, Moksh Sarg 347.69-352.30

৪) উপনিষদে রুদ্র তত্ত্ব
দশটি প্রধান উপনিষদে শিব বা রুদ্রের কথা তেমন পাওয়া যায়না। কেবল বৃহদারন্যকে আছে শিবের কথা যে ব্রহ্ম থেকে ঈশানের উৎপত্তি।ও প্রশ্ন উপনিষদে প্রান(ব্রহ্ম) থেকে রুদ্রের উৎপত্তি হয়েছে।
শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে রুদ্রের কথা আছে। যদিও এটি মুখ্য দশটি উপনিষদের মধ্যে পড়েনা। কিন্তু শঙ্করাচার্য্য তার বেদান্তভাষ্যে এই উপনিষদ থেকে অনেক মন্ত্র উল্লেখ করেছেন। তাই অনেকে এটিকে প্রামানিক মানেন বিশেষত শৈব ও অদ্বৈতবাদীরা।
আবার এই উপনিষদ কে যেমন শৈব ও অদ্বৈতবাদীরা প্রামানিক মানেন। তেমন রামানুজাচার্য্য মহোপনিষদ শ্রুতি, নারায়ন উপনিষদ ও মাধ্বাচার্য্য ভাল্লবেয় শ্রুতি, পৈঙ্গী শ্রুতি থেকে তাদের ভাষ্যে প্রমান দিয়েছেন বিষ্ণু ই পরম ব্রহ্ম।
তং বৈ বিষ্ণুং পরমমুদাহরন্তীতি -ভাল্ববেয় শ্রুতি বৈষ্ণব বিবৃতিতে আছে।
বৃহদারণ্যক উপনিষদ ৩/৯/৪
কতমে রুদ্রা ইতি দশেমে পুরুষে প্রাণা আত্মৈকাদশস্তে যদাস্মাচ্ছরীরান্মর্ত্যাদুৎক্রামন্ত্যথ রোদয়ন্তি তদযদ রোদয়ন্তি তস্মাদ্রুদ্রা ইতি।।
শঙ্কর ভাষ্য অনুযায়ী অন্বয়:- কতমে রুদ্রা ইতি। পুরুষে= মানবদেহে। ইমে= এই যে।  দশ প্রাণঃ= ৫ কর্মেন্দ্রিয়, ৫ জ্ঞানেন্দ্রিয়, দশটি ইন্দ্রিয়। আত্মা=মন। একাদশঃ= এই ১১। যদা =যখন। তে= তারা। অস্মাৎ মর্ত্যাৎ শরীরাৎ= এই মর্ত্যদেহ হইতে উৎক্রামস্তি= উৎক্রান্ত হন। অথ= তখন। রোদয়ন্তি= আত্মীয়গন কে রোদন করান। যৎ=যেহেতু তৎ= ঐসময়ে রোদয়ন্তি= রোদন করান। তস্মাদ রুদ্রা ইতি= অতএব তারা রুদ্র।
শাকল্য প্রশ্ন করলেন রুদ্র কারা? যাজ্ঞবল্ক্য বললেন মানুষের দশটি ইন্দ্রিয  ও মন এই হল একাদশ রুদ্র(রুদ্র এগুলির অধিষ্ঠাত্রী দেব)।
মানুষ যখন স্থূল দেহ ত্যাগ করে তখন এই রুদ্ররাই তার আত্মীয় পরিজন কে রোদন করায় তাই তাদের নাম রুদ্র।
ব্যাখ্যা:-  বিষ্ণু পুরানে বর্ননা আছে রুদ্রের উৎপত্তির পর ব্রহ্মা ১১ জন রুদ্রকে ৫ কর্মেন্দ্রিয়, ৫ জ্ঞানেন্দ্রিয় ও মনে অধিষ্ঠান করতে বলেন তাই যখন এই ইন্দ্রিয় ও মন আর কার্য্য করেনা অর্থাৎ রুদ্ররা চলে যায় তখন আত্মীয় পরিজন রা কাঁদে। জীব কে কান্না করায় বলে তার নাম রুদ্র।
ভাগবতম এ এর ব্যাখ্যা করা হয়েছে যা আগে বলা হয়েছে।
Next page >>>