Harinamamrita vyakaran|jiva goswami books
কৃষ্ণমুপাসিতুমস্য স্রজমিব নামাবলিং তনবৈ।ত্বরিতং বিতরেদেষা তৎসাহিত্যাদিজামোদম্।।১
শ্রীকৃষ্ণের উপাসনার জন্য তার মধুর নামাবলি দ্বারা এক মাল্য রচনা করতে অভিলাষী হয়েছি। যা তার ভক্তজনকে কৃষ্ণ বিষয়ক গ্রন্থাদি আস্বাদনে জাত আনন্দ প্রদান করবে।
আহতজল্পিতজটিতং দৃষ্ট্বা শব্দানুশাসনস্তোমম্।
হরিনামাবলিবলিতং ব্যাকরণং বৈষ্ণবার্থমাচিন্মঃ।। ২
নানা ব্যাকরণশাস্ত্রের শব্দানুশাসন পর্যবেক্ষণ করে, তা নানান জল্পনা কল্পনাময় শব্দে ভর্তি হওয়ায় বৈষ্ণব দের জন্য এই ব্যাকরণ শাস্ত্র রচনা করছি যা ভগবান শ্রীহরির দিব্য নাম পরিপূর্ণ।
ব্যাকরণে মরূনীবৃতি জীবনলুব্ধাঃ সদাঘসংবিগ্নাঃ।
হরিনামামৃতমেতৎ পিবন্তু শতধাবগাহনন্তাম্।। ৩
যেসকল ব্যাক্তি ব্যাকরণ নামক মরুভূমিতে জলের খোঁজ করছেন, ও সর্বদা নানা বিঘ্ন ও কঠিনতার সম্মুখীন হচ্ছেন, তারা ভগবান শ্রীহরির দিব্যনাম রূপ অমৃত পান করুন ও অমৃতসাগরে বারংবার ডুব দিক।
সাঙ্কেত্যং পারিহাস্যং বা স্তোমং হেলনমেব বা।
বৈকুণ্ঠনামগ্রহণমশেষাঘহরং বিদুঃ।। ৪
যিনি ভগবানের দিব্য নাম সমূহ জপ করেন, পরিহাস করে, সঙ্কেতে, বা এমনকি হেলায় উচ্চারণ করেন, তিনি শীঘ্রই অনাদিকাল সঞ্চিত পাপ থেকে মুক্ত হন। ইহাই পন্ডিত গন বলে থাকেন। ভাঃ ৬/২/১৪
১) নারায়ণাদ্ভূতোহয়ং বর্ণক্রমঃ।
বর্নমালা নারায়ণ হতে উৎপন্ন।
২) তত্রাদৌ চতুর্দশ সর্বেশ্বরাঃ।
প্রথম ১৪ টি বর্ন সর্বেশ্বর।(স্বরবর্ন) যথা অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ঋ,ঋৃ, ল, লৃ, এ, ঐ, ও, ঔ।
৩) দশ দশাবতারাঃ।
প্রথম দশটি বর্ন দশাবতার। যথা অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ঋ,ঋৃ, ল, লৃ,
৪) তেষাং দ্বৌ দ্বাবকাত্মকৌ।
দশাবতারদের মধ্যে পরপর দুটি বর্ণ কে একাত্মক বলা হয়। যেমন অ, আ। ই, ঈ।
৫) পূর্বো বামনঃ।
একাত্মকের প্রথম টি বামন(হ্রস্বস্বর)। যেমন অ, ই, উ
৬) পরস্ত্রিবিক্রমঃ।
পরবর্তী বর্ণ টি ত্রিবিক্রম। যথা আ, ঈ, ঊ,
৭) অ, আ বর্জিতাঃ সর্বেশ্বরা ঈশ্বরাঃ।
অ, আ বাদে বাকি সর্বেশ্বর গুলি ঈশ্বর।
৮) দশাবতারা ঈশাঃ।
অ, আ বাদে দশাবতার কে ঈশ বলা হয়।
৯) অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ অনন্তাঃ।
অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ এদের অনন্ত বলা হয়।
১০) ই, ঈ, উ, ঊ চতুঃসনাঃ।
এই চারটি কে চতুঃসন বলাহয়।
১১) উ, ঊ, ঋ,ঋৃ চতুর্ভূজাঃ।
এই চারটি কে চতুর্ভূজ বলা হয়।
১২) এ, ঐ, ও, ঔ চতুর্ব্যুহাঃ।
এই চারটি কে চতুর্ব্যুহ বলা হয়।
১৩) অং ইতি বিষ্ণুচক্রম্।
অনুস্বার কে বিষ্ণুচক্র বলা হয়। अं
১৪)অঁ ইতি বিষ্ণুচাপঃ।
চন্দ্রবিন্দুকে বিষ্ণুচাপ বলা হয়।
১৫) অঃ ইতি বিষ্ণুসর্গঃ।
বিঃসর্গ কে বিষ্ণুসর্গ বা বিষ্ণুলোক বলে।
১৬) কাদয়ো বিষ্ণুজনাঃ।
ক থেকে শুরু করে সকল ব্যাঞ্জন বর্ন কে বিষ্ণুজন বলা হয়।
১৭) তে মান্তাঃ পঞ্চ পঞ্চ বিষ্ণুবর্গাঃ।
ক থেকে ম পর্যন্ত পাঁচটি করে বর্ন সমষ্টি কে বিষ্ণুবর্গ বলে
ক বর্গ, চবর্গ, ট বর্গ, তবর্গ, প বর্গ।
১৮) কচটতপা হরিকমলানি।
ক, চ, ট, ত, প এদের হরিকমল বর্গ বলা হয়।
১৯) খছথঠফা হরিখড়গাঃ।
খ, ছ, থ, ঠ, ফ এদের হরিখড়্গ বর্গ বলা হয়।
২০) গজডদবা হরিগদাঃ।
গ, জ, ড, দ, ব এদের হরিগদা বর্গ বলা হয়।
২১) ঘঝঢধভা হরিঘোষাঃ।
ঘ, ঝ, ঢ, ধ, ভ এদের হরিঘোষ বর্গ বলা হয়।
ঘোষ শব্দের অর্থ এখানে শঙ্খ।
২২)ঙঞণনমা হরিবেণবঃ।
ঙ, ঞ, ণ, ন, ম এদের হরিবেণু বর্গ বলা হয়।
২৩) ত এতদ্বর্জিতা বিষ্ণুদাসাঃ।
হরিবেণু বাদে অন্য সকল বিষ্ণু বর্গ কে বিষ্ণুদাস বলা হয়। যথা—
ক খ গ ঘ
চ ছ জ ঝ
ট ঠ ড ঢ
ত থ দ ধ
প ফ ব ভ
২৪) যরলবা হরিমিত্রাণি।
য, র, ল, ব এদের হরিমিত্র বলা হয়।
২৫) শসষহা হরিগোত্রাণি।
শ, ষ, স, হ এদের হরিগোত্র বলা হয়।
২৬) শষসাঃ শৌরয়ঃ।
শ, ষ, স এদের শৌরী বলা হয়।
২৭) বিষ্ণুদাসহরিগোত্রাণি বৈষ্ণবা
বিষ্ণুদাস ও হরিগোত্র দের একত্রে বৈষ্ণব বলা হয়।
ক খ গ ঘ
চ ছ জ ঝ
ট ঠ ড ঢ
ত থ দ ধ
প ফ ব ভ
শ ষ স হ
২৮) হরিগদাহরিঘোষহরিবেণুহরিমিত্রাণি হশ্চ গোপালাঃ।
হরিগদা, হরিঘোষ, হরিবেণু, হরিমিত্র ও হ এদের গোপাল বলা হয়।
গ ঘ ঙ
জ ঝ ঞ
ড ঢ ণ
দ ধ ন
ব ভ ম
য, র, ল, ব,
হ
২৯) যাদবা অন্যে।
গোপাল বাদে বাকি বিষ্ণুজন গুলিকে যাদব বলা হয়।
ক খ
চ ছ
ট ঠ
ত থ
প ফ
শ, ষ, স
৩০) শৌরিবর্জিতাস্তু সাত্বতাঃ
শৌরী বাদে সকল যাদব সাত্বত।
ক খ
চ ছ
ট ঠ
ত থ
প ফ
৩১) বামনো লঘুঃ।
লঘু স্বর কে বামন বলা হয়।
৩২) ত্রিবিক্রমো গুরুঃ।
গুরু স্বর কে ত্রিবিক্রম বলা হয়।
৩৩) সৎসঙ্গাৎ পূর্বো বামনোহপি গুরূঃ।
একটি বামন বা লঘুস্বর যদি সৎসঙ্গের পূর্বে বসে সেটি গুরূস্বর হয়।
যুক্তবর্ণের (সৎসঙ্গ) পূর্বে বামন বা লঘুস্বর থাকলে তা গুরুস্বরের মতো উচ্চারিত হয়।
নিত্য ভক্ত তত্ত্ব বদ্ধ সজ্জন
৩৪) মিথঃসংলগ্নো বিষ্ণুজনঃ সৎসঙ্গসঞ্জঃ।
দুই বা ততোধিক বিষ্ণুজন একসাথে থাকলে তাকে সৎসঙ্গ বলে।
যুক্তবর্ণ কে সৎসঙ্গ বলে। ত+ য= ত্য, ক+ত= ক্ত,
যেমন দুই বা ততোধিক বিষ্ণুজন বা ভক্ত গন একত্র হলে সৎসঙ্গ হয়।
৩৫) বর্নস্বরূপে রামঃ।
একটি বর্ন কে বোঝাতে রাম ব্যাবহার করা হয়
আ-কার কে আ-রাম, ই-কার কে ই-রাম বলা হয়।
যেহেতু শ্রীরাম চন্দ্র এক পত্নী গ্রহন করেছেন বলে প্রসিদ্ধ।
৩৬) তদাদিদ্বয়ে দ্বয়ম্।
দ্বয় দ্বারা প্রথম বর্নের বর্ন যুগল কে বোঝায়।
অ দ্বয় মানে অ, আ। ই দ্বয় মানে ই, ঈ।
লক্ষ্মী নারায়ণ যুগলকে পদ্মপুরাণে দ্বয় বলা হয়েছে।
৩৭) আদেশো বিরিঞ্চিঃ।
একের পরিবর্তে অন্য হলে তাকে বিরিঞ্চি বলে।
ব্রহ্মা এক বস্তু দ্বারা অন্য বস্তু সৃষ্টি করেন বলে প্রসিদ্ধ।
৩৮) আগমো বিষ্ণুঃ।
নতুন কিছুর আগমন কে বিষ্ণু বলে।
প্রকৃতি ও প্রত্যয়ের মাঝে নতুন কোনো নিয়মের দ্বারা তাদের ধারণ করা হলে বিষ্ণু বলে।
সৃষ্টি ও প্রলয়ের মাঝে পোষক রূপে শ্রীবিষ্ণু আবির্ভূত হন বলে প্রসিদ্ধ।
৩৯) লোপো হরঃ।
যে নিয়মের দ্বারা বর্ন লোপ হয়, তাকে হর বলে।
সংহার বা নাশের জন্য মহাদেব প্রসিদ্ধ।
৪০) সূত্রাণি ষড়বিধানি।
সূত্র ছয় প্রকার।
সংজ্ঞা:- সংজ্ঞা সূত্র দ্বারা নামকরণ হয়।
পরিভাষা:- অনিয়মে নিয়ম করে
বিধি:- যা পালন করতে হবে।
নিয়ম:- অন্যত্র এই সূত্র হলেও এক্ষেত্রে তা হবেনা।
অতিদেশ:- অন্যের সাথে তুলনা বজায় রাখে।
অধিকার:- পরবর্তী প্রকরণ কে ব্যাপ্ত করে থাকে যে সূত্র।
Next page >>>