সেই একমাত্র প্রিয়তমা গোপী অর্থাৎ রাধিকার সাথে কৃষ্ণের বিহারের কথা ভাগবতে আরো আছে যথা
কান্তাঙ্গসঙ্গ কুচ কুঙ্কুম রন্জিতায়াঃ।
কুন্দস্রজঃ কুলপতেরিহ বাতি গন্ধঃ।। ভা:১০/৩০/১১
হে সখী হরিনী শ্রীকৃষ্ণ নিজের সুন্দর মুখ বাহু প্রভৃতি অঙ্গ দ্বারা তোমাদের নয়নসমূহের তৃপ্তি বিস্তার করতে করতে কি প্রিয়ার সাথে এখানে এসেছিলেন? যেহেতু এখানে প্রিয়তমার অঙ্গসঙ্গম কালে তার কুচকুঙ্কুম দ্বারা রন্জিত শ্রীকৃষ্ণের গলার কুন্দপুষ্পের মালার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
বাহুং প্রিয়াং স উপধায় গৃহীতপদ্মো
রামানুজস্তুলসিকালিকুলৈর্মদান্ধৈঃ।
অন্বীয়মান ইহ বস্তুরবঃ প্রণামং
কিং বাভিনন্দতি চরন প্রণয়াবলোকৈঃ।। ১০/৩০/১২
হে তরুগন প্রিয়ার স্কন্ধদেশে বাহু সমর্প্পন করে হাতে লীলাকমল ধারন করে গলায় তুলসীমালার গন্ধে আকৃষ্ট মদমত্ত অনুগত ভ্রমর গনের সাথে ভ্রমন করতে করতে শ্রীকৃষ্ণ এখানে এসে তোমাদের প্রনাম গ্রহন করেছিলেন কি?
তাই এই গোপীই সকল গোপীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠা। ইনিই রাধারানী। এই গোপীকে সঙ্গে করে কৃষ্ণ রাসলীলা ত্যাগ করে তার সাথে একাকী বিহার করেন।
৬) রাধারানী লক্ষ্মীদেবীর অবতার বা অংশ কলা এইরূপ পূর্বপক্ষের খন্ডন
বিষ্ণুর শ্রী শক্তির প্রকাশ রুক্মিনী দেবী, ভূ শক্তির প্রকাশ সত্যভামা দেবী (পদ্মপুরান পাতাল খন্ড বা উত্তর খন্ডে) নীলা শক্তির প্রকাশ নাগ্নজিতি দেবী তে। রাধা রানী শ্রী, ভূ, বা নীলা শক্তির প্রকাশ নন।
ক) ভাগবতে বলা হয়েছে ১০/৫৪/৬০
দ্বারকায়ামভূদ রাজন! মহামোদঃ পুরৌকসাম।
রুক্মিণ্যা রময়োপেতং দৃষ্ট্বা কৃষ্ণং শ্রিয়ঃ পতিম।।
হে রাজন দ্বারকাবাসী গনের লক্ষ্মীরূপা রুক্মিনীর সাথে মিলিত শ্রীপতি শ্রীকৃষ্ণ কে দর্শন করে পরম আনন্দ হয়েছিল।
অতএব রুক্মিনী ই স্বয়ং লক্ষ্মী।
গোপীগন শ্রীকৃষ্ণের স্বরূপশক্তির প্রকাশ। স্বরূপশক্তি বা হ্লাদিনীশক্তিই রাধারানী রূপে আবির্ভূতা তার থেকে গোপীগণের প্রকাশ। যথা ভাগবতম এ
ধারয়ন্ত্যতিকৃচ্ছ্রেণ প্রায়ঃ প্রাণান কথঞ্চন।
প্রত্যাগমন সন্দেশৈর্বল্লব্যো মে মদাত্মিকাঃ।। ভা:১০/৪৬/৬
গোপিগন আমার স্বরূপশক্তিভূত (মদাত্মিকা)। আমি গোকুল থেকে আসার সময় শীঘ্রই ফিরে আসব এরূপ বলে এসেছিলাম, এই আশ্বাসবাক্যেই কোনক্রমে অতিকষ্টে তারা এখনও জীবনধারণ করছে।
শ্রীকৃষ্ণ গোপীদের বল্লভ তাই তাদের বল্লবী বলেছেন। যেমন ব্রাহ্মনের সমান ব্রাহ্মনী হয় গোপ কৃষ্ণের সমান গোপী।
খ) লক্ষ্মী দেবী বা দ্বারকার মহিষীরা ও গোপীদের মত সৌভাগ্যের অধিকারী নয়।
পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ গোয়ালিনী রাধারানীর মান ভন্জনের জন্য পায়ে পড়ে বলতেন দেহি পদপল্লবমুদারম।
রাধারানীর এই সৌভাগ্য দ্বারকার মহিষী রাও স্বয়ং বৈকুন্ঠেশ্বরী লক্ষ্মীদেবী ও বাঞ্ছা করেন বলে ভাগবতম এ বলা আছে যথা:-
ব্রজস্ত্রিয়ো যদ্বাঞ্ছস্তি পুলিন্দ্যস্তৃণবীরুধঃ।
গাবশ্চারয়তো গোপাঃ পাদস্পর্শং মহাত্মনঃ।। ১০/৮৩/৪৩
অনুবাদ:- দ্রৌপদীর কাছে দ্বারকার মহিষীগন বললেন ব্রজরমণী গন, গোপগন, পুলিন্দ রমনীগনও গোচারনশীল মহাত্মা শ্রীকৃষ্ণের ঐ পদরজঃ লাভ করেছিল। আমরা ও সেই পাদরজঃ কামনা করি।
প্রিয় নর্ম্মসখাগনের মধ্যে কেউ কেউ যেমন সুবল গোপীভাবে ভাবিতমতি। তারা ও চরনকমলের স্পর্শ বাঞ্ছা করে। শবর রমনী রা কিভাবে সেই পাদরজ লাভ করলেন?
যথা ভা: ১০/২১/১৭
পূর্ণাঃ পুলিন্দ্য উরুগায়পদাব্জরাগ
শ্রীকুঙ্কুমেন দয়িতাস্তনমন্ডিতেন।
তদ্দর্শনস্মররুজস্তৃণরূষিতেন
লিম্পন্ত্য আননকুচেষু জহুস্তদাধিম।।
অনুবাদ:- এই সকল শবর কামিনীও আজ কৃতার্থ হয়েছে। কারন প্রিয়তমার(রাধার) স্তনমন্ডলে লিপ্ত কুঙ্কুম রতিকালে শ্রীকৃষ্ণের চরনপদ্মে সংলগ্ন হয়েছিল। পরে কৃষ্ণের বনে যাওয়া আসার সময় তার চরনকমল থেকে স্খলিত হয়ে তৃণভূমিতে বিন্যস্ত হয়েছিল। সেই কুঙ্কুম দর্শনে শবরীরা ঐ কুঙ্কুম মুখমন্ডলে ও কুচদ্বয়ে লেপন করে কৃষ্ণ স্পর্শ সুখ লাভ করেছিল।
বৈকুন্ঠেশ্বরী লক্ষ্মীদেবী ও সেই গোপীগনের সৌভাগ্য প্রার্থনা করেন যথা:-
নায়ং শ্রিয়োহঙ্গ উ নিতান্তরতেঃ প্রসাদঃ
স্বর্যোষিতাং নলিনগন্ধরুচাং কুতোহন্যাঃ।
রাসোৎসবেহস্য ভূজদন্ডগৃহীতকন্ঠ
লব্ধাশিষাং য উদগাদব্রজবল্লবীনাম।। ১০/৪৭/৬০
অনুবাদ:- রাসলীলায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজ ভূজদন্ড দ্বারা যখন গোপীদের কন্ঠ আলিঙ্গন করে তাদের অভীষ্টপূরন দ্বারা যেরকম অনুগ্রহ প্রদর্শন করেছিলেন তার বক্ষস্থলে একান্তাসক্তা লক্ষ্মীদেবী বা পদ্মসদৃশ অঙ্গসৌরভ ও কান্তিবিশিষ্টা স্বর্গের রমণী রা ও সেরকম অনুগ্রহ লাভ করতে পারেন নি।
যা বৈ শ্রিয়ার্চ্চিতমজাদিভিরাপ্তকামৈ
র্যোগশ্বরৈরপি যদাত্মনি রাসগোষ্ঠ্যাম।
কৃষ্ণস্য তদ্ভগবতশ্চরণারবিন্দং
ন্যস্তং স্তনেষু বিজহুঃ পরিরভ্য তাপম।। ১০/৪৭/৬২
অনুবাদ :- লক্ষ্মীদেবী যার পদসেবা, আপ্তকাম ব্রহ্মাদি যাকে কেবলমাত্র হৃদয়ে যে শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্ম অর্চ্চনা করেন। রাসক্রীড়ায় সাক্ষাদভাবে সেই ভগবানের চরনকমল নিজ স্তনমন্ডলে আলিঙ্গন পূর্ব্বক গোপীগন চিত্তসন্তাপ পরিত্যাগ করেছিলেন।
কস্যানুভাবোহস্য ন দেব বিদ্মহে
তবাঙ্ঘ্রিরেণুস্পর্শাধিকারঃ
যদ্বাঞ্ছয়া শ্রীর্ললনাচরৎ তপো
বিহায় কামান্ সুচিরং ধৃতব্রতা।। ১০/১৬/৩৬
হে দেব যে পদরেণুলাভের আশায় সুন্দরী শ্রীদেবী বিষয়ান্তর পরিত্যাগপূর্ব্বক চিরকাল ব্রতশীলা হয়ে তপস্যা করেছিলেন। এই কালীয় কোন পূণ্যপ্রভাবে সেই চরনরেণু লাভের অধিকারী হলেন।
শ্রীঃ প্রেক্ষ্য কৃষ্ণ সৌন্দর্য্যং তত্র লুব্ধাচরত্তপঃ লঘুভাগবতামৃতে
গ) ন তথা মে প্রিয়তম আত্মযোনির্ন শঙ্করঃ।
ন চ সঙ্কর্ষণো ন শ্রীর্নৈবাত্মা চ যথা ভবান।। ১১/১৪/১৫
হে উদ্ধব তুমি আমার যেরূপ প্রিয়তম আমার পুত্র ব্রহ্মা, স্বরূপভূত শঙ্কর, ভ্রাতা সংকর্ষন, লক্ষ্মীদেবী ও বা নিজস্বরূপ ও কাদৃশ প্রিয়তম নয়।
এহেন উদ্ধব জীর থেকে ও ব্রজগোপীরা বরীয়সী। কারন তাদের ভক্তিতে যে ভাব তা দেখে উদ্ধবজী ও তাদের চরনরেনু পাওয়ার আশা করেছেন।
আসামহো চরণরেণুজুষামহং স্যাং
বৃন্দাবনে কিমপি গুল্মলতৌষধীনাম।
যা দুস্ত্যজং স্বজনমার্য্যপথঞ্চ হিত্বা
ভেজর্মুকুন্দপদবীং শ্রুতিভির্বিমৃগ্যাম।। ১০/৪৭/৬১
অনুবাদ:- উদ্ধব বললেন এই গোপীরা দুস্ত্যজ্য স্বজন বান্ধব, আর্য্যধর্ম পরিত্যাগ করে শ্রুতিগন কর্তৃক অন্বেষণীয় গোবিন্দপাদপদ্ম ভজনা করেছেন, অহো বৃন্দাবনের গুল্মলতা মধ্যে যে কোনো জন্মলাভ করে তাদের চরনরেনু লাভ করে যেন কৃতার্থ হতে পারি।
বিভিন্ন পুরানে রাধা তত্ত্ব
৭) পদ্মপুরাণ পাতাল খন্ড ৩৯ অধ্যায়
রাধয়া সহ গোবিন্দং স্বর্ন সিংহাসনে স্থিতম।
পূর্বোক্তরূপলাবণ্যং দিব্যভূষাম্বরস্রজম।। ২
মহাদেব পার্বতী কে বললেন, রাধা সহ গোবিন্দ স্বর্নসিংহাসনে অবস্থান করছেন, তার রূপমাধুরী তোমাকে বর্ননা করেছি। তিনি দিব্য ভূষা বসন মাল্য পরিধান করেছেন।
ত্রিভঙ্গমন্জুসুস্নিগ্ধং গোপীলোচনতারকম।
তদ্বাহ্যে যোগপীঠে চ স্বর্নসিংহাসনাবৃতে।। ৩
তিনি ত্রিভঙ্গমূর্ত্তি, মনোহর ও সুস্নিগ্ধ, গোপীগনের নয়নতারা সদৃশ। ঐ সিংহাসনের বাইরে স্বর্নসিংহাসনাবৃত যোগপীঠে ললিতা প্রভৃতি প্রধানা কৃষ্ণ বল্লভা বিরাজ করছেন।
প্রত্যঙ্গরভসাবেশাঃ প্রধানা কৃষ্ণ বল্লভাঃ।
ললিতাদ্যাঃ প্রকৃত্যাংশা মূলপ্রকৃতি রাধিকা।। ৪
তাদের প্রত্যেকের অঙ্গ রসভাবপূর্ন, রাধিকাই মূল প্রকৃতি, ললিতাদি ঐ মূল প্রকৃতির অংশ স্বরূপ।
সম্মুখে ললিতা দেবী শ্যামলা বায়ূকোনকে
উত্তরে শ্রীমতি ধন্যা ঐশান্যাং শ্রীহরিপ্রিয়া।। ৫
সামনে ললিতাদেবী, বায়ুকোনে শ্যামলা, উত্তরে শ্রীমতী ধন্যা, ঈশানে হরিপ্রিয়া।
বিশাখা চ তথা পূর্ব্বে শৈব্যা চাগ্নৌ ততঃ পরম।
পদ্মা চ দক্ষিনে ভদ্রা নৈর্ঋতে ক্রমশঃ স্থিতাঃ।। ৬
পূর্বে বিশাখা, অগ্নিকোনে শৈব্যা, দক্ষিন কোনে পদ্মা, নৈর্ঋত কোনে ভদ্রা, যথাক্রমে অবস্থান করছেন।
যোগপীঠে কেশরাগ্রে চারুচন্দ্রাবতী প্রিয়া।
অষ্টৌ প্রকৃতয়ঃ পূণ্যাঃ প্রধানা কৃষ্ণ বল্লভঃ।। ৭
ঐ যোগপীঠের কেশরাগ্রে শ্রীকৃষ্ণপ্রিয়া সুন্দরী চন্দ্রাবলী বিদ্যমান। এই আটজন প্রধানা কৃষ্ণ বল্লভা।
প্রধানপ্রকৃতিস্ত্বাদ্যা রাধা চন্দ্রাবলী সমা।
চন্দ্রাবলী চিত্ররেখা চন্দ্রা মদনসুন্দরী।। ৮
রাধা আদি প্রকৃতি। চন্দ্রাবলী, চিত্ররেখা, চন্দ্রা, মদনসুন্দরী, ও
প্রিয়া চ শ্রী মধুমতী চন্দ্ররেখা হরিপ্রিয়া।
ষোড়শাদ্যাঃ প্রকৃতয়ঃ প্রধানাঃ কৃষ্ণবল্লভাঃ।। ৯
মধুমতী, হরিপ্রিয়া, চন্দ্ররেখা, এই ষোলোজন আদি প্রকৃতির সদৃশী, ও শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয়া।
বৃন্দাবনেশ্বরী রাধা তথা চন্দ্রাবলী প্রিয়া।
অভিন্নগুনলাবণ্য সৌন্দর্য্যাশ্চর্য্যলোচনাঃ।। ১০
বৃন্দাবনেশ্বরী রাধা, ও শ্রীহরিপ্রিয়া চন্দ্রাবলী উভয়েই সমান লাবণ্য ও সৌন্দর্য্যযুক্তা আশ্চর্য্য লোচনযুক্তা।
মনোহরা মুগ্ধবেষাঃ কিশোরী বয়সোজ্জ্বলাঃ।
অগ্রেসরাস্তথা চান্যা গোপকন্যাঃ সহস্রশঃ।। ১১
তাদের সামনে মনোহারিনী মুগ্ধবেশধারিণী কিশোরী যৌবনসমাগমে উজ্জ্বল কান্তিশালীনি সহস্র সহস্র গোপকন্যা বিরাজ করে থাকেন।
শুদ্ধকাঞ্চনপুন্জাভাঃ সুপ্রসন্নাঃ সুলোচনাঃ।
তদ্রূপহৃদয়ারূঢ়াস্তদাশ্লেষসমুৎসুকাঃ।।১২
তারা বিশুদ্ধকাঞ্চন সদৃশ কান্তিমতী সুপ্রসন্না এবং সুলোচনা তাদের হৃদয় কৃষ্ণরূপে মগ্ন আছে, এবং ঐ রূপ আলিঙ্গনের জন্য তারা উৎসুক আছেন।
শ্যামামৃতরসে মগ্নাঃ স্ফুরত্তদ্ভাবমানসাঃ।
নেত্রোৎপলার্চ্চিতে কৃষ্ণপাদাব্জেহর্পিতচেতসঃ।। ১৩
তারা শ্যামরসে মগ্না ও তদগতচিত্তা, তারা তাদের নয়নকমল দ্বারা পূজিত শ্রীকৃষ্ণের চরনকমলে হৃদয় অর্পন করেছেন।
শ্রুতিকন্যাস্ততো দক্ষে সহস্রাযুতসংযুতাঃ।
জগন্মুগ্ধীকৃতাকারা হৃদ্বর্ত্তিকৃষ্ণলালসাঃ।। ১৪
তাদের ডানদিকে শ্রুতিকন্যাগন বিরাজ করেন। তাহারা সহস্রযুতসংখ্যক। আকৃতি দ্বারা জগত্রয়কে মুগ্ধকরেছেন, এবং তাদের হৃদয়ে কৃষ্ণ লালসা বিদ্যমান।
পাতাল খন্ডে ৩৮ অধ্যায়ে ১২০ শ্লোকে
তৎ প্রিয়া প্রকৃতিস্ত্বাদ্যারাধিকা কৃষ্ণ বল্লভা।
তৎ কলা কোটি কোট্যাংশা দুর্গাদ্যাস্ত্রিগুণাত্মিকাঃ
তস্যাঃ পাদরজঃস্পর্শাৎ কোটিবিষ্ণুঃ প্রজায়তে।।
অনুবাদ:- তাহার প্রিয়তমা রাধিকাই আদ্যাপ্রকৃতি, তিনি কৃষ্ণবল্লভা, সেই রাধিকার কোটি কোটি কলাংশ হতে ত্রিগুনময়ী দূর্গাদি দেবীগনের উৎপত্তি। এই রাধিকার পাদধূলিস্পর্শে কোটি বিষ্ণুর উৎপত্তি হয়ে থাকে।
পদ্মপুরানে রাধাকুন্ডের মাহাত্ম্য
যথা রাধা প্রিয়া বিষ্ণোস্তস্যাঃ কুন্ডং প্রিয়ং তথা।
সর্বগোপীষু সৈবৈকা বিষ্ণোরত্যন্তবল্লভা।।
শ্রীমতি রাধারানী যেমন শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়া রাধাকুন্ডও তেমন শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয় স্থান। সমস্ত গোপীদের মধ্যে রাধারানী শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয়।
ভূমি খন্ডে রাধাষ্টমী ব্রত মাহাত্ম্য, রাধারানীর জন্মলীলা রাধা দামোদর ব্রত
৮) অথর্ববেদের গোপালতাপনী শ্রুতি তে উত্তরতাপনী তে ৯ম মন্ত্রে দুর্ব্বাসা ঋষির কাছে গান্ধর্ব্বী নামে গোপীকে মুখ্য করে গোপীরা প্রশ্ন করল। কি কারনে আমাদের মতো গোপ জাতির রমনীর গর্ভে এই গোপাল জন্মগ্রহন করেছেন।
সা হোবাচ গান্ধর্ব্বী, কথং বাহস্মাসু জাতোহসৌ গোপালঃ?
রাধারানীর নাম ই গান্ধার্ব্বিকা বা গান্ধর্ব্বী। কেননা তাসাং মধ্যে শ্রেষ্ঠা গান্ধর্ব্বী হোবাচ সহৈবৈতাভিরেবং বিচার্য এই শ্রুতি তে স্পষ্ট যে গোপীদের মধ্যে একজন সর্বশ্রেষ্ঠ যার নাম গান্ধর্ব্বী।
৯) স্কন্দপুরানে
স্কন্দপুরানে বিষ্ণুখন্ডে ভাগবতমাহাত্ম্যে ১ম অধ্যায়ে শান্ডিল্যমুনি বলেছেন রাধা হল নন্দনন্দন শ্রীকৃষ্ণের আত্মা তিনি শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে নিত্যলীলা উপভোগ করেন, তাই শ্রীকৃষ্ণ কে ভক্তরা আত্মারাম বলে।
আত্মা তু রাধিকা তস্য তয়ৈব রমণাদসৌ।
আত্মারামতয়া প্রাজ্ঞৈঃ প্রোচ্যতে গূঢ়বেদিভিঃ।। ১/২২
২য় অধ্যায়ে কালীন্দি ও কৃষ্ণ মহিষী সংবাদে
কৃষ্ণের সকল সঙ্গিনীরাই শ্রীরাধিকার সম্প্রসারিত রূপ, শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরাধিকা অভিন্নরূপ।।
শ্রীকালিন্দ্যুবাচ।
আত্মারামস্য কৃষ্ণস্য ধ্রুবমাত্মাস্তি রাধিকা।
তস্য দাস্যপ্রভাবেণ তস্যাদাস্য প্রভাবেণ বিরহোহস্মান্ন সংস্পৃশেৎ।। ১১
তস্যা এবাংশবিস্তারাঃ সর্ব্বা কৃষ্ণনায়িকাঃ।
নিত্যসম্ভোগ এবাস্তি তস্যাঃ সাম্মুখ্যযোগতঃ।। ১২
অনুবাদ :- আত্মারাম কৃষ্ণের আত্মা রাধিকা, আমি তার দাসী তাই রাধাদাস্য প্রভাবেই কাতরতা আমাকে স্পর্শ করেনি। কৃষ্ণের যেসব নায়িকা তারা ও রাধিকার অংশবিস্তার বলে জানবে। রাধিকার সাথে কৃষ্ণের নিত্য সম্ভোগ রাধিকা যোগেই অন্য নায়িকারা কৃষ্ণের সাথে সম্বন্ধ যুক্ত হয়।
স্কন্দ পুরানে প্রভাসখন্ডে দ্বারকা মাহাত্ম্য বা প্রহ্লাদ সংহিতায় ১২ অধ্যায়ে উদ্ধবগমন প্রসঙ্গে রাধা ললিতা বিশাখা সহ আটজন প্রধান গোপীর নাম পাওয়া যায়।
তচ্ছ্রুত্ব বচনং তস্য ললিতা ক্রোধ মূর্চ্ছিত।
উদ্ধবং তাম্রনয়না প্রোবাচ রুদতী তদা।। ২৪
ললিতোবাচ।
অসত্যো ভিন্নমর্য্যাদঃ ক্রুরঃ ক্রুরজনপ্রিয়ঃ।
ত্বং মা ক্বথা নঃ পুরতঃ কথাং তস্যাকৃতাত্মনঃ।। ২৫
ধিগধিক পাপসমাচায়ো ধিগধিক বৈ নিষ্ঠুরাশয়ঃ।
হিত্বা যঃ স্ত্রীজনং মূঢ়ো গতো দ্বারাবতীং হরিঃ।। ২৬
উদ্ধবের এই প্রকার কথা শুনে ক্রোধ মূর্চ্ছিতা ললিতা দেবী কাঁদতে কাঁদতে আরক্তনেত্রে উদ্ধব কে বললেন তুমি অসত্য ভিন্নমর্যাদ ক্রুর ক্রুরজনপ্রিয়। আমাদের সামনে তুমি আর সেই অকৃতজ্ঞের কথা বলো না। যে মূঢ় অনুরক্ত স্ত্রীজন কে বর্জ্জন করে দ্বারাবতী তে গেছে সেই পাপাচারী নিষ্ঠুরাশয় হরিকে শত ধিক।
শ্যামলোবাচ।
কিং তস্য মন্দভাগ্যস্য অল্পপূণ্যস্য দুর্ম্মতেঃ।
মা কুরুধ্বং কথাঃ সাধ্ব্যঃ কথাং কথয়তাপরাম।। ২৭
শ্যামলা বললেন সাধ্বীগন সেই মন্দভাগ্য অল্পপূণ্য দুর্ম্মতি হরির কথা আর বলোনা, বরং অন্য কথা বলো।
ধন্যোবাচ।
কেনায়ং হি সমানীতো দূতো দুষ্টজনস্যচ।
যাতু তেন পথা পাপঃ পুনর্নায়াতি যেন চ।। ২৮
ধন্যা বললেন এই দুষ্টজনের দুষ্ট দূতকে কে এখানে আনল? যে পথে গিয়ে আর ফিরে আসতে না পারে এই পাপিষ্ঠ সেই পথে চলে যাক।
বিশাখোবাচ।
ন শীলং ন কুলং যস্য নাস্তি পাপকৃতং ভয়ম।
তস্য স্ত্রীহননে সাধ্ব্যো জ্ঞায়তে জন্ম কর্ম্ম চ।।
হীনস্য পুরুষার্থেন তেন সঙ্গো নিরর্থকঃ। ২৯
বিশাখা বললেন যার কুল নেই শীল নেই পাপ কার্য্যে ভয় নেই হে সাধ্বীগন তার জন্ম কর্ম্ম কিরূপ তা স্ত্রীবধ কার্য্যেই বোঝা গেছে।
শ্রীরাধোবাচ
ভূতানাং ঘাতনে যস্য নাস্তি পাপকৃতং ভয়ম।
তস্য স্ত্রীহননে সাধ্যঃ শঙ্কা কাপি ন বিদ্যতে।। ৩০
শ্রীরাধা বললেন প্রানীহত্যায় যার পাপ ভয় নেই অবলাজন হননে তার আবার শঙ্কা কিসের?
শৈব্যোবাচ।
সত্যং ব্রুহি মহাভাগ কিং করোতি যদূত্তমঃ।
সঙ্গতো নাগরোস্ত্রীভিরস্মাকং কিং কথাং স্মরেৎ।। ৩১
শৈব্যা বললেন ওহে মহাভাগ সত্যি করে বলো সেই যদুবর কি করছেন? তিনি নাগরীগনের সাথে সঙ্গত হয়ে আমাদের কথা কি স্মরণ করেন?
পদ্মোবাচ।
কদোদ্ধব মহাভাগ নাগরীজনবল্লভঃ।
সমেষ্যতীহ দাশার্হঃ পদ্মপত্রায়তেক্ষণঃ।। ৩২
পদ্মা বললেন বলো উদ্ধব কবে সেই নাগরীজনবল্লভ অম্বুজাক্ষ এখানে আগমন করবেন?
ভদ্রোবাচ।
হা কৃষ্ণ হা গোপবর হা গোপীজনবল্লভ।
সমুদ্ধর মহাবাহো গোপীঃ সংসারসাগরাৎ।। ৩৩
ভদ্রা বললেন হা কৃষ্ণ! হা গোপীজনবল্লভ! সংসার সাগর হইতে আমাদের ত্রাণ করো।
কান্তাঙ্গসঙ্গ কুচ কুঙ্কুম রন্জিতায়াঃ।
কুন্দস্রজঃ কুলপতেরিহ বাতি গন্ধঃ।। ভা:১০/৩০/১১
হে সখী হরিনী শ্রীকৃষ্ণ নিজের সুন্দর মুখ বাহু প্রভৃতি অঙ্গ দ্বারা তোমাদের নয়নসমূহের তৃপ্তি বিস্তার করতে করতে কি প্রিয়ার সাথে এখানে এসেছিলেন? যেহেতু এখানে প্রিয়তমার অঙ্গসঙ্গম কালে তার কুচকুঙ্কুম দ্বারা রন্জিত শ্রীকৃষ্ণের গলার কুন্দপুষ্পের মালার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
বাহুং প্রিয়াং স উপধায় গৃহীতপদ্মো
রামানুজস্তুলসিকালিকুলৈর্মদান্ধৈঃ।
অন্বীয়মান ইহ বস্তুরবঃ প্রণামং
কিং বাভিনন্দতি চরন প্রণয়াবলোকৈঃ।। ১০/৩০/১২
হে তরুগন প্রিয়ার স্কন্ধদেশে বাহু সমর্প্পন করে হাতে লীলাকমল ধারন করে গলায় তুলসীমালার গন্ধে আকৃষ্ট মদমত্ত অনুগত ভ্রমর গনের সাথে ভ্রমন করতে করতে শ্রীকৃষ্ণ এখানে এসে তোমাদের প্রনাম গ্রহন করেছিলেন কি?
তাই এই গোপীই সকল গোপীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠা। ইনিই রাধারানী। এই গোপীকে সঙ্গে করে কৃষ্ণ রাসলীলা ত্যাগ করে তার সাথে একাকী বিহার করেন।
৬) রাধারানী লক্ষ্মীদেবীর অবতার বা অংশ কলা এইরূপ পূর্বপক্ষের খন্ডন
বিষ্ণুর শ্রী শক্তির প্রকাশ রুক্মিনী দেবী, ভূ শক্তির প্রকাশ সত্যভামা দেবী (পদ্মপুরান পাতাল খন্ড বা উত্তর খন্ডে) নীলা শক্তির প্রকাশ নাগ্নজিতি দেবী তে। রাধা রানী শ্রী, ভূ, বা নীলা শক্তির প্রকাশ নন।
ক) ভাগবতে বলা হয়েছে ১০/৫৪/৬০
দ্বারকায়ামভূদ রাজন! মহামোদঃ পুরৌকসাম।
রুক্মিণ্যা রময়োপেতং দৃষ্ট্বা কৃষ্ণং শ্রিয়ঃ পতিম।।
হে রাজন দ্বারকাবাসী গনের লক্ষ্মীরূপা রুক্মিনীর সাথে মিলিত শ্রীপতি শ্রীকৃষ্ণ কে দর্শন করে পরম আনন্দ হয়েছিল।
অতএব রুক্মিনী ই স্বয়ং লক্ষ্মী।
গোপীগন শ্রীকৃষ্ণের স্বরূপশক্তির প্রকাশ। স্বরূপশক্তি বা হ্লাদিনীশক্তিই রাধারানী রূপে আবির্ভূতা তার থেকে গোপীগণের প্রকাশ। যথা ভাগবতম এ
ধারয়ন্ত্যতিকৃচ্ছ্রেণ প্রায়ঃ প্রাণান কথঞ্চন।
প্রত্যাগমন সন্দেশৈর্বল্লব্যো মে মদাত্মিকাঃ।। ভা:১০/৪৬/৬
গোপিগন আমার স্বরূপশক্তিভূত (মদাত্মিকা)। আমি গোকুল থেকে আসার সময় শীঘ্রই ফিরে আসব এরূপ বলে এসেছিলাম, এই আশ্বাসবাক্যেই কোনক্রমে অতিকষ্টে তারা এখনও জীবনধারণ করছে।
শ্রীকৃষ্ণ গোপীদের বল্লভ তাই তাদের বল্লবী বলেছেন। যেমন ব্রাহ্মনের সমান ব্রাহ্মনী হয় গোপ কৃষ্ণের সমান গোপী।
খ) লক্ষ্মী দেবী বা দ্বারকার মহিষীরা ও গোপীদের মত সৌভাগ্যের অধিকারী নয়।
পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ গোয়ালিনী রাধারানীর মান ভন্জনের জন্য পায়ে পড়ে বলতেন দেহি পদপল্লবমুদারম।
রাধারানীর এই সৌভাগ্য দ্বারকার মহিষী রাও স্বয়ং বৈকুন্ঠেশ্বরী লক্ষ্মীদেবী ও বাঞ্ছা করেন বলে ভাগবতম এ বলা আছে যথা:-
ব্রজস্ত্রিয়ো যদ্বাঞ্ছস্তি পুলিন্দ্যস্তৃণবীরুধঃ।
গাবশ্চারয়তো গোপাঃ পাদস্পর্শং মহাত্মনঃ।। ১০/৮৩/৪৩
অনুবাদ:- দ্রৌপদীর কাছে দ্বারকার মহিষীগন বললেন ব্রজরমণী গন, গোপগন, পুলিন্দ রমনীগনও গোচারনশীল মহাত্মা শ্রীকৃষ্ণের ঐ পদরজঃ লাভ করেছিল। আমরা ও সেই পাদরজঃ কামনা করি।
প্রিয় নর্ম্মসখাগনের মধ্যে কেউ কেউ যেমন সুবল গোপীভাবে ভাবিতমতি। তারা ও চরনকমলের স্পর্শ বাঞ্ছা করে। শবর রমনী রা কিভাবে সেই পাদরজ লাভ করলেন?
যথা ভা: ১০/২১/১৭
পূর্ণাঃ পুলিন্দ্য উরুগায়পদাব্জরাগ
শ্রীকুঙ্কুমেন দয়িতাস্তনমন্ডিতেন।
তদ্দর্শনস্মররুজস্তৃণরূষিতেন
লিম্পন্ত্য আননকুচেষু জহুস্তদাধিম।।
অনুবাদ:- এই সকল শবর কামিনীও আজ কৃতার্থ হয়েছে। কারন প্রিয়তমার(রাধার) স্তনমন্ডলে লিপ্ত কুঙ্কুম রতিকালে শ্রীকৃষ্ণের চরনপদ্মে সংলগ্ন হয়েছিল। পরে কৃষ্ণের বনে যাওয়া আসার সময় তার চরনকমল থেকে স্খলিত হয়ে তৃণভূমিতে বিন্যস্ত হয়েছিল। সেই কুঙ্কুম দর্শনে শবরীরা ঐ কুঙ্কুম মুখমন্ডলে ও কুচদ্বয়ে লেপন করে কৃষ্ণ স্পর্শ সুখ লাভ করেছিল।
বৈকুন্ঠেশ্বরী লক্ষ্মীদেবী ও সেই গোপীগনের সৌভাগ্য প্রার্থনা করেন যথা:-
নায়ং শ্রিয়োহঙ্গ উ নিতান্তরতেঃ প্রসাদঃ
স্বর্যোষিতাং নলিনগন্ধরুচাং কুতোহন্যাঃ।
রাসোৎসবেহস্য ভূজদন্ডগৃহীতকন্ঠ
লব্ধাশিষাং য উদগাদব্রজবল্লবীনাম।। ১০/৪৭/৬০
অনুবাদ:- রাসলীলায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজ ভূজদন্ড দ্বারা যখন গোপীদের কন্ঠ আলিঙ্গন করে তাদের অভীষ্টপূরন দ্বারা যেরকম অনুগ্রহ প্রদর্শন করেছিলেন তার বক্ষস্থলে একান্তাসক্তা লক্ষ্মীদেবী বা পদ্মসদৃশ অঙ্গসৌরভ ও কান্তিবিশিষ্টা স্বর্গের রমণী রা ও সেরকম অনুগ্রহ লাভ করতে পারেন নি।
যা বৈ শ্রিয়ার্চ্চিতমজাদিভিরাপ্তকামৈ
র্যোগশ্বরৈরপি যদাত্মনি রাসগোষ্ঠ্যাম।
কৃষ্ণস্য তদ্ভগবতশ্চরণারবিন্দং
ন্যস্তং স্তনেষু বিজহুঃ পরিরভ্য তাপম।। ১০/৪৭/৬২
অনুবাদ :- লক্ষ্মীদেবী যার পদসেবা, আপ্তকাম ব্রহ্মাদি যাকে কেবলমাত্র হৃদয়ে যে শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্ম অর্চ্চনা করেন। রাসক্রীড়ায় সাক্ষাদভাবে সেই ভগবানের চরনকমল নিজ স্তনমন্ডলে আলিঙ্গন পূর্ব্বক গোপীগন চিত্তসন্তাপ পরিত্যাগ করেছিলেন।
কস্যানুভাবোহস্য ন দেব বিদ্মহে
তবাঙ্ঘ্রিরেণুস্পর্শাধিকারঃ
যদ্বাঞ্ছয়া শ্রীর্ললনাচরৎ তপো
বিহায় কামান্ সুচিরং ধৃতব্রতা।। ১০/১৬/৩৬
হে দেব যে পদরেণুলাভের আশায় সুন্দরী শ্রীদেবী বিষয়ান্তর পরিত্যাগপূর্ব্বক চিরকাল ব্রতশীলা হয়ে তপস্যা করেছিলেন। এই কালীয় কোন পূণ্যপ্রভাবে সেই চরনরেণু লাভের অধিকারী হলেন।
শ্রীঃ প্রেক্ষ্য কৃষ্ণ সৌন্দর্য্যং তত্র লুব্ধাচরত্তপঃ লঘুভাগবতামৃতে
গ) ন তথা মে প্রিয়তম আত্মযোনির্ন শঙ্করঃ।
ন চ সঙ্কর্ষণো ন শ্রীর্নৈবাত্মা চ যথা ভবান।। ১১/১৪/১৫
হে উদ্ধব তুমি আমার যেরূপ প্রিয়তম আমার পুত্র ব্রহ্মা, স্বরূপভূত শঙ্কর, ভ্রাতা সংকর্ষন, লক্ষ্মীদেবী ও বা নিজস্বরূপ ও কাদৃশ প্রিয়তম নয়।
এহেন উদ্ধব জীর থেকে ও ব্রজগোপীরা বরীয়সী। কারন তাদের ভক্তিতে যে ভাব তা দেখে উদ্ধবজী ও তাদের চরনরেনু পাওয়ার আশা করেছেন।
আসামহো চরণরেণুজুষামহং স্যাং
বৃন্দাবনে কিমপি গুল্মলতৌষধীনাম।
যা দুস্ত্যজং স্বজনমার্য্যপথঞ্চ হিত্বা
ভেজর্মুকুন্দপদবীং শ্রুতিভির্বিমৃগ্যাম।। ১০/৪৭/৬১
অনুবাদ:- উদ্ধব বললেন এই গোপীরা দুস্ত্যজ্য স্বজন বান্ধব, আর্য্যধর্ম পরিত্যাগ করে শ্রুতিগন কর্তৃক অন্বেষণীয় গোবিন্দপাদপদ্ম ভজনা করেছেন, অহো বৃন্দাবনের গুল্মলতা মধ্যে যে কোনো জন্মলাভ করে তাদের চরনরেনু লাভ করে যেন কৃতার্থ হতে পারি।
বিভিন্ন পুরানে রাধা তত্ত্ব
৭) পদ্মপুরাণ পাতাল খন্ড ৩৯ অধ্যায়
রাধয়া সহ গোবিন্দং স্বর্ন সিংহাসনে স্থিতম।
পূর্বোক্তরূপলাবণ্যং দিব্যভূষাম্বরস্রজম।। ২
মহাদেব পার্বতী কে বললেন, রাধা সহ গোবিন্দ স্বর্নসিংহাসনে অবস্থান করছেন, তার রূপমাধুরী তোমাকে বর্ননা করেছি। তিনি দিব্য ভূষা বসন মাল্য পরিধান করেছেন।
ত্রিভঙ্গমন্জুসুস্নিগ্ধং গোপীলোচনতারকম।
তদ্বাহ্যে যোগপীঠে চ স্বর্নসিংহাসনাবৃতে।। ৩
তিনি ত্রিভঙ্গমূর্ত্তি, মনোহর ও সুস্নিগ্ধ, গোপীগনের নয়নতারা সদৃশ। ঐ সিংহাসনের বাইরে স্বর্নসিংহাসনাবৃত যোগপীঠে ললিতা প্রভৃতি প্রধানা কৃষ্ণ বল্লভা বিরাজ করছেন।
প্রত্যঙ্গরভসাবেশাঃ প্রধানা কৃষ্ণ বল্লভাঃ।
ললিতাদ্যাঃ প্রকৃত্যাংশা মূলপ্রকৃতি রাধিকা।। ৪
তাদের প্রত্যেকের অঙ্গ রসভাবপূর্ন, রাধিকাই মূল প্রকৃতি, ললিতাদি ঐ মূল প্রকৃতির অংশ স্বরূপ।
সম্মুখে ললিতা দেবী শ্যামলা বায়ূকোনকে
উত্তরে শ্রীমতি ধন্যা ঐশান্যাং শ্রীহরিপ্রিয়া।। ৫
সামনে ললিতাদেবী, বায়ুকোনে শ্যামলা, উত্তরে শ্রীমতী ধন্যা, ঈশানে হরিপ্রিয়া।
বিশাখা চ তথা পূর্ব্বে শৈব্যা চাগ্নৌ ততঃ পরম।
পদ্মা চ দক্ষিনে ভদ্রা নৈর্ঋতে ক্রমশঃ স্থিতাঃ।। ৬
পূর্বে বিশাখা, অগ্নিকোনে শৈব্যা, দক্ষিন কোনে পদ্মা, নৈর্ঋত কোনে ভদ্রা, যথাক্রমে অবস্থান করছেন।
যোগপীঠে কেশরাগ্রে চারুচন্দ্রাবতী প্রিয়া।
অষ্টৌ প্রকৃতয়ঃ পূণ্যাঃ প্রধানা কৃষ্ণ বল্লভঃ।। ৭
ঐ যোগপীঠের কেশরাগ্রে শ্রীকৃষ্ণপ্রিয়া সুন্দরী চন্দ্রাবলী বিদ্যমান। এই আটজন প্রধানা কৃষ্ণ বল্লভা।
প্রধানপ্রকৃতিস্ত্বাদ্যা রাধা চন্দ্রাবলী সমা।
চন্দ্রাবলী চিত্ররেখা চন্দ্রা মদনসুন্দরী।। ৮
রাধা আদি প্রকৃতি। চন্দ্রাবলী, চিত্ররেখা, চন্দ্রা, মদনসুন্দরী, ও
প্রিয়া চ শ্রী মধুমতী চন্দ্ররেখা হরিপ্রিয়া।
ষোড়শাদ্যাঃ প্রকৃতয়ঃ প্রধানাঃ কৃষ্ণবল্লভাঃ।। ৯
মধুমতী, হরিপ্রিয়া, চন্দ্ররেখা, এই ষোলোজন আদি প্রকৃতির সদৃশী, ও শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয়া।
বৃন্দাবনেশ্বরী রাধা তথা চন্দ্রাবলী প্রিয়া।
অভিন্নগুনলাবণ্য সৌন্দর্য্যাশ্চর্য্যলোচনাঃ।। ১০
বৃন্দাবনেশ্বরী রাধা, ও শ্রীহরিপ্রিয়া চন্দ্রাবলী উভয়েই সমান লাবণ্য ও সৌন্দর্য্যযুক্তা আশ্চর্য্য লোচনযুক্তা।
মনোহরা মুগ্ধবেষাঃ কিশোরী বয়সোজ্জ্বলাঃ।
অগ্রেসরাস্তথা চান্যা গোপকন্যাঃ সহস্রশঃ।। ১১
তাদের সামনে মনোহারিনী মুগ্ধবেশধারিণী কিশোরী যৌবনসমাগমে উজ্জ্বল কান্তিশালীনি সহস্র সহস্র গোপকন্যা বিরাজ করে থাকেন।
শুদ্ধকাঞ্চনপুন্জাভাঃ সুপ্রসন্নাঃ সুলোচনাঃ।
তদ্রূপহৃদয়ারূঢ়াস্তদাশ্লেষসমুৎসুকাঃ।।১২
তারা বিশুদ্ধকাঞ্চন সদৃশ কান্তিমতী সুপ্রসন্না এবং সুলোচনা তাদের হৃদয় কৃষ্ণরূপে মগ্ন আছে, এবং ঐ রূপ আলিঙ্গনের জন্য তারা উৎসুক আছেন।
শ্যামামৃতরসে মগ্নাঃ স্ফুরত্তদ্ভাবমানসাঃ।
নেত্রোৎপলার্চ্চিতে কৃষ্ণপাদাব্জেহর্পিতচেতসঃ।। ১৩
তারা শ্যামরসে মগ্না ও তদগতচিত্তা, তারা তাদের নয়নকমল দ্বারা পূজিত শ্রীকৃষ্ণের চরনকমলে হৃদয় অর্পন করেছেন।
শ্রুতিকন্যাস্ততো দক্ষে সহস্রাযুতসংযুতাঃ।
জগন্মুগ্ধীকৃতাকারা হৃদ্বর্ত্তিকৃষ্ণলালসাঃ।। ১৪
তাদের ডানদিকে শ্রুতিকন্যাগন বিরাজ করেন। তাহারা সহস্রযুতসংখ্যক। আকৃতি দ্বারা জগত্রয়কে মুগ্ধকরেছেন, এবং তাদের হৃদয়ে কৃষ্ণ লালসা বিদ্যমান।
পাতাল খন্ডে ৩৮ অধ্যায়ে ১২০ শ্লোকে
তৎ প্রিয়া প্রকৃতিস্ত্বাদ্যারাধিকা কৃষ্ণ বল্লভা।
তৎ কলা কোটি কোট্যাংশা দুর্গাদ্যাস্ত্রিগুণাত্মিকাঃ
তস্যাঃ পাদরজঃস্পর্শাৎ কোটিবিষ্ণুঃ প্রজায়তে।।
অনুবাদ:- তাহার প্রিয়তমা রাধিকাই আদ্যাপ্রকৃতি, তিনি কৃষ্ণবল্লভা, সেই রাধিকার কোটি কোটি কলাংশ হতে ত্রিগুনময়ী দূর্গাদি দেবীগনের উৎপত্তি। এই রাধিকার পাদধূলিস্পর্শে কোটি বিষ্ণুর উৎপত্তি হয়ে থাকে।
পদ্মপুরানে রাধাকুন্ডের মাহাত্ম্য
যথা রাধা প্রিয়া বিষ্ণোস্তস্যাঃ কুন্ডং প্রিয়ং তথা।
সর্বগোপীষু সৈবৈকা বিষ্ণোরত্যন্তবল্লভা।।
শ্রীমতি রাধারানী যেমন শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়া রাধাকুন্ডও তেমন শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয় স্থান। সমস্ত গোপীদের মধ্যে রাধারানী শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয়।
ভূমি খন্ডে রাধাষ্টমী ব্রত মাহাত্ম্য, রাধারানীর জন্মলীলা রাধা দামোদর ব্রত
৮) অথর্ববেদের গোপালতাপনী শ্রুতি তে উত্তরতাপনী তে ৯ম মন্ত্রে দুর্ব্বাসা ঋষির কাছে গান্ধর্ব্বী নামে গোপীকে মুখ্য করে গোপীরা প্রশ্ন করল। কি কারনে আমাদের মতো গোপ জাতির রমনীর গর্ভে এই গোপাল জন্মগ্রহন করেছেন।
সা হোবাচ গান্ধর্ব্বী, কথং বাহস্মাসু জাতোহসৌ গোপালঃ?
রাধারানীর নাম ই গান্ধার্ব্বিকা বা গান্ধর্ব্বী। কেননা তাসাং মধ্যে শ্রেষ্ঠা গান্ধর্ব্বী হোবাচ সহৈবৈতাভিরেবং বিচার্য এই শ্রুতি তে স্পষ্ট যে গোপীদের মধ্যে একজন সর্বশ্রেষ্ঠ যার নাম গান্ধর্ব্বী।
৯) স্কন্দপুরানে
স্কন্দপুরানে বিষ্ণুখন্ডে ভাগবতমাহাত্ম্যে ১ম অধ্যায়ে শান্ডিল্যমুনি বলেছেন রাধা হল নন্দনন্দন শ্রীকৃষ্ণের আত্মা তিনি শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে নিত্যলীলা উপভোগ করেন, তাই শ্রীকৃষ্ণ কে ভক্তরা আত্মারাম বলে।
আত্মা তু রাধিকা তস্য তয়ৈব রমণাদসৌ।
আত্মারামতয়া প্রাজ্ঞৈঃ প্রোচ্যতে গূঢ়বেদিভিঃ।। ১/২২
২য় অধ্যায়ে কালীন্দি ও কৃষ্ণ মহিষী সংবাদে
কৃষ্ণের সকল সঙ্গিনীরাই শ্রীরাধিকার সম্প্রসারিত রূপ, শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরাধিকা অভিন্নরূপ।।
শ্রীকালিন্দ্যুবাচ।
আত্মারামস্য কৃষ্ণস্য ধ্রুবমাত্মাস্তি রাধিকা।
তস্য দাস্যপ্রভাবেণ তস্যাদাস্য প্রভাবেণ বিরহোহস্মান্ন সংস্পৃশেৎ।। ১১
তস্যা এবাংশবিস্তারাঃ সর্ব্বা কৃষ্ণনায়িকাঃ।
নিত্যসম্ভোগ এবাস্তি তস্যাঃ সাম্মুখ্যযোগতঃ।। ১২
অনুবাদ :- আত্মারাম কৃষ্ণের আত্মা রাধিকা, আমি তার দাসী তাই রাধাদাস্য প্রভাবেই কাতরতা আমাকে স্পর্শ করেনি। কৃষ্ণের যেসব নায়িকা তারা ও রাধিকার অংশবিস্তার বলে জানবে। রাধিকার সাথে কৃষ্ণের নিত্য সম্ভোগ রাধিকা যোগেই অন্য নায়িকারা কৃষ্ণের সাথে সম্বন্ধ যুক্ত হয়।
স্কন্দ পুরানে প্রভাসখন্ডে দ্বারকা মাহাত্ম্য বা প্রহ্লাদ সংহিতায় ১২ অধ্যায়ে উদ্ধবগমন প্রসঙ্গে রাধা ললিতা বিশাখা সহ আটজন প্রধান গোপীর নাম পাওয়া যায়।
তচ্ছ্রুত্ব বচনং তস্য ললিতা ক্রোধ মূর্চ্ছিত।
উদ্ধবং তাম্রনয়না প্রোবাচ রুদতী তদা।। ২৪
ললিতোবাচ।
অসত্যো ভিন্নমর্য্যাদঃ ক্রুরঃ ক্রুরজনপ্রিয়ঃ।
ত্বং মা ক্বথা নঃ পুরতঃ কথাং তস্যাকৃতাত্মনঃ।। ২৫
ধিগধিক পাপসমাচায়ো ধিগধিক বৈ নিষ্ঠুরাশয়ঃ।
হিত্বা যঃ স্ত্রীজনং মূঢ়ো গতো দ্বারাবতীং হরিঃ।। ২৬
উদ্ধবের এই প্রকার কথা শুনে ক্রোধ মূর্চ্ছিতা ললিতা দেবী কাঁদতে কাঁদতে আরক্তনেত্রে উদ্ধব কে বললেন তুমি অসত্য ভিন্নমর্যাদ ক্রুর ক্রুরজনপ্রিয়। আমাদের সামনে তুমি আর সেই অকৃতজ্ঞের কথা বলো না। যে মূঢ় অনুরক্ত স্ত্রীজন কে বর্জ্জন করে দ্বারাবতী তে গেছে সেই পাপাচারী নিষ্ঠুরাশয় হরিকে শত ধিক।
শ্যামলোবাচ।
কিং তস্য মন্দভাগ্যস্য অল্পপূণ্যস্য দুর্ম্মতেঃ।
মা কুরুধ্বং কথাঃ সাধ্ব্যঃ কথাং কথয়তাপরাম।। ২৭
শ্যামলা বললেন সাধ্বীগন সেই মন্দভাগ্য অল্পপূণ্য দুর্ম্মতি হরির কথা আর বলোনা, বরং অন্য কথা বলো।
ধন্যোবাচ।
কেনায়ং হি সমানীতো দূতো দুষ্টজনস্যচ।
যাতু তেন পথা পাপঃ পুনর্নায়াতি যেন চ।। ২৮
ধন্যা বললেন এই দুষ্টজনের দুষ্ট দূতকে কে এখানে আনল? যে পথে গিয়ে আর ফিরে আসতে না পারে এই পাপিষ্ঠ সেই পথে চলে যাক।
বিশাখোবাচ।
ন শীলং ন কুলং যস্য নাস্তি পাপকৃতং ভয়ম।
তস্য স্ত্রীহননে সাধ্ব্যো জ্ঞায়তে জন্ম কর্ম্ম চ।।
হীনস্য পুরুষার্থেন তেন সঙ্গো নিরর্থকঃ। ২৯
বিশাখা বললেন যার কুল নেই শীল নেই পাপ কার্য্যে ভয় নেই হে সাধ্বীগন তার জন্ম কর্ম্ম কিরূপ তা স্ত্রীবধ কার্য্যেই বোঝা গেছে।
শ্রীরাধোবাচ
ভূতানাং ঘাতনে যস্য নাস্তি পাপকৃতং ভয়ম।
তস্য স্ত্রীহননে সাধ্যঃ শঙ্কা কাপি ন বিদ্যতে।। ৩০
শ্রীরাধা বললেন প্রানীহত্যায় যার পাপ ভয় নেই অবলাজন হননে তার আবার শঙ্কা কিসের?
শৈব্যোবাচ।
সত্যং ব্রুহি মহাভাগ কিং করোতি যদূত্তমঃ।
সঙ্গতো নাগরোস্ত্রীভিরস্মাকং কিং কথাং স্মরেৎ।। ৩১
শৈব্যা বললেন ওহে মহাভাগ সত্যি করে বলো সেই যদুবর কি করছেন? তিনি নাগরীগনের সাথে সঙ্গত হয়ে আমাদের কথা কি স্মরণ করেন?
পদ্মোবাচ।
কদোদ্ধব মহাভাগ নাগরীজনবল্লভঃ।
সমেষ্যতীহ দাশার্হঃ পদ্মপত্রায়তেক্ষণঃ।। ৩২
পদ্মা বললেন বলো উদ্ধব কবে সেই নাগরীজনবল্লভ অম্বুজাক্ষ এখানে আগমন করবেন?
ভদ্রোবাচ।
হা কৃষ্ণ হা গোপবর হা গোপীজনবল্লভ।
সমুদ্ধর মহাবাহো গোপীঃ সংসারসাগরাৎ।। ৩৩
ভদ্রা বললেন হা কৃষ্ণ! হা গোপীজনবল্লভ! সংসার সাগর হইতে আমাদের ত্রাণ করো।
১০) আদিবরাহ পুরাণে ১৬৪ অধ্যায়ে ২৯ থেকে ৩৪ শ্লোকে
গঙ্গায়াশ্চোত্তরং গত্বা দেবদেবস্য চক্রিণঃ
অরিষ্টেন সমং তত্র মহদ যুদ্ধং প্রবর্ত্তিতম।।
ঘাতয়িত্বা তত স্তস্মিন্নরিষ্টং বৃষরূপিণং।
কোপেন পার্ষ্ণিঘাতেন মহাতীর্থং প্রকল্পিতং।।
স্নাত স্তত্র তদা হৃষ্টো বৃষং হত্বা সগোপকঃ।।
বিপাপমা রাধিকাং প্রাহ কথং ভদ্রে ভবিষ্যতি।।
তত্র রাধা সমাশ্লিষ্য কৃষ্ণমক্লিষ্টকারণম।
স্বনাম্না বিদিতং কুন্ডং কৃতং তীর্থমদূরতঃ।।
রাধাকুন্ডমিতি খ্যাতং সর্ব্বপাপহরং শুভং।
অরিষ্টহন রাধাকুন্ড স্নানাৎ ফলমবাপ্যতে।।
অনুবাদ:- চক্রধারী দেবদেব কৃষ্ণ মানসীগঙ্গা থেকে উত্তরদিকে গমন করলেন। সেখানে অরিষ্টাসুরের সাথে তার ঘোরতর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে বৃষ রূপী অরিষ্টাসুর কে বধ করে তার পায়ের গোড়ালির আঘাতে এক মহাতীর্থের সৃষ্টি করলেন। ঐ বৃষ হত্যার পাপ মুক্ত হওয়ার জন্য গোপগনের সাথে আনন্দিত মনে সেখানে স্নান করলেন। তারপর রাধিকা কে জিজ্ঞাসা করলেন হে ভদ্রে এখন কি করতে হবে? তখন রাধা অক্লিষ্টকর্মা কৃষ্ণ কে আলিঙ্গন করে অদূরে নিজের নামে একটি কুন্ড রচনা করলেন। তার নাম রাধাকুন্ড। এই কুন্ড সর্ব্বপাপনাশন ও সর্ব্বশুভদায়ক।
বরাহপুরান, হৃষীকেশ শাস্ত্রী সম্পাদিত, বেনারস চৌখাম্বা সংস্করন পৃ: ৪৫৩
Next page>>>